Friday 31 January 2020

অভিজিৎ দাসকর্মকার

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস












___এটা ইচ্ছে      অভিজিৎ দাসকর্মকার

মাঝে মাঝেই ঢুকে পড়ছিল এদিক ওদিক চাউনি, আর
কথাবার্তারা খাটের ঠিক ধারটিতেই___ 
বিভাজিত হচ্ছিল ব্যাসবাক্য সহ দুজনের রসায়ন---

চোখের সম্মোহনে এগিয়ে চলে নিরহংকার হলুদ সন্ধ্যা_

আমাকে এগিয়ে দে আরও একটু___
নিজেকে বহুব্রীহি সমাসে ভাঙবো, আর-
গোলার্ধ থেকে সমবেত কণ্ঠে চীর ফাগুনের 
অ-গুরু গন্ধ বেরিয়ে আসুক____

আমি আর তুই অভিসন্ধিহীন মুহূর্ত সংগ্রহ করবো নিস্তরঙ্গ হাওয়ার আদুরে কোলে বসিয়ে---
জীবনযাপনে ফিরবে চিল্কার জলছায়া-
অপেক্ষা করিস পূর্ণিমার পাশে দাঁড়িয়ে__

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস














হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

পাখি রঙের আকাশ ------- ৩০

পূর্ণিমার দিনগুলোতে মা সারা রাত জেগে থাকতো। আমাকেও জাগিয়ে রাখতো। মা বলতো, বোকারাই রাতে ঘুমায়। কোনো কোনো রাতে আমরা জ্যোৎস্নায় মাঠে যেতাম। মা জমির আলে পা ছড়িয়ে বসত। আমি মাঠে শুয়ে মায়ের কোলে মাথা রাখতাম। কোনো কথা নেই। আমি জ্যোৎস্না দেখতাম আর মা দেখত আকাশ। কোথায় ডুবে যেতাম জানি না। সম্বিত ফিরলে বুঝতে পারতাম আমার গাল ভেজা। দেখতাম মা কাঁদছে। এইসময় একটা গলা ভেসে আসত ------ "আজ আকাশ-মাঠে জ্যোৎস্না বেড়াতে এসেছে। কাল থেকে আর কেউ ফিরেও চাইবে না।" এই একদিনই মায়ের গলা চিনতে পারতাম না।

পাখি রঙের আকাশ ------ ৩১

ঠিক করলাম তোমাকেও বলব শেষবার । বিশেষ কিছু কি হবে ? কোনোদিন তো ভাবি নি এসব। তাই আজও ভাবব না। বলিই না। কথা তো আমার নয়। তাহলে কেন সে পড়ে থাকবে ঘুপচি গলির শেষে এক চিলতে বারান্দায়। সে তো ছাড়াই থাকে । আমি শুধু কয়েকদিনের জন্য নিয়েছিলাম বুকে ধরে রাখব বলে। আমি দেখব কথা তোমার কাছে কোন পথে হেঁটে বেড়ায়। কিন্তু আমি তেমন তো অভিজ্ঞও নই। আমার দেখা যে ঠিক তাই বা আমাকে বলি কি করে। আমি তো সেইভাবে কোথাও কিছু জিতিও নি। তাই আমার দেখার চোখটা আমাকে ঠিক কতখানি দেখিয়েছে সে সম্পর্কেও আমি বিশেষ কিছু বলতে পারব না। কিন্তু কেনই বা এসব ভাবনা ! আমার কথা আগে তোমাকে বলি। দেখব আমার কথাই তোমাকে জড়িয়ে থেকেছে। কত জল তো আমাদের ছুঁয়ে যায়, কিন্তু তারা কবে কোথায় আমাদের নির্মাণ করেছে?




তিসা মন্ডল

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস













মৃত নালিশ !!         তিসা মন্ডল 


মৃত সরগম-এর নালিশে
এক সমুদ্র সূর্যের সংকেত যখন বিদিশায় স্লিপ কাটে
অভিনয়ের স্বভাবে,
কালচে দোপটী ফুল ব্যথায়।
আকাশের ছাঁদ ক্ষয়ে পড়ে
কৃত্রিম কোজাগরী চাঁদ , গোড়ালির কাছে থেকে মাটি ছিনিয়ে নেয়
অছ্যুৎ শ্রাবন প্রত্যেক নিসৃত বাড়ির বারি ছুঁয়ে যায়।
যে সম্পর্কের নামেই শুধু গড়ে ওঠা,  তার স্মৃতি টুকুন ও তাজা নয়।
স্মৃতি নেশায় ছোঁয়ায় পদার্থ
তখন মৃত চরিত্র।
আঁচের তাপ,  অনুভব  ঠাঁই পায় না।

