Showing posts with label ২৫ শে আশ্বিন. Show all posts
Showing posts with label ২৫ শে আশ্বিন. Show all posts

Tuesday, 12 October 2021

শারদীয় সংখ্যা ~প্রচ্ছদ ১৪২৮

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| 
প্রচ্ছদ,১৪২৮~শ্রীমহাদেব



























 ::সম্পূর্ণ সূচি ::

প্রভাত চৌধুরী | মুরারি সিংহ (মুক্তগদ্য) | নিখিলকুমার সরকার | যশোধরা রায়চৌধুরী | দিশারী মুখোপাধ্যায় | তৈমুর খান | সুবীর সরকার | রবীন বসু | ভজন দত্ত | ভাস্বতী গোস্বামী | বিভাবসু | মাসুদুল হক | স্বপন নাগ | ফটিক চৌধুরী | শ্রীপর্ণা গঙ্গোপাধ্যায় (মুক্ত গদ্য) | রিতা মিত্র | চন্দ্রদীপা সেনশর্মা | বিকাশ চন্দ | হারাধন চৌধুরী | শিকদার ওয়ালিউজ্জামান | আমিনুল ইসলাম | মন্দিরা ঘোষ | পল্লব গোস্বামী | শম্পা ব্যানার্জি | নবনীতা সরকার (অনুবাদ) | সুজিত রেজ | শীলা বিশ্বাস | সুধাংশুরঞ্জন সাহা | তনিমা হাজরা (অণুগল্প) | গোবিন্দ ব্যানার্জী | হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় | তাপস গুপ্ত | প্রদীপ দে (অণুগল্প) | দিলীপ পণ্ডা | বাসব রায় | ময়ূখ হালদার | সিদ্ধার্থ সিংহ | তাপস কিরণ রায় (গল্প) | চঞ্চল নায়েক | সংযুক্তা পাল | রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় | দেবলীনা চক্রবর্তী (মুক্তগদ্য) | হেমন্ত সরখেল | দীপিতা চ্যাটার্জি | দেবার্ঘ সেন | নিমাই জানা| অভিজিৎ পালচৌধুরী (ঝুরো গল্প) | কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় | গৌতম কুমার গুপ্ত | শুভঙ্কর পাল | পৃথা চট্টোপাধ্যায় | অর্ঘ্য দে | ইউসুফ মোল্লা ( কিছু কথায়) | মৌমিতা পাল | সায়ন্তনী হোড় | শ্যামশ্রী মুখোপাধ্যায় | সুকন্যা ভট্টাচার্য্য | চুমকি ভট্টাচার্য (অণুগল্প) | গৌতম রায় | বন্যা ব্যানার্জী | প্রণব রুদ্র | অনামিকা নন্দী | রুনা দত্ত | শীর্ষা | সোমা ঘোষ | সোমা ব্যানার্জি | দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় (অণুগল্প) | অনসূয়া চন্দ্র | পার্থ সারথি চক্রবর্তী | উদয়ন চক্রবর্তী | কৃষ্ণ রায় (অণুগল্প) | সোমা দাস | শ্রীকান্ত মাহাত |

শারদীয় সংখ্যা ~ শ্রদ্ধার্ঘ্য

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা||

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা-র শারদীয় সংখ্যা ১৪২৮,২৫ শে আশ্বিন সংখ্যা,উৎসর্গ করলাম কবি বেগম সুফিয়া কামাল কে ।



বেগম সুফিয়া কামাল 

সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আব্দুল বারী এবং মাতার নাম সৈয়দা সাবেরা খাতুন। তাঁর বাবা কুমিল্লার বাসিন্দা ছিলেন। যে সময়ে সুফিয়া কামালের জন্ম তখন বাঙালি মুসলিম নারীদের গৃহবন্দী জীবন কাটাতে হত। স্কুল-কলেজে পড়ার কোন সুযোগ তাদের ছিলো না। পরিবারে বাংলা ভাষার প্রবেশ একরকম নিষিদ্ধ ছিল। সেই বিরুদ্ধ পরিবেশে সুফিয়া কামাল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ পাননি। তিনি পারিবারিক নানা উত্থানপতনের মধ্যে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন।

