মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ
যুথিকা দাশগুপ্ত
সমর্পণ
আজকে অনেক সরল প্রশ্ন
যুথিকা দাশগুপ্ত
সমর্পণ
আজকে অনেক সরল প্রশ্ন
সহজ ভাবে এসে ---
হঠাৎ করেই অপ্রস্তুতে
দাঁড় করিয়ে হাসে,
তির্যক আরও প্রশ্ন যেন
স্বভাবত আসে জুড়ে ---
বলতে চেয়েও পারলাম না
অবোধ শিশুর তরে।
প্রতিদিন আমি একাই মরি
বাঁচার প্রত্যাশায় ---
মাঝে মাঝে তাই সন্দেহ হয়
জীবিত নাকি নয় --?
আমি যে "অনাথ"---এই কথাটা
বোঝানোর ভাষা নেই ---
অবোধ শিশু অবুঝের মতো
প্রশ্ন করে চলেই ----
কখনো পুরোনো ছবিতে দেওয়া
মালার অর্থ কি --?
আমরাও কেন পড়িনা মালা ---
বোঝে না লাভ -ক্ষতি।
দুচোখ আজকে লুকাই ক্ষণে
নিষ্পাপ চোখ থেকে ---
জন্ম আমার কালিমা মুখর
কলঙ্কটাই মেখে,
প্রশ্নে-প্রশ্নে জর্জরিত
অপরাধে একাকার --
জাগ্রত হয় অতীত আমার
জানাতেই ধিক্কার।
ভাগ্য চক্রে আজকে আমার
আপনার দোর বন্ধ ---
একদা যেখানে কাটিয়েছি বেলা
স্তব্ধ সে হৃদপিন্ড,
প্রাণ হীন কিছু রং চটা স্মৃতি
ঘুরে আসে সম্মুখে ---
উত্তর তার খুঁজেছে জীবন
ক্ষত --বিক্ষত বুকে,
বার বার সেই ক্ষত স্থান জুড়ে
নিবিড়ে রক্ত ক্ষরণ ---
প্রতিবার আমি হারের কাছে
করেছি সমর্পণ।
ভর
যে রাত আজ আর চিনতে পারেনা
তার কাছে আমি অচেনা ---
যে বাক্যবাণ বিঁধেছে বহুল
বিকৃত তার চেতনা ----
উপহার গুলো আজও সজ্জিত
সযত্নে মনিকোঠায় ---
একাকিত্বের সুযোগ নিতে
বেপরোয়া হাত বাড়ায়,
আমিও তখন পালিয়ে বেড়াই
নিজের ছায়ার থেকে --
মায়া হীন কিছু আবছা ছবি
দাঁড়ায় ধোঁয়াশা মেখে।
কথা জুড়ে সেই চেনা স্বর গুলি
অদৃশ্যে যেন ভাসে ---
আজও চলে কত সওয়াল -জবাব
দেওয়ালের গা ঘেঁষে,
পুরোনো পাঁচিল --সবুজ শ্যাওলা
ধ্বংস স্তুপের মতো ---
আজও জাগ্রত প্রত্যাশাতে
পসরা সাজানো ক্ষত।
নেমে আছে কত বটের ঝুরি
সাক্ষ্য বহন করে ---
চেনা স্বর যেন আনাচে -কানাচে
ক্রমেই আছড়ে পরে,
চেনা নাম গুলো প্রতি নিয়ত
প্রতিধ্বনিত হয় ----
হয়তো বা তারা আজও বেঁচে আছে
সতর্ক পাহারায়।
প্রাণ পণ কভু চেষ্টা করি
যদি বা পারি চিনতে ----
তখনই যেন ঘুম ভেঙে যায়
শব্দ শুনতে --শুনতে,
কত কান্না --কত কোলাহল
কুবাক্য আর চিৎকার ----
রাত শেষে এসে দিনের সাথে
হয়ে যায় সব একাকার -----
স্বপ্ন গুলো পরিচিত আজ
রোজ যাতায়াত করে ----
নিত্য যাত্রী হয়ে যেন তারা
ক্রমাগত ভর করে।
জাত
জাত নিয়ে আজ যুদ্ধ বাঁধে
জাতেই মরে জাত -----
জাতের হাতেই হচ্ছে নষ্ট
অন্য জাতের ভাত,
"জাত "বোঝাতে হরেক সংজ্ঞা
আসলে "জাত "কি --?
বামুন -কায়েত -বদ্যি নাকি
এস. সি ---এস. টি. ----?
জাতের নামে পৈতে পড়েন
জাতের নামেই বিয়ে ---
এ জাত -সে জাত, না মিললে আজ
যায় মানুষ পালিয়ে ----
তাতেও জাতের জাত যায় না
খর্ব হয় না মান ----
জাতের জোরে সংরক্ষণ
জাত-ই অভিমান,
"মানুষ "শব্দ গৌণ হয়ে
"জাত "হয়েছে মুখ্য ----
জাত -ভাইদের ঔদাসীন্যে
জাত-ই জাতের দুঃখ।
"বেজাত "কথার অর্থ যদি
জাত নেই যার কোন ----
জাতের ব্যাখা --বিশ্লেষণে
কাদের কথা শোনো ---?
জাত নিয়ে হয় মারামারি
জাত দেয় না ভাত ----
নষ্ট পাড়ার জাত হয় না
তাতেও পোহায় রাত।
No comments:
Post a Comment