মৌসুমী রায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস












ইচ্ছারা আজ    মৌসুমী রায় 

ফিরে যাওয়ার আগে কি ভেবে
কাঁধের কাছে চুম্বন এঁকে গেলে...
আমিও ভেসে গেলাম অশ্রুজলে।
শরীরে বন্দী রয়ে গেলো কিছু ইচ্ছেরা
আজ আবার নিম্নচাপের দিন
সবই সবুজ রঙিন কিন্তু উষ্ণতাহীন।
ভিজে কামিনীর গন্ধেও শরীর নিষ্পাপ 
বৃষ্টি ছুঁয়ে যাচ্ছে গ্রীবা কোমর জঙ্ঘা...
শূন্যতায় পূর্ণ জীবন তবু মুখে অহং এর ছাপ।
আমার ভগ্ন হৃদয় কোথাও শান্তি খুঁজে পায়না
আমার ঘরে বর্ষা থাকুক 
রুক্ষতা আমায় বেশি মানায়না।

চিরঞ্জিৎ বৈরাগী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস












সঠিক উদঘাটন চাই    চিরঞ্জিৎ বৈরাগী

সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা ওল্টানো মূর্তিরা,
হাপরের জ্বলন্ত চিতায় জাত চেনায়।
পর্দায় মুখোশের ছবি ফোটে কুয়াশার অন্তরালে।
বসন্তের রঙে একে একে স্মৃতির পাতায় লাভাগঠিত মালভূমি....
তিন কালের কঠিন-কোমল সুখ-দুঃখের ভাটিয়ালি গান শোনায়।
মায়ামৃগ হয়ে মহাভারতে বাস্তবতা ছুঁতে চায়।

কালপুরুষের গোপন গুহায় ব্রান্ডেড সম্ভার,
সমাজ-দেশ শাসনের নামে পুঁথি-পুত্র ছিঁড়ে ফেলে।
কত শত কঙ্কালে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা...
সত্যের নামে আজও প্রহসন!
নেতাজী নয়...
তাঁর আত্মারায় চাই সঠিক উদঘাটন! 

মধুমিতা বসু সরকার

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস












হৃদি ভেসে যায়...     মধুমিতা বসু সরকার

তোর দুটি চোখ অনেক কথা বলে ফেলে,
তোর হাসিতে প্রজাপতি
পাখনা  মেলে,
তোর চোখের চাওয়ায় অনেক পাওয়া মিলে মিশে,
আসছি বলে আসেনা কেউ কাছে পিঠে,
তবু দিনের শেষে একটি বারও ছোঁয়ার আশায়,
নিরুদ্বেগে বসে থাকি শীতল হাওয়ায়,,
তুই এলিনা, আসবি কবে বলবি আমায়,,??
তোর আসার আশায় দিবস যে মোর বিবশ প্রায়।।
কথার পাহাড় জমিয়ে আমি জীবন কে তাই বাসছি ভাল,,,
তোর চোখের কাজল ধেবড়ে গেলে সন্ধ্যা নামে,
দিন কেটে যায় অবহেলার নিশিযামে।
দুজন মিলে জল ছু্ঁই ছুঁই খেলার সামিল,
তোর মনের সাথে আছে কি মোর মনের ও মিল?
থাকত যদি আমার ডাকে সাড়া দিতিস,
বুকের পাশের বাঁদিক টা ছুঁতে দিতিস,
তোর হৃদয়ের বাঁদিকে আজ রক্ত ক্ষরণ,
আমি বেবাক একলা খুঁজি কোথায় আমার
জীবন মরন।।

শাবলু শাহাবউদ্দিন

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস












ফেসবুকে   শাবলু শাহাবউদ্দিন 

যায় চলে দিন আমার যায় চলে মাস 
ফেসবুকে কাটিয়েছি আমি বার মাস
লাভ নাই লস নাই, নাই কোন ক্ষতি 
এভাবেই হারিয়েছি সময়ের গতি 
লাইক কমেন্ট আর চ্যাটিংয়ের তালে
সব কিছু হারিয়েছি শেষ বিকেলে ।

কেহ্ গড়ে ফেসবুকে নতুন জীবন 
আয় আর রোজগারে ফিরে পায় মন 
কেহ্ করে জীবন টা তামাতামা 
কেহ্ হয় ফেসবুক হাজার মামা ।

সমাজ আর সামাজিক হয় যোগাযোগ 
কেহ্ বলে ফেসবুকে আছে কত রোগ 
স্বামী আর স্ত্রীর হয় না মিলন
ফেসবুকে আছে তাদের কত আপন জন ।

ছেলে মেয়ের পড়াশোনা হয় না তেমন 
ফেসবুকের কারণে বৃথা হবে ছাত্রজীবন 
সাবধানে চল মন বিপদ আসে যে কখন ।



রুনা দত্ত

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস












দিবারাত্রির কাব্য      রুনা দত্ত

সা থেকে আবার সা এভাবে... 
না পৌঁছানো হয় না 

উষ্ণায়নের স্রোতে ভেসে যেতে যেতে   
মোমের মতো কখন যে দ্রবীভূত হয়ে যায় 
আবেগী মনন। 

নির্জন রাত্রির বুকে নকশিকাঁথা জুড়ে
ফুটে উঠে নারী পুরুষ 
প্রেম ভালোবাসা । 

ঠিক যেন জীবনের দিবারাত্রির 
কাব্য বা কবিতা ...