১৯২৬ সালে তার প্রথম কবিতা 'বাসন্তী' সেসময়ের প্রভাবশালী সাময়িকী সওগাতে প্রকাশিত হয়। ত্রিশের দশকে কলকাতায় অবস্থানকালে বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র যেমন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র প্রমুখের দেখা পান। মুসলিম নারীদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্য বেগম রোকেয়ার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলামে’ রোকেয়ার সঙ্গে সুফিয়া কামালের পরিচয় হয়।

সাঁঝের মায়া (১৯৩৮) এবং উদাত্ত পৃথিবী (১৯৬৪) তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ, এবং বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬২)।সোভিয়েত লেনিন পদক (১৯৭০)। সংগ্রামী নারী পুরস্কার, চেকোশ্লোভাকিয়া (১৯৮১)।বেগম রোকেয়া পদক (১৯৯৬) সহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন।নভেম্বর ২০, ১৯৯৯ (বয়স ৮৮) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঢাকা, বাংলাদেশ।


শারদীয় সংখ্যা ~সম্পাদকীয় নয় কিন্তু

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| সম্পাদকীয় নয় কিন্তু 
                                                                        অভিজিৎ দাসকর্মকার

সম্পাদকীয় নয় কিন্তু 


আজ মহাসপ্তমীর পূণ্যলগ্ন,যেখানে দেবীর আগমনী গান ধ্বনিত হচ্ছে বাড়ির চৌকাঠে চৌকাঠে 

"এবার আমার ঊমা এলে
আর ঊমা পাঠাবো না..."

সেই অনন্ত শান্ত লগ্নে মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা কবি বেগম সুফিয়া কামাল কে উৎসর্গ করা এবছরের বৃহৎ শারদীয় সম্ভার প্রকাশ করলো। যেখানে ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গ এমনকি প্রবাসী বাঙালি কবি সাহিত্যিকদের লেখায় সমৃদ্ধ ১৪২৮ ২৫ শে আশ্বিন শারদীয় সংখ্যা। 
সম্পাদককীয় তে কিছু লিখতে হয়, আমাদের পত্রিকার লোগো বানিয়ে দিয়েছিলেন কবি বিভাবসু। পত্রিকার কভারচিত্র বানিয়ে দিয়েছে আমাদের সকলের প্রিয়ভাই অর্পণ। আর শারদীয় সংখ্যার প্রচ্ছদ বানিয়ে দিলেন শ্রীমহাদেব। আমি এঁদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।এনাদের শিল্পমনস্কতা আরো বিস্তারিত হোক এই গুরু বন্দনা করি।

সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।নিরাপদ দূরত্ব থেকে প্রতিমা দর্শন করুন।

হর পাপং হর ক্লেশং হর শোকং হরাসুখম্ | 
হর রোগং হর ক্ষোভং হর মারীং হরপ্রিয়ে ||

এষ সচন্দন-পুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলিঃ নমঃ দক্ষযঞ্জ 
বিনাশিন্যে মহাঘোরায়ৈ যোগিনী কোটিপরিবৃতায়ৈ 
ভদ্রকাল্যৈ ভগবত্যৈ দুর্গায়ৈ নমঃ || 


শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় প্রভাত চৌধুরী

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা||  প্রভাত চৌধুরীর গুচ্ছ কবিতা


উইকলি রিপোর্ট

১ ॥

আমরা যারা সোমবারকে Monday  বলি
তাদের কোনো জলকাদার শৈশব নেই
লাল সুতোয় ফুটৌ এক পয়সার ঘুনসি পরা নেই
ভাঙা বিস্কুট চায়ে ডুবিয়ে খাওয়ার দিনের শুরু নেই
আমরা শৈশব থেকেই গৃহবন্দি
আমাদের বন্দিজীবনে হ্যারি পটারের ভূমিকা
অনেক বেশি , আমরা যারা সোমবারকে Monday বলি , 
তাদের না পাওয়ার কিছু নেই
তারা ' সব পেয়েছিস দেশ '-এর চরিত্র

