Saturday 4 April 2020

শ্যামল অধিকারী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ









শ্যামল অধিকারী


আগুন পাখির স্বপ্ন ভঙ্গ
         
আগুন পাখি ঘোমটা পরে,
দুঃস্বপ্নের আগুন ঝরায়।
চলে চরম লেলিহান শিখার উত্তাল,
উত্তেজিত উত্তাপে নবান্নের স্বপ্ন ভঙ্গ।
আগুন পাখি তুমি লক্ষীছাড়ি কেন?
কেন তুমি আগুন ধরাও সুখের সাগরে?
আনন্দের ভিটে মাটি কেন তুমি পোড়াও?
তুমি তো হৃদয়ের অক্সিজেন;
তুমি তো ক্লোরোফিল নামক রঞ্জক;
তুমি তো কোকিলের কুহু স্বরে স্বপ্ন দেখাবে।
কিন্তু তুমি ভিসুভিয়াস হয়ে আগুন ধরাও !
তুমি স্বপ্ন সাজাও হও অপরুপা ঝর্না,
সবাইকে পুড়িয়ে দিও না এই আমার কামনা।

গঙ্গা - যমুনা
     

চোখে ঝরে গঙ্গা - যমুনা।
নিটোল গালের সীমা পেরিয়ে চলে যায় হৃদয় মোহনায়।।
আপাদমস্তক চলতে থাকে জোয়ার-ভাঁটার খামখেয়ালীপনা,
মনের জোয়ারে আসে‌ প্রতিবাদী ঢেউ;
আর দুঃস্বপ্নের ভাঁটার টানে হয় নিঃস্ব এক বদ্বীপ।
চলে দোদুল্যমান তৎপরতা !
যুদ্ধ জয়ে চলে রুদ্র বাবরী তরবারি ....
আবার চলে ময়ূর সিংহাসন ছিনতাই কারী ব্রিটিশ দের অমানবিক কারবার,
এ যেন রক্ত পিপাসু যুযুধান সংহার।
অন্ন চাই ;আবাস চাই ওঠে কলরব,
নিরন্ন দের অন্ন নিয়ে চলে বাবু দের জ্যামিতিক যোগ - বিয়োগ।
তবু আজ ও আপন মনে বয়ে যায় নিরন্ন দের চোখে গঙ্গা - যমুনা।


স্বার্থের ভালোবাসা
           
বেনিয়াসহকলার রঙে লজ্জিত হৃদয়,
প্রেম সুন্দরী সুনামী হয়ে বারে বারে রঙ পরিবর্তন করে ।
সাহারা মরুভূমি হয়ে ওঠে ভালোবাসা,
দোদূল্যমান তারারা মিটিমিটি করে ওই নীল আকাশের বুকে।
নীরব মনে স্বপ্নের ঘোরে জালাই ভালোবাসার সাঁঝবাতি,
বিভীষিকাময় আগুন হয়েছে স্বপ্নের জ্বালামুখি।।
বিভীষিকাময় তুফান দিয়েছে ভালোবাসায় অশনি সংকেত,
স্বার্থের ভালোবাসা আজ হয়েছে পর্নমোচী বৃক্ষ।
স্বার্থের ভালোবাসা আজ হয়েছে বিষবৃক্ষ।
স্বার্থের ভালোবাসা আজ সব হারিয়ে হয়েছে‌ বোধি বৃক্ষ।।


পাগলের পাগল

জোনাকির আলো আজ আলেয়া,
ঝিঁঝিঁ পোকার কান্না কিছু যেন বলতে চায়।
ব্যাঙের গ্যাঙর গ্যাঙর গান সংগমের বার্তা দেয়,
অদূরে ইষৎ শব্দে কুকুরের কোলাহল।।
আর তারই মাঝে নীরবে রাত্রি যাপন,
স্বপ্নের মন্দির মাঠের হাট শূন্য।
জানালা দিয়ে চোখ পরে দুরে যেন কেউ দাঁড়িয়ে,
আমি দরজা খুলে বেরিয়ে যাই।
আর গিয়ে দেখি এক পাগল।
প্রলাপ বকে চলেছে।
শীতের উলঙ্গ রাতের উলঙ্গ পাগল,
আমার চোখ হতে জল পড়ে।
আমার লাল শাল খানা ওর দেহে মুড়ি দিয়ে ঘুড়িয়ে দেই,
আর আমি ও পাগলা হাওয়ায় পাগল হয়ে রাত্রি কাটাই।।


গুরুকূল

 আমি সেদিন বিকেল বেলায় যাচ্ছি হেঁটে মাঠে,
সাড়া নেই শব্দ নেই হুড়মুড়িয়ে ছোটে।
পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ভায়া,
দেখতে দেখতে চারিদিকে অন্ধকারের ছায়া।
রোদ নেই বৃষ্টি নেই তবে কি আমর ভ্রম,
তাকিয়ে দেখি মাষ্টারমশাই ছাতা মাথায় হাঁটছেন হরদম।
ছাত্ররা তাই লাফিয়ে লাফিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে ওই ‌ -
ভয়-ভিতী ছিল বলে দৌড়ে ছিল ওরা,
আজকে কিন্তু ভয় নেই আর সামনে যাচ্ছে যারা।

No comments:

Post a Comment