অর্পিতা ঘোষ

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস












নক্ষত্রযোজন দূরে    অর্পিতা ঘোষ
           
নাভিমূল থেকে শিরশিরানি ভয়ের স্রোতটা
ক্রমশ বুকের কাছে এসে ধাক্কা দেয়...
টলোমলো করে তাতে ধমনীগুলো
হৃৎস্পন্দন বুঝিবা স্থবির হতে চায়।

আকাশভরা স্বপ্নগুলো খায় খাবি
চলে যায় তারা ক্রমশ দূর থেকে দূরে...
হিম হিম সমুদ্রে যাচ্ছে  তলিয়ে
অনন্ত পথের ডাকে,কাঁদছে করুন সুরে !
চুরমার হয়ে যায় মেঘেদের ঘর...
ক্ষতচিহ্ন নিয়ে শরীরে পরজীবি বাস করে,
ঝন্ত্রনা উপশমের জন্য চায় একটু ওষুধ...
সেতো পরবাসী হয়ে করে বাস নক্ষত্রযোজন দূরে ।

শোভন মণ্ডল

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ৩১-তম প্রয়াস

সংগম   শোভন মণ্ডল
এখনো সব গল্প সে রকম নয়
চোখের সামনে ভেসে ওঠে বরফের পাহাড়
গোপন চোখের নিচে হিমশৈল লুকোচুরি খেলে
প্যালেটে ডোবানো তুলি শরীর ছোঁয়
বোতাম খুলে যায় আদরে

যে মেয়েরা রঙ মেখে দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায় কিংবা গলির দু'ধারে
তারাও স্বপ্ন দেখে
একদিন তাদের  ' প্রকৃত সংগম’  হবে

Wednesday 29 January 2020

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৯-তম প্রয়াস













পাখি রঙের আকাশ ------ ২৯    হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

পাখিই তো একটা গোটা আকাশ। আমি পাখি দেখে আকাশ দেখি। পাখি দেখতে দেখতে একটা গোটা আকাশ চোখের সামনে ছড়িয়ে পড়ে। পথে পা দিলেই তো দেশ। পথে পা দিলেই তো আকাশ। এগিয়ে চলে পথ। রঙ বদলে বদলে যায়। আমারই রঙ আমার মতো করে কেউ যেন রঙিন হয়ে যায়। চিনতে পারি ------ আমিই তো পাখি। সারাটা দিন আকাশ দেখি। আকাশ আমায় উড়িয়ে নিয়ে যায়। চোখ খুললেই পাখি। কোনো প্রস্তুতি নেই, হঠাৎ করেই কাঁধে ঝোলা নিয়ে বেরিয়ে পড়ি নিরুদ্দেশের দেশে।




মায়িশা তাসনিম ইসলাম

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৯-তম প্রয়াস












দ্যা অ্যাগনস্টিক ১০-- পেন্টাগ্রাম     মায়িশা তাসনিম ইসলাম

যত্ন এসেছিলো আরো দু সপ্তাহ আগে। পুরান ঘরে রসদ নাই। ফিরে যাওয়া পা ও হাটুতে মোচড়ানো সুন্দর দোযখ। কালামে বিশ্বাসী যত্ন, ব্ল্যাক ম্যাজিকের মানচিত্রে দেখে আমার আপন (!) মাকে। কলিকাল এক বছর বেশি হতে পারে তাই যত্নের কানে মন্ত্র, মায়ের ভাঙাচোড়া শরীরে কাছে বসুক, ক্লাস টু এ পড়া ভাইটার ড্রইং খাতাটায় একটা ফুলের মত পেন্টাগ্রাম! ছেয়ে যাক অসৎ আঙুলের বিশ্বস্ততায়

আমার এক চিমটি দেওয়া মনের ভাবে বসে ক্লাসিজিম। পিতার ঘুম পাপড়িতে নড়চড়, সামষ্টিক অর্থনীতি কিংবা কবিতার মাইনে।

