মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ
কেয়া চক্রবর্তী
কেয়া চক্রবর্তী
ঝর্ণা
ঝর্ণা বয়ে চলে কুলকুল রবে
গাইছে বুঝি সে গান
নাকি ঝরে পড়ছে তীব্র বেদনায়,
নাকি রয়েছে কোথাও নীরব অভিমান!
পাহাড়ের বুকে জন্ম নিয়ে
ভেসে চলে সে দূরদেশে,
নাকি বহুদূরে গিয়ে
কোনো এক নদীতে মেশে।।
পাহাড়িয়া পথে বয়ে চলেছে এমনই এক ঝর্ণা,
ঠিক যেন সপ্তদশবর্ষী এক চঞ্চল কন্যা।।
নয়নাভিরাম সে এক অপূর্ব দৃশ্য,
তাকিয়ে ছিলাম তারই পানে ভুলে মনের সকল বিষাদ, হর্ষ।।
পাথরের বুকে কুলকুল ধ্বনিতে অবিরাম পড়ছে ঝরে
সুরের মূর্ছনায় মাতিয়ে রেখেছে আপন ও পরে
দূর হতে শুনতে পাই যখন প্রকৃতিও থাকে নিস্তব্ধ ,
ভালোই লাগে হারিয়ে যেতে হই না কখনও বীতশ্রদ্ধ।।
জীবন নদী
জীবন নামের এই তরণীতে চলেছি ভেসে অজানায়,
সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা যেখানে রথের চাকার মতো পরিবর্তিত হয়।।
ছলছল আঁখি মোর বলতে চায় সেসব কথা,
জীবননদীর প্রতি বাঁকে পাবে এদের দেখা, যতই ভুলতে চাও তোমার ব্যথা।।
সুখের পরে পাবে তুমি দুঃখের অবশ্যই দেখা,
যেন অঙ্গাঙ্গীভাবে জুড়ে থাকা।।
সুখের স্রোতে মানুষ ভুলে যেতে চায় সকল বেদনা,
দুঃখের সময় যত পেয়েছে সে যাতনা।।
মানুষ ভেসে থাকে যখন সুখের জোয়ারে
তখনই দুঃখ এসে জাপটে ধরে,
সেই সুখের কথা মনে করে,
অশ্রু হয়ে ঝরে পড়ে।।
দুঃখের সময় যখন নেয় না খোঁজ কেউ
মনের মাঝে ওঠে তখন অনুভূতির ঢেউ
যাতনা ও বেদনায় অশ্রু হয়ে ঝরে পড়ে,
তখন সুখের দিন আসবে কবে তার চিন্তা করে।।
জীবন নদীর পদে পদে এদের নিয়েই ভেসে চলা,
এখানে টিকে থাকতে গেলে জানতে হবে অনেক ছলাকলা,
কখনও এগিয়ে আবার কখনও পিছিয়ে পড়া,
এভাবেই দুকূলে নিয়ত চলে ভাঙাগড়া ।।
বাড়িয়ে দি হাত
স্বার্থপরতার অদৃশ্য ছায়ায় যখন মনুষ্যত্ব লাঞ্ছিত, বিপর্যস্ত ঠিক তখনই,
বিবেক, সহানুভূতি,সহমর্মিতা হয় বিসর্জিত,
তখন সুচেতনা উদ্রেককারী কথাই একমাত্র হাতিয়ার হতে পারে
অবক্ষয়গ্রস্ত সমাজকে পুনরুদ্ধার করে দেখাবে দিশার আলো ।।
একজনের বিপদে থাকি মোরা, বাড়িয়ে দিয়ে আমাদের সাহায্যের হাত,
আসুক জীবনে যত ই ঘাত প্রতিঘাত,
উঠতে গেলে পড়তেই হবে এরই নাম জীবন,
থেমে না থেকে এগিয়ে চলি করতে হবে এই হোক আমাদের অভীষ্ট।।
কবির কলম গর্জে ওঠে এমনই কঠিন সময়ে,
কালজয়ী কবিতা ও সাহিত্য কর্ম সৃষ্টি হয়েছে যা আমাদের দিয়েছে প্রেরণা।।
মনুষ্যত্ব রক্ষার তাগিদে অর্থের নেই প্রয়োজন,
সহযোগিতাই হোক মূল মন্ত্র প্রতিযোগিতা করে বর্জন,
একটাই তো জীবন, যদি লাগতে পারি কারো প্রয়োজনে।
সাফল্যের মন্ত্র
মানুষ তার কর্মের কারণেই হয় মহান,
বাহ্যিক সৌন্দর্যের সেখানে নেই কোনোই দান,
মনে না থাকলে ভক্তি বাহ্যিক আড়ম্বর বৃথা,
ভক্তির সঙ্গে আছে মনের যোগ, বাকি সবই মিথ্যা।
কর্মই ধর্ম, পুজোর জন্য যেমন অত্যাবশ্যকীয় ভক্তি,
মনোযোগসহকারে করিলে কর্ম, সাফল্য অবশ্যই হবে প্রাপ্তি।
সাফল্যের সোপানে ধাপে ধাপে করতে হয় আরোহন,
একলাফে সাফল্য পাওয়া, অরণ্যে রোদন।।
সাফল্য অবশ্যই দেবে এসে ধরা সঠিক সময়ে,
অপেক্ষার ফল ভারি মিঠা,তাই কাজ করো সদা মন দিয়ে,
সময়ের কাজ সময়ে করাই রীতি,
কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়েই লুকিয়ে আছে সাফল্যের চাবিকাঠি।।
No comments:
Post a Comment