08 .09 . 2021

২ ॥

আমরা যারা মঙ্গলবারকে Tuesday বলি
তাদের কোনো চিঁড়ে-মুড়ির ব্রেকফাস্ট নেই
তাদের আছে স্যান্ডোউইচ আর কমপ্লান 
আমরা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠি
আমাদের বেড়ে ওঠার মধ্যে বার্থডে কেকের 
পাশে রঙিন বেলুন ওড়ে
কোনো গ্রামীণ মুরগি আমাদের ঘুম ভাঙায় না
আমাদের জাগিয়ে দ্যায়
ঘড়ির মধ্যে বসে থাকা মোরগটি

O8 . 09 . 2021

৩ ॥

আমরা যারা বুধবারকে Wednesday বলি
তাদের কোনো রং-বাক্স থাকে না
থাকে কালারবক্স , যাতে রঙের সংখ্যা
বারোতেই সীমাবদ্ধ নয় , ষাটে পৌঁছে যায়
আমরা ষাট দিয়েই পূর্ণ করি আমাদের রং-যাত্রা
এই জন্যই কি একটু বেশি রঙিন লাগে 
আমাদের কিশোরবেলাকে

08 . 09. 2021

৪ ॥

আমরা যারা বৃহস্পতিবারকে Thursday বলি
তাদের রূপকথার জগতে ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমি নেই
আছে রং-বেরঙেরফেয়ারি টেলস
 তারা Rapunzel Goldilocks -এর সঙ্গে খেলা করে
তাদের আলিদিনের আশ্চর্য প্রদীপ নেই
তাদের আছে  Aladin Magic Lamp
  টেমস নদীর জল কিংবা আল্পস পর্বতের তুষারপাত
লোমওয়ালা ভাল্লুকের বেশি দাপট
তাদের রূপকথায় রাক্ষস খোক্ষস নেই
তারা অর্থাৎ আমরা ছোটোবেলা থেকেই
ভয় থেকে নিরাপদ দূরত্বে বসবাস করতে অভ্যস্ত

08 . 09 . 2021.

৫ ॥

আমরা যারা শুক্রবারকে  Friday বলি
তাদের গ্রহণের দিনে 
তুলসীপাতার কোনো ভূমিকা থাকে না
থাকে গ্রহণ দ্যাখার চশমা
বক্সীগঞ্জে পদ্মাপাড়ে যে প্রতি শুক্রবার হাট বসে
সে খবর তাদের চোখো পড়ে না 
সে ফ্রাইডে আইল্যান্ডের দিকে হেঁটে যায়

 09 .09 .2021 ♢ 19 : 19

৬ ॥

আমরা যারা শনিবারকে  Saturday বলি
তাদের নিভন্ত আঁচে মাটির পুতুল বানানো হয় না
তারা সফ্ টটয় নিয়ে ঘুমোতে যায়
তাদের ঘুম ও জাগরণের মধ্যে
কয়েকটা ফ্লেমিঙ্গ ওড়াওড়ি করে
তারা জোড়া শালিক দ্যাখার মজা উপভোগ
                       করতে জানে না

09 . 09 . 2021 ♢ 19 :32


৭ ॥

আমরা যারা রবিবারকে  Sunday বলি
তারা ব্রেইল- বাইবেলের কথা জানি
মথি লিখিত সুসমাচার জানি
তাদের পরিচিত এক জন্মান্ধ বেহালাবদক
চার্চের বাইরে দাঁড়িয়ে বেহালা বাজান
তাঁর সেই বেহালাবাদন থেকে তৈরি হয়
এক মনোরম হ্রদ
সেই হ্রদে ব্রাউন চোখের যে Thrushরা বসবাস করে
তাদের ডাহুক ভাবলে ভুল হবে
 
আমরা যারা রবিবারকে Sunday বলি
তারা সকাল থেকেই গির্জায় 
যাবার কথা ভাবি , ঠিক এমনটা নয়

