Thursday, 30 April 2020

মন্দিরা ঘোষ

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ










মন্দিরা ঘোষ



অলৌকিক 

সাদা কালো পাতার ঘামে যে সব লুকোচুরির 
বয়ান থাকে তার নাম নিশিযাপন  হোক
রাতের হেডফোন বদলে দেয়
খোলা জানলার চরিত্র
একটা  আনফোল্ড পাতায় এক টুকরো
  নিঝুম আকাশ  কিংবা
 চাঁদের আলোয় যে সব নাবালক  কবিতার মিছিল 
হেঁটে যাচ্ছে নিঃশব্দ আগুন নিয়ে 
সেই  অচেনা অভিপ্রায় টুকে রাখবো বলে মধ্যরাতের নোটবুক খুলেছি
আর ঘোলাটে  ঈশ্বর এসে সরিয়ে দিচ্ছে চোখ
বোতাম আলগা করেও রুখতে পারিনি অসুখ
শুধু কষ বেয়ে নেমে যাচ্ছে
 অলৌকিক  ভোরের উপশম


পিছুটানের কবিতা

যখন দিনের গায়ে দীন হয়
 ছায়ার কারুকাজ
প্রাত্যহিকতায় ডুবে যায় রোদের ভবিষ্যৎ 
একটা  সাদা পাতা জুড়ে 
নেমে আসে বাঁচার করুণা
আর ঠিক  তখনই  কোন বিকেল
 স্বয়ং আলোর দিকে হেঁটে যেতে থাকে
কোনো তরিক খুলে দেয় তরি
 বোঝাপড়ার দুপুরগুলো হাত নাড়ে
জলের অভিধান থেকে টুকে রাখি
কান্নার বিপ্রতীপ কোণ
শোক আর স্রোতের  প্রবাহে
কিছু লবনাক্ত লিমেরিক আমাদের
 পিছুটানের কবিতা হয়ে যায়


আবিল

সংকোচ  আছে 
আছে চাওয়ার সারি 
মাটির গন্ধের মত 
মায়া পিছু পিছু

স্পর্শের সারণি ছুঁয়ে
 নিঃসারী স্রোত
চোখের ভেতরে নামে
 নরম সহজ

ঝুরো ঝুরো বৃষ্টির তাত 
তুমি আমি শুদ্ধ ফেনায় মাতি 
 দূরকে কাছে পেতে 
আবিল খাতা খুলে রাখি


হয়তো 

বিষণ্ণ  বাঁক বদলে কিছু অনুগত 
আগামীকাল  থাক
জোনাকিপোকার শর্ত মেনে
ধানখেতে নেমে যাবে চাঁদ 
নদী  নামের মদ আকন্ঠ ভরে নিয়ে
উদাস বাউলের অবেলার উজান

আমাদের আন্তরিক দীনতায় 
  'হয়তো'র  ছায়া মুছে দিলে
বেলফুল ফুটে উঠবে দ্রাঘিমা জুড়ে

 সবুজখামারের লগবুক থেকে 
 উড়ে যাবে সরলবর্গীয় হাসি

আমরা  রোদ চিরে 
ক্লোরোফিলের জবাব খুঁজে দেবো


দুপুর

এতসব যৌগিক ব্যথার ভেতরেও তুমি উঠে বসলে
 ভাঙা হারমোনিয়াম থেকে  সভ্যতার ঘুম ভেঙে যায়। 
ধুলোর অধরে জ্যান্ত হরিতকী বিকেল চেয়ে থাকে চুপচাপ।
আমার সহোদর রাস্তা আমাকে খুলে নেয় প্রতিদিন।
 গ্রীবার ওপারে ফুটন্ত আকাশে তোমাকে দেখি অথচ 
তোমাকে লেখা যায় না ঠিকমতো। 
কাগজ ফুটো হয়। কলমে রক্তারক্তি। চোখে ঝাপসা চাঁদের ঝুমুর। 
আমার সহোদর রাস্তা দুপায়ের চাহিদা চুরি করে।
 দুপুরের গ্রীবার পাশে তোমাকে ফুটে থাকতে দেখি আর
 আমি পৌঁছাবো বলে পড়ে নিই আলোকিত বসন্তের বিকেল।

No comments:

Post a Comment