পুনশ্চ: চন্দ্রতাড়িত নৈঃসঙ্গ

সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৯-তম প্রয়াস












মহাকাল দণ্ড     সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী

হাইকু ২৬ : 

পূর্বাশা ঋণ
নির্মল প্রতি ক্ষমা
তৃণ বিনোদ ।

হাইকু ২৭ : 

যাপন ধার্য
ক্ষয় স্পর্শে স্তিমিত
তৃষা বিলাসী ।

সন্দীপ ভট্টাচার্য

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৯-তম প্রয়াস












বন্দী     সন্দীপ ভট্টাচার্য

এভাবে বারবার কড়া নেড়োনা বুকের মাঝে
অবুঝ পাখি দিশাহীন
যদি চিনতে না পারে ওই ধাতব আওয়াজ
তখন নাভির উর্বর স্ফটিক ই সম্বল
জিভের কোরকে কোরকে মিশে গেলে ও মুক্ত জল
দোষ কিন্তু তাহলে শুধু বন্দীর না
আগেই বলেছি তার আকাশে এত নীল নেই
তাই ভাবতেই পারে তোমাকে মুক্ত সমুদ্দুর
এই দেখ ! তোমার চোখের পলক এত ভারী কেন?
এপারে যে হাজার বছরের সবুজ ক্ষিদে
যদি চোখের গোপন পথে খুঁজে পাই নীল আশ্চর্য?
তখন আবার দোআঁশের লজ্জাবতী হয়োনা|

অনামিকা নন্দী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৯-তম প্রয়াস












আমার পরাজয়     অনামিকা নন্দী

যে ভালোবাসা তুমি আমাকে দিয়েছো
​তা নদীর জলের মতন স্বচ্ছ আর পবিত্র
​তোমার প্রতিটা স্পর্শ নিষ্পাপ  
​যখন দুহাতে কাছে টেনে নাও অচেনা বাতাস
​ছুঁয়ে যায় শরীরের ভাঁজ 
​তোমার দীঘল বুকে মাথা রেখে খুঁজে পাই
​শান্তির আশ্রয় 
​মুঠোভরে রাখা আবেগ আলগোছে ঝরে
​জন্ম নেয় যৌবনা নদী
​ঠোঁটের উষ্ণতায় পাপ মুছে যায়
​ বোধের পাপড়ি খসে ভালোবাসার আঙিনায়
​প্রশ্নরা শাসন ভাঙে ছুটি নেয় ভয়
​তোমার চোখের মায়াবী চাহনি ,আমার পরাজয় 

মুস্তাফিজ রহমান

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৯-তম প্রয়াস












অলীক প্রসূতি সদনে   মুস্তাফিজ রহমান 

এই অন্ধকার আকাশে নীহারিকার দিকে 
তাকিয়ে  আছি 
দেখলাম পেটটি তার আসন্নপ্রসবার মতো ফুলে আছে। 
চরম সুখের মুহূর্তে তোমার চোখের তারায়    যেমন 
কাঁপন লাগে 
তেমনই ভাবে কাঁপছে অসংখ্য মৃতপ্রায় নক্ষত্রের গালে 
লাল আবেগের গুলাল। 

নিরন্ন কৃষ্ণগহ্বর তার 
কুমীরের ক্ষুধা নিয়ে প্রাণে  
লেজ আছড়ে যাক,অভুক্তই পড়ে থাক 
তার মৃত্যু আসন্ন। 
তবু সন্ধ্যার ঠোঁটে আনন্দ উধাও 
যাও পাখি খোঁজ নাও 
কেন মন তার এখনও বিষণ্ণ? 
আকাশে সুচেতনার নিমন্ত্রণ 
নেই কি তার মনে? 
হুল্লোড় উঠেছে  আজ অলীক প্রসূতি সদনে 
নবজাতকের আগমনে।         

Tuesday 28 January 2020

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৮-তম প্রয়াস















পাখি রঙের আকাশ ----- ২৮    হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

খুব ভোরবেলা মায়ের বুক থেকে বেরিয়ে একেবারে আমতলায়। ভুলেই যেতাম আমতলায় কেন এসেছি। গাছে হেলান দিয়ে ভোর দেখতাম। এখানে ওখানে দু'একটা পাখি জেগে উঠত, মনে হতো ওরা যেন খেলতে নামার আগে জানিয়ে আসছে। যে ছেলেটাকে কেউ গুরুত্ব দেয় না, ভোর তাকে অনেকটা জায়গা ছেড়ে দিয়েছ। মনে হতো চেনা জগৎ ছেড়ে অনেক দূরে চলে এসেছি। কোনো এক নদীর ধারে। মুখোমুখি ভোর ----- আমার মাথায় হাত দিয়ে আছে। সাদা পাতায় সারি সারি না বলা কথা। তারা আজ দুপুরের বৌ কথা কও, ভোরের চড়ুই হয়ে উড়ে বেড়ায়।


