Friday 17 April 2020

রাণা চ্যাটার্জী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ










রাণা চ্যাটার্জী


কেন এলে!
                         
বেশ তো ছিলেম,কেন এলে দগ্ধ জীবনের চিন্হ     
               দেখেও শান্তির প্রলেপ নিয়ে..
স্রোতস্বিনী নদী রূপ জীবনের বাঁক ঘুরে ক্লান্ত,নুড়ি পাথরের বোঝা!
নদীর মতো নারীর বিলিয়ে দেওয়া জীবনের মিঠাস,
বিনিময়ে শহুরে জঞ্জাল ভার,নষ্টা নদীর তকমা!

আর মিশবো না ,মাখতে দেবো না পুরুষ তান্ত্রিক পাঁক,
তবু নাছোড়বান্দা তুমিত্বে মুগ্ধতা কোন আবেগী বেখেয়ালি ক্ষণে,
ভাসিয়েছিলে স্বপ্ন, নদীতে,বিষাক্ত অতীত সরাবার মিছে পানসি নাও!
শরীর জুড়ে দশমিক ভগ্নাশ ক্ষত, দগ দগে ঘা'য়ে
 কয় মাসেই মোহভঙ্গ, বারংবার সাবধান বাণীতেও!

বাহ্যিক আচরণে বল্গাহীন ঘোড়া ছোটানো বড়ো চেনা হে, মহামানব আর্য পুত্তুর পুরুষ কুল, 
সংকীর্ণতার বাঁধনে আজো শত যোজন দূরে আধুনিকতার প্রলেপে মগ্নতা।


বাঘ বন্দি চেনা ছক
                    
অনেক হয়েছে, আর ভালো লাগে না,
সেই আকাশ, এই বাতাস ,এই তুমি ,সেই  
                 প্রেমালাপের বাঁধাধরা, খাঁচা গন্ডি!

হাঁপিয়ে পড়া এই জটিল টক্সিন সমৃদ্ধ  জীবনের একঘেয়েমি বৃত্তীয় ময়দানে একই রম্ভস দৌড়!

বেঁচে থাকা বড় বোঝা লাগে, তবু চলে জীবনের অপর্যাপ্ত ক্লোরোফিলে গতানুগতিক সালোক সংশ্লেষ । 
বন্যা বিধস্ত হরকা বান সমাজে, মাথা তোলে,
ধর্ম,সংঘাত,হিংসা,উদ্বাস্তু,দুর্নীতি-র চেনা ফলক।

তবু শ্বাস নিয়ে নিশাচর রাত জাগি আর...
  মনে মনে বলি খাসা,শ্বাশত এ জীবন ভালোবাসা।


মেঘ কন্যার পথে
                  
উমিয়মের লেক ধরে এক ছুটে ,
     নিয়ে আসি এক মুঠো বিশুদ্ধ বাতাস ।
আমার মন খারাপ করা কালো ধোঁয়া ,
     চেরাপুঞ্জির আঁকে বাঁকে, দলছুট আনমনা
মেঘের সারিতে মিশে যাবার প্রত্যাশায় ।
বৃষ্টি ভেজা মেঘ বালিকার আঁচল
                     পিটুইটারির ক্ষরণ ধরায় ।

বৃষ্টিস্নাত আমি ভিজতে ভিজতে আজও
পথ হেঁটে পাড়ি দেই অপরূপ লিভিং রুট ব্রিজ।
গহন গভীর দারুচিনি পাকদণ্ডি পথ,
স্থবির করে মাদকতায় আমার চেতন অবচেতন ।
মেঘ কন্যার স্পর্শ পেতে ইঁট,কাঠ পাথর জঙ্গল টপকে ,
এক লহমায় ছুটে যাওয়া এ আমার এক অনন্ত সুখ বৃষ্টি ।


নোনা বৃষ্টি
                  
এক মুঠো আনন্দ হৈ হুল্লোড় মাঝে, 
                এক চিমটে মন খারাপের গন্ধ ,
তোমায় খুঁজে,খুঁজে না পেয়ে দিশা হারায়!
পদ্ম পাতায় জল টলমলে সুখ গতি পাল্টায় নিমেষে,
তোমায় না দেখতে পাবার ভ্রু কুঞ্চন বিহ্বলতায়!

অনুভবে গভীরে থেকেও এ লুকোচুরি খেলা
        তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় অনাকাঙ্খিত শূন্যতায় ।

এটা বোঝো বলেই শিরায় শিরায় দুষ্টুমির রক্তচাপ,
উড়ে যাবার মিছে পাখনা মেলে, স্থবির করে   
                                       আমাদের শুভচিন্তক ।
যতদিন না বাঁধতে পারছি শেকলে ,
       খুনসুটির কালো মেঘ গা ঘেঁষাঘেঁষি থেকেও,
পশলা পশলা নোনা বৃষ্টি ভেজায় , আমার  
                       ভালোবাসো ,আমার মুঠো বিশ্বাস ।
তবু,তুমি আছো অনুভবের প্রতিটি রন্ধ্রে নিমজ্জিত


মুক্তির খোঁজ নেই
                             
সব হারিয়েছি তোমার অপার টানে,
কতকাল কপাল চুম্বন স্পর্শ থেকে বঞ্চিত আমার সুখ ঘুম।
ছাপা অক্ষর গল্প ,ঘুম চোখ,আমাকে আর এগিয়ে  
               দিয়ে আসেনি ঘুম পাড়ার গলি প্রান্তরে।

বিজ্ঞান আশীর্বাদে বিদায় ঘন্টা গভীর নিটোল ঘুমে,
নিয়ন আলোর ছটায় রাতজাগা নিশাচরের দামাল দৌরাত্ম!
ভুলে যাওয়া চিঠি লেখার সাবলীল প্রয়াস কতকাল 
পথ থমকেছে পারদর্শি ম্যাসেজ লেখার আঙুল ডগায় ।
ঘুম ভাঙা, ওঠা, ছোটা ,দু পলক বিশ্রামের নরম সোফা টপকে আধুনিকতা, 
মাইলস্টোন ছোঁয়,
চুইয়ে পড়া  স্বার্থপরতায় গা ঘেষাঘেষির বৃত্ত ।

আপনজন বার্তা ,নিখাদ গল্প ,পেঁয়াজ কুচি ,চপ  চানাচুর মাখা একগাল  মুড়ি মাখা ,
বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে পথ থমকায় ব্যস্ত নেট জীবন।

চোখে চোখে ইশারা,অপেক্ষার সাংকেতিকতা
সরায়, /সেই হৈ হুল্লোড় সান্ধ্য নিখাদ আড্ডা ঠেক।

মন চলে গেলেও মুহূর্তে ফিরে আসতে বাধ্য হয়,
গতানুগতিক,খাঁচা ভরা জীবনের দাবার চালে।

No comments:

Post a Comment