10 . 09 . 2021♢ 08 : 08 


                                              বিশেষ ঋণ স্বীকার : দেবায়ন চৌধুরী , নীলাব্জ চক্রবর্তী


শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় মুরারি সিংহ

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা||  কবিতায় মুরারি সিংহ


স্তন্যপায়ী বনজ্যোৎস্না

হিরো হিরো গেঞ্জি পরে ও-পাড়ার গোবর্ধন 
              একটা-দুটো নয়, একেবারে ট্রিপিল এমএ
সে লাল রং, সবুজ রং এবং হলুদ রং এ এমএ করেছে 
           এখনো নীল আর সাদা রঙে মাস্টার্স করাটা 
                            বাকি রয়ে গেছে 
           ও বলেছে, সেগুলোও করে নেবে 

কিন্ত গোবর্ধন এতদিন যেটা জানায়নি 
তা হল, এতগুলো মাস্টার্স নিয়ে ও কী করবে 

একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম সেকথা, সে হাসতে হাসতে বলল
সে নাহয় বলছি, কিন্তু তুই কী বুঝবি্‌, তবে শোন,  
মহাশূন্যের গায়ে ঘুঁটে দিতে দিতে যখন 
লাল-রঙের মেজো-বঊয়ের সঙ্গে 
         মিড-ডে মিলেরর ছোলায় ষষ্ঠীপুজো সেরে আসা
                       হলুদ রঙের ছোটো গিন্নির 
                         ধূম ঝগড়া লেগে যায়
তখন সেতারের খিদে নিয়ে গিটার বাজাতে বাজাতে 
সবুজ রং থেকে এক সদ্যযৌবনা বেরিয়ে এসে
বামুনপাড়ার মৌমিতার চারপাশে ঝমঝম বাজতে শুরু করে 

        আর কী বলব ভাই, সেই বাজনার তালে  
        আমার নতুন কবিতার পাণ্ডুলিপিটাও
                      থুতনির নীচে মাস্ক ঝুলিয়ে 
‘কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা’ বলে 
                           নাচতে নাচতে
            সত্যি সত্যি উধাও হয়ে যায় 
               বর্বর-জন্মের স্তন্যপায়ী বনজ্যোৎস্নায়

তখন আমিও একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচি 
                জেল-পেন উঁচিয়ে টেনে নিই 
                                   আরো একটা সাদাপাতা



শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় নিখিলকুমার সরকার

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় নিখিলকুমার সরকার


সম্পর্ক-ছায়া...

বিলক্ষণ জানি ---
এ তোমার ফিরে আসা নয়, নিছকই 
পরিত্যক্ত আত্ম-অববাহিকায় প্রমোদ-ভ্রমণ... তবু 

এসেছ যদি, একটু বসো...  তোমার কবিতা
অন্তহীন পয়ারের পথে অনির্ণেয় বাঁক নিয়ে
সেই কবেই অদৃশ্য হয়ে গেছে, আমাকে উজাড় করে 
সব শব্দ নিয়ে গেছে বহমান মোহিনী আড়ালে... 
এখন তো আমি শব্দহীন মহাশূন্য, বিকেলের 
নিরেট পাথর এক --- সর্বাঙ্গে আমার 
মৃত শ্যাওলার দাগ, স্রোতশব-গন্ধ... এমত আমাকে 
যদি সহ্য করতে চাও, তবেই বসো 

শরীরী চিহ্নে আমরা নয় 
পাশাপাশি আমাদের এই অনিত্য সম্পর্ক-ছায়া 
ছুঁয়ে থাক, বাংলাকবিতার নিত্য-বৈভব... কতক্ষণই বা 
ওই তো --- বক উড়ে যাওয়া অনতিদূরের সূর্যাস্ততক 


শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় যশোধরা রায়চৌধুরী

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় যশোধরা রায়চৌধুরী


রীতি

এরকম রীতি আছে আমাদের, যদি কেউ
আমাদের দলে না ভেড়ে, সে, 
জাতে পাতে মারা যাবে, ভাতে হাতে কেটে দেব তাকে

এরকম রীতি আছে আমাদের, যদি কেউ
আমাদের হেঁহেঁ করে হেসে না নাড়ায় মাথা, তবে
খুলে যাবে গাঁট আর ধীরে ধীরে খসে যাবে সে সবার
প্রীতিপথ থেকে

এরকম রীতি আছে আমাদের, যদি কেউ
সিঁড়ি দেখে না চড়ে বা পদমূল দেখে না তেলের বাটি আনে
যদি কেউ ভাললাগা , খোলামন, সত্যকথা এইসবে মতি রাখে খুব

তাকে আমরা ধোপা ও নাপিত কেড়ে, একা করে দিই

শুধু সেই লোকটির চোখ দেখলে ভয় করে খুব...



শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় দিশারী মুখোপাধ্যায়

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় দিশারী মুখোপাধ্যায় 



শকুন্ত শহরে আমরা 

১)

বিশ থেকে পঁচিশ কিলোমিটার, আনুমানিক, দূরে 
যন্ত্রণার উৎপত্তিস্থল।বেলাভূমিতে ছড়িয়ে পড়েছে 
নষ্ট শরীরের পবিত্র রঙ।অম্লান অনুভব সেতারের 

ভালোবাসার রিখটারস্কেল ৭.৫
পরিমাণটা তেমন পর্যাপ্ত নয় 
লয়, বিলয় কিছুই সম্ভব নয় এতে 
আরও দশ মাত্রা বাড়ানো দরকার 

যে বাতাসে ডানা সঞ্চালিত হয়েছিল, সে এখনো 
কম্পনকে ধরে রেখেছে।কম্পন এমন এক ঘটনা যা 
স্থিরতাকেও অস্থির করে তোলে।চরাচর এসব খবর ছাপে  

২)

কম্পন এমন এক ঘটনা যা স্থিরত্বকেও অস্থির 
করে তোলে।চরাচর এসব খবর ছাপে সাদা কালিতে 
কেবল অক্ষর দিয়ে সব শব্দ,বাক্য লেখা যায় না 

উপন্যাসটির শব্দ সংখ্যা কয়েক লক্ষ 
বিশেষ স্থানে কালে তা পরিবর্তন যোগ্য 
চরিত্রদের প্রকৃত নাম ও ঠিকানা লিখে 
ঔপন্যাসিক তাঁর বিপদ বাড়াবেন কেন 

গুগল হারিয়ে ফেলা নদীর চরে এক দম্পতির প্রেম 
প্রাসঙ্গিকতার মধ্যে নেই।বিক্রির বর্গফল যা দাবি করে 
তাকে স্বাগত জানায় ক্রয়ের বর্গফল।নিয়ম এমনই 

শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় তৈমুর খান

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় তৈমুর খান 


দিগ্বিজয়ী 


নিজেকে নৈঃশব্দের কাছে রাখি 

তবুও প্রপাত আসে উন্মাদ শিখরে 

তবুও প্রলাপ বয়ে যায় জনান্তিকে 


হিংস্র সাম্রাজ্য জুড়ে নিঃস্ব জাগরণ 

কোথাও ঘুমের দরোজা নেই 

তবু সারারাত নিঃসঙ্গ যাতায়াত করে 


বয়স কেঁপে যায় , কোন্ অজাগর 

জ্বেলে রাখে দুর্ভর সান্ধ্যজীবন  ? 

চিনি নাকো তাকে 


অথচ দুর্যোগ আসে 

অদ্ভুত বিশ্বাসের সিঁড়ি দিয়ে 

উপলব্ধির ঈশ্বর নামেন 


অশ্রু মুছে নির্বিবাদে 

দিগ্বিজয়ী বলে নিজেকে ঘোষণা করি 

আর বাগানে ফোটাই যত অলীক কুসুম 


শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় সুবীর সরকার

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় সুবীর সরকার 


গুগল ম্যাপ

৩২ লাইন লিখবার পর চশমা ভেঙে গেল
নদী এখন নালার মত
নদীতে গাছপালার ছায়া
হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে এয়ারগান
৩২ লাইন লিখবার পর সম্বল বলতে
                                       গুগল ম্যাপ