নাসির ওয়াদেন

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৮-তম প্রয়াস











নাবিক        নাসির ওয়াদেন    

জলস্রোত জোছনা লেগে থাকা হাসি
দিগন্তের ভাঁজে ভাঁজে করুণার চাঁদ
বাতাস সান্নিধ্য চায় সহ্যের ক্ষেতে
একাকী আকাশ জুড়ে শুধু স্বাদ,বিস্বাদ

চলে যাই অনন্তের ভাঙাগড়া স্রোতে
যেখানে ইচ্ছেবৃষ্টি ধূসর হয়ে নামে
আমার কলজে বনে ফোটা আগুনফুল
ফুলে ফুলে ঢেউ জাগে নাবিকের ঘামে

ভোরের কাগজে জেগে থাকে স্মৃতি, উচ্ছ্বাস
জাহাজের হাল ছাড়া নিয়তির  মুক্ত বাতাস

সুলেখা সরকার

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৮-তম প্রয়াস












হাইকু    সুলেখা সরকার

১) 
চলে যেও না
দুহাতে ভরে নাও 
জাতীয় শোক। 


২) 
সন্ন্যাসী তুমি 
ছাল খোলো এবার
সন্ধ্যা এসেছে। 

সোনালী মন্ডল আইচ

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৮-তম প্রয়াস












তার কথা   সোনালী মন্ডল আইচ

চাঁদকে মামা বলে
গ্রহের দোষকে বলে ভড়ং
আমার ব্যক্তিগত সরাইখানায়
স্কেচ পেনের কালিতে ঝুলছে
তার সাজানো ভালোবাসার অক্ষর 

যখন সে লাঙল চালায়
পেছনে নীল-কালো রঙের পাখিরা
লাফাতে লাফাতে পোকা খায়
তার জোয়ান লম্বা পায়ে-পায়ে পাল্লা দিয়ে

কোমরের থলে থেকে বিরাট মুঠোয়
উদার দরাজ ভঙ্গিতে বীজ ছড়ায়
অর্ধচক্রাকারে তারপর নরম চোখে
কেবল চেয়ে থাকে পিতার মতো...

কৌশিক দে

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৮-তম প্রয়াস
.










প্রেম দহনের  বিলাসিনী কৌশিক দে
কতটা ভোর আমার হারিয়েছে 
তোমার সকালের মাঝে , জবাব দাও -
শেষ মেলায় কিনে আনা কাগজের পতাকা
কতটা উড়িয়েছ তোমার ফাঁকা ঘরে -
কতটা জনসমুদ্রে থেকে আমায় শিখিয়েছো একা থাকার কৌশল - জবাব দাও।
এই বুকের চলাচল হেম হঠাৎ স্তব্ধ হয় , আজও 
আমি উদ্ভিদের মৌনতায় খুঁজে পাই নিজেকে -
এভাবে অচল আকাশে ধ্রুবতারা হয়ে থেকে
তারাখসায় আমার নাম লিখলে কেন -
জবাব দাও , প্রেম দহনের বিলাসিনী 
জবাব দাও।

অনসূয়া চন্দ্র

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৮-তম প্রয়াস












প্রেম  অনসূয়া চন্দ্র

বাথটবের জলে পা দিতেই  পা টা ছ‍্যাঁক করে উঠল ইতির। গরম জলটা বেশি হয়ে গেছে।আবার কল ঘুরিয়ে ও ঠাণ্ডা-গরম জলের সমানুপাত স্থির করল। আলতো করে শরীরটাকে জলে ভাসিয়ে দিল।এমন সময় কত চিন্তা, চেতনার ছেঁড়া পিঠে হেম সেলাই দিতে থাকে।কখনো ছোটবেলার সেই রাজকন‍্যের দুধসাগরে স্নান মনে পড়ে আবার কখনও এই জলেই ডুবে যেতে ইচ্ছে করে,কখনো মহাসাগর দেখে দু চোখে।
কলিং বেল বাজল।"কতক্ষণ ধরে বেল বাজাচ্ছি ,কী করছিলে?"
"স্নান"
"এই শীতে এতবার স্নান কর কী করে!গা টাও মোছনা নাকি!"
ইতি মৃদু হাসল।
এই যে চুল বেয়ে সারা শরীরে জল নেমে আসে,আমার কেমন জানি প্রেম প্রেম লাগে।কাউকে বলেনি সে।

Monday 27 January 2020

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৭-তম প্রয়াস













হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


পাখি রঙের আকাশ ----- ২৬

এই দ্যাখো, আমার দু'হাতে চাল ডাল আলু। রান্না করতে চাই। রান্না করব বলেই তো দেওয়াল তুলেছি। চারটে দেওয়াল। মাথায় টালি। হাওয়ার জন্যে জানলা রেখেছি। বৃষ্টিদুপুরে কাঠ জ্বলেনি। সব ভিজে হয়ে আছে। তুমি দূরে বসে আছো আমার হাতের দিকে তাকিয়ে। সব ভার আমার ওপর চাপিয়ে। তুমি যেন আমার পরীক্ষা নিতে এসেছ। তুমি আমার ক্ষমতাকে উপেক্ষা করে দেখতে চাইছো, এই বৃষ্টিদুপুরে আমি কি করে কাঠ জ্বালাই। তুমি দূরে বসে পরীক্ষা নিও না। এই দেওয়াল টালি চাল ডাল আলু তোমারও। আমরা রান্না করতে বসেছি। দ্যাখো, ভিজে কাঠে এখনই আগুন জ্বলবে।


পাখি রঙের আকাশ ----- ২৭

তোমার আমার মধ্যে একটা দূরত্ব থাকুক। বেশ অনেকটা পথ। দুজনের দুদিকে বাড়ি। মনে মনে এই রাস্তা রোজ পার হবো। কখনও বৃষ্টিদুপুরে, কখনও রোদদুপুরে। যেন রোজ একটু একটু করে পড়ে নেওয়া। কখনও ইচ্ছা যাবে একদিনে কি একবেলায় পুরোটা পড়ে নিই। সেদিন হোঁচট খাব। সেদিন সারাটা দুপুর থাকবে নিথর।  কোথাও কিছু চোখে পড়বে না। হঠাৎ করে পুরোটা পেরিয়ে যাবার ইচ্ছা কোথাও সুর পাবে না। তারপর ভোরের আকাশ কোথা থেকে একটা চড়ুই এসে রঙ করে দেবে। বুঝতে পারব কোথাও একটা দূরত্ব থাকেই। যতক্ষণ চোখ খোলা থাকে তা দেখে যেতে হয়। চোখ এতটাই ডুবে থাকবে যে পায়ে কোনো জ্ঞান থাকবে না। একসময় মনে হবে চড়ুই আমার খড়ের চাল থেকে এইমাত্র বেরিয়ে আমার চোখে ভোর নিয়ে এলো।

রবীন বসু

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৭-তম প্রয়াস












শ্মশান চণ্ডাল- রবীন বসু
প্রসন্ন  উড়ান নেই, বিপ্রতীপ পরিহাস হাঁটে
আমাদের প্রাত্যহিক মলিনতা মেখে মেখে ক্লান্ত হয়
সবখানে ধর্ষকাম     
            সুচতুর বেড়াল তপস্যা 
             শৃগালের জিভ  নিয়ে
      নিহিত আলাপ-ঘিরে বিজ্ঞাপিত
           শোক আর সূক্ষ্ম মঞ্চায়ন

দ্রিমি দ্রিমি নৃত্য হবে, সভ্যতার চোখে নেই একচুল ভয়

পৃথা চ্যাটার্জি

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৭-তম প্রয়াস











শীতের উষ্ণতা   পৃথা চ্যাটার্জি 
শীতের মধ্যে প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য আর সম্পদের পূর্ণতার দান রয়েছে। সোনালি ফসলে  বাংলার কৃষকের মনে আজও আনন্দের বান আসে।গ্রাম বাংলার কৃষক বৌএর মুখ এই সময় খুশিতে ভরে থাকে। শীতের সাথে আমার সখ্যতা আছে।আমি তাকে ভালোবাসি। আতপ চাল ধোয়া শীতল হাতে মায়ের গন্ধ খুঁজে পাই। ছোট বেলায় আমরা এই সময় বন্ধুদের  সাথে অনেকবার চড়ুইভাতি বা পিকনিক করতাম। আয়োজন খুব সামান্য ছিল, কিন্তু আনন্দ ছিল অপার।
মা ইতুপুজো করতেন। গাঁদাফুল,আল্পনা,ফলমূল আর ধুনোর গন্ধমাখা সেই সকাল  আজও  আমাকে হাতছানি দেয়।  তখন নবান্নের আনন্দ ছিল। আর ছিল পিঠে- পুলি- পায়েস;তার সাথে নতুন গুড়ের সুগন্ধ মিশে চারিদিক ম ম করতো।
 বাড়ির বাগান আলো করে ফুটে থাকতো গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা। বাবা এই ব্যাগভরে বাজার করে আনতো টাটকা ফুলকপি বাঁধাকপি,বিট,গাজর...। সবজির দাম কম থাকতো এই সময়ে।বাসন্তী শাড়ি আর সদ্যোজাত প্রেমে সরস্বতী পুজোর আনন্দ ছিল অপার। শীতের ফুলকপি কড়াইশুঁটি দিয়ে খিচুড়ি আর বেগুন ভাজা অমৃত ছিল।  শীতের রাতে আগুন জ্বালিয়ে তার চারপাশে বসে আগুন পোহাতে দেখতাম অভাবী মানুষকে।এখন আর সেই অভাব নেই। অথচ সবকিছুর মধ্যে কী যেন এক আনন্দ ছিল যা এখন আর খুঁজে পাই না ।

সোনালী দাস সরকার

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৭-তম প্রয়াস












সাহিত্য সেরা সাথী  সোনালী দাস সরকার

নীলাম্বরী বেদুইন মন 
     নীল সাগরে যেত ভেসে
বৃষ্টিদিনে কাগজ নৌযান  
        নঙ্গর লাগাতো এসে!
 আবেগ সোহাগী স্বপ্নে 
          সৃষ্টি উল্লাসে মেতে প্রাণ
 ক খ গ কবিতা হয়ে
          নৃত্যগীতে ভিজে স্নান!
ছোট্ট শিশুর সে কাল
        কত রচনা নিয়ে অভিমান
আজ পেয়েছি প্রমাণ 
          পাড়ি দিয়ে নৌক অভিযান!
সহানুভূতি রা  চিলেকোঠায়
            হারের হাসিতে রাখি জেদ
কিছু স্নেহনিলয়ে চলায়
           এগিয়ে চলেছি ভুলে খেদ!
আমার রঙিলা দিন
         পূর্ণ রূপেতে পাক প্রকাশ
 যেখানে রচনাতে কদর
           আনন্দে উড়ে ছুঁই আকাশ!
দরদী কাগজ ভেজায়
            দুক্ষ লাগে ছিঁড়ে যাওয়ায়
 পাড়ে পৌছাতে পেরে
             নিশ্চিত সঠিক বন্ধু পাওয়ায়!

জারা সোমা

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৭-তম প্রয়াস












আসর    জারা সোমা

ঘুরে যায় বছরের চাকা
তবুও  তৈরি নেই নতুন গল্প 
আসরে আসেনা গল্পদাদু
লবণজলে বেড়ে যাচ্ছে আসক্তি 
 বাঁধ ভাঙছে একটু একটু করে

বোবাশব্দে ভাসিয়ে দিচ্ছি  ডিঙি 
তারপর...

কবি, কবিতা এবং  চক্রব্যূহ।

রোনক ব্যানার্জী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৭-তম প্রয়াস












বিজয়া       রোনক ব্যানার্জী
          
কাশবন ম্লান হয়ে বসে আছে,আজ বিদায়ের পালা
যে সরোবরে ফুঁটেছিলো একশো আটটি নীল পদ্ম,
আজ তার বুকে শুধুই বাংলার আতঙ্ক।

সিঁদুরখেলা,অষ্টমী তিথিতেও হয়,তবে আজ বিষাদের সুরে ফ্যাকাসে;
রাস্তাজুড়ে শব্দবাজি আর লাউডস্পিকারের দাপাদাপি,
উৎসবি আমেজ ও অকারণ ক্ষুদ্র বিবাদের দগদগে ঘা যেনো জগদ্দল পাথর।

কথামতো, রীতিমতো, পুরুষতান্ত্রিক অনুশাসন ভেঙ্গে মা এসেছেন ধরায়;
প্রথাগত ধারায় বিদায় জানাতে হবে নারীশক্তির কান্ডারীকে,
সকলেই ক্লিওপেট্রা নয়, রাজাধিরাজের নির্দেশ মান্য করা আমাদের একান্ত অভিপ্রায়।

মন্ডপে আছড়ে পড়ছে না ভীড় কাতারে কাতারে
শিল্পীর লালিত শিল্পকর্ম বিমর্ষে অপলক;
আজ ওদের মৃত্যুর পালা, ওদের নিয়ে আবার মাতব্বরি হবে ফিরতি বছরে।

সুখ-দুঃখ,রাগ, অপবাদ, নৈবেদ্য সমস্ত ভাসান গেছে নদীতে,
ও নদী, তোমার অন্তরে কতখানি জায়গা?
তুমি তো মা, অনুভূতি চেপে রাখা তোমারই দায়,তোমারই কর্তব্য।

Sunday 26 January 2020

রবিবারের কথা

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৬-তম প্রয়াস

আজ বরিবারের কথায় পড়বো শীলা সিনহার প্রথম প্রকাশিত কবিতা এবং অনুভূতি। 














1) তার লেখা প্রথম প্রকাশিত কবিতা।   

 প্রথম প্রকাশিত কবিতা -" অবলা নারী "
 পত্রিকার নাম -" অতসী " 

2) প্রথম প্রকাশের অনুভূতি 

কবিতা লিখতাম মনের খেয়ালে তা যে কোনো দিন পত্রিকায় বেরুবে ভাবিনি। এক বন্ধুর প্রচেষ্টায় একদিন তাও সম্ভব হোলো। একইসাথে কয়েকটি পত্রিকায় কবিতা দিয়েছিলাম, এক এক করে সবগুলোই প্রকাশ  হয়েছিল। প্রথম যেদিন " অতসী " পত্রিকাটি হাতে পেলাম সেদিন এক দারুণ অনুভূতির সঞ্চার হয়েছিল এবং আরও অনেক বেশি করে লেখার অনুপ্রেরণা লাভ করেছিলাম। খুব আনন্দ হয়েছিল। এখন আরও অনেক লিখে এগিয়ে যেতে চাই।

শীলা সিনহার কবিতা...

অবলা নারী 

মাটির পুতুল নই গো আমি, 
নই কো তেমন দামী,  
সবার সাথে পথ চলতে
জানি, আমিও জানি। 

সস্তা কাঁচের পুতুল ভেবে
কোরো নাকো খেলা, 
প্রয়োজনে ফুটবো হাতে
বুঝবে বিষের জ্বালা। 

ভেবোনা রাতের অন্ধকারে
নিস্তবতা ভঙ্গ করে, 
আসবে কাছে, সকাল হোলেই
খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে 
ফেলবে ছুঁড়ে আস্তাকুঁড়ে। 

আমি গড়তেও পারি, ভাঙতেও পারি,
আবার নিমেষে জ্বলে উঠতেও পারি। 
রৌদ্র-প্রখর ধরনীর বুকে, 
আনন্দ ধারায় ঝরতেও পারি, 
আমায় ভেবোনা অবলা নারী

Friday 24 January 2020

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৪-তম প্রয়াস













হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


পাখি রঙের আকাশ ----- ২৪

যে তোমাকে রেখে চলে গেল সে তো যাবে বলেই এসেছে। সামনে তুমি না থেকে অন্য যে কেউ থাকলেও সে যেতো। আসলে তারা শুধু যায়। চলে গেলে তো আর দেখা যায় না। দেখা যায় না বলেই দেখা হয় না। আর দেখা হয় না বলেই পৃথিবীতে তার মায়া নেই। কোনো কিছুর সঙ্গেই সে জড়িয়ে নেই। তা না হলে আসার কথাতেই তো সে ভেসে যাবে। এলেই তো জড়িয়ে ধরবে আলো। নিয়মের সীমানা পেরিয়েই পাখি ওড়ে। যখন নিয়ম বেঁধে সে তোমাতে রাখছে হাত তখন পাখি উড়ে গেছে।


পাখি রঙের আকাশ ----- ২৫

রবিবার মানে দেরিতে সকাল। জানলা খোলা আকাশ। জানলার পাশ দিয়ে একটা সিঁড়ি উঠে গেছে, যেন এখনই কেউ নেমে আসবে। দিনটার মধ্যে যেন কেউ কিছু গুলে দেবে। তখন অবসরের মধ্যে দুপুরবেলা একটা পাখি গান গেয়ে উঠবে। একলা হলেও নেচে উঠবে মনটা। ঠিক তার পরেই সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসবে বোরোলিনের সংসার। কাহিনী চলতে চলতেই রান্নাঘর থেকে ডাক আসবে। খেতে খেতে কোথাও মাকে খুঁজে পাব না। আকাশ হঠাৎ কালো করে আসবে। জানলার পাল্লা দুটো খোলা, মনে হবে আমার দুটো চোখ।


নাসির ওয়াদেন

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ২৪-তম প্রয়াস












মায়া হরিণ   নাসির ওয়াদেন
দিন হাঁটতে হাঁটতে চলে যায়
অন্য এক দিনের দিকে, নিঃশব্দে
দৌড়াতে দৌড়াতে সময় ক্লান্ত
ভাসে মায়া হরিণের খুরের শব্দে

পেছনে ফিরে দেখি কেউ তো নেই
যারা যারা পেছনে আসছিল
হয়ত তারাই এগিয়ে গেছে, অথবা
কোন এক আঁধার লুকিয়েছিল

জীবন মায়া হরিণের ছায়াগাছ
যেই ধরতে যাই, পিছলে চলে যায়
হাঁটলেই পেছনকে ধরে হাঁটে
ছুঁতে পারিনি কখনও সুন্দর মুখটাই

সন্ন্যাসদিন সন্ধ্যা নামলেই হয়ে পড়ে মৌন
সরল সত্যের চাপে বাকি কথা সবই গৌণ