সম্পর্ক

ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের নাম তাঁবু দিলাম
পানপাত্র কেটে লিখলাম মাটির কলস
ব্যাক্তিগত পরিসরে এখন খাটো হয়ে আসা
                                          মোমবাতি
পাখির ডাকে শুশ্রুষা থাকে।
আর ওষুধ নিরিবিলি করে
                                  দে য়।
সারা গায়ে ঘামাচি মেখে দূরের পাহাড়ে বেড়াতে
                                               যাবো
সেই কবে মরে যাওয়া দিদিকে খুঁজবো।
গুহার মধ্যে লুডু খেলছে বাচ্চা লামা
বৃষ্টি আসার আগে এখানে বেলুন ওড়ে
সারারাত বন্দুকযুদ্ধ শেষে সৈনিকের কান্নার
                                          শব্দ
 সম্পর্ক ট্রাপিজের খেলা।
 কলাবাগানে ঘুরে মরা একাকী
                                    বেড়াল।

শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় রবীন বসু

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় রবীন বসু


অমেয় বিষাদ ও আত্মরতি




বিষাদ নিমগ্ন বর্ষা দাঁড়িয়েছে ঠায়

ওই দেখো চরাচর আবছা লৌকিক

জলধারা মাখে বৃক্ষ সবুজ সংকেত


শিকড়ে কিসের টান? সাবলীল প্রাণ

প্রাচুর্যে ভরেছে দেখি আনন্দিত মন

তারও আছে প্রত্যাশা, গুপ্ত অভিপ্রেত।



প্রেম যেন হেঁটে আসে আকুলিত অন্ধ

বৃষ্টির শরীর ছুঁয়ে হাতড়ানো স্পর্শ

শরীরে দহন চিহ্ন পরাজিত ক্ষত


অভিমান নিয়ে আসে আক্ষরিক কষ্ট

শূন্য সড়ক পেতেছে ব্যাকুল ভ্রমণ

হৃদয় চেয়েছে তবু অন্য কারো মত।



অচেনা সুড়ঙ্গ ধরে গোপন যাওয়া

গভীরের জলস্তর আতপ্ত অধির

তলদেশ থেকে উঠে আসছে অমূল্য


নির্নিমেষে দেখে যাই অদ্ভুত আবহ

পরত সজ্জিত এই আকীর্ণ আকর

কী যেন সে লিখে রাখে আপন বাহুল্য।




শারদীয় সংখ্যা ~অণুগল্পে ভজন দত্ত

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| অণুগল্পে ভজন দত্ত 


সায়কের ছুটে চলা

মন্দ বলে বলুক লোকে,
সত্যি বল, বুক ঠুকে----বলে একটা বিড়ি ধরিয়ে জগাদা খানিকটা সময় নিয়ে বললো, তারপর পোঙা মারা গেলে দেখবি, কেউ কুত্থাও নাই!
সব পেঁদা! সবাই শালা মুখেই জ্ঞান মারে!
দেখলি না,পঞ্চাদাকে? কত সততা!
ই দেশটায় বাল সবই বিক্রি হয়!
দামটা খালি একেকজনের একরকম।
পঞ্চাদা পঞ্চাশে বিক্রি হলো না কিন্তু যেই দাম বাড়লো,তেমনি পাঁচশোতে বিক্রি হয়ে গেল!
শালা ড্যাসের আদর্শ!
সায়ক হাঁ করে জগাদার নাকমুখ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখতে দেখতে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে একমনে ঘাস চিবোতে চিবোতে জগাদার কথা শুনছিলো।

বিড়িতে সুখটান দিয়ে মাটিতে পোড়াবিড়ি ঠেসে নিভিয়ে ,উঠে দাঁড়িয়ে  জগাদা কয়েকবার তার আজানুলম্বিত দাড়িতে হাত বুলিয়ে, আঙুল চালিয়ে দীর্ঘ কেশরাশিকে শাসনে এনে  একটা গাছকে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকলো, তারপর গাছের ভেতর ঢুকে গেল।

কেসটা কীহলো, কিছু বোঝার আগেই সায়ক সেই যে পড়িমরি করে ছুট লাগালো,সেই ছুট, সে এখনো ছুটে চলেছে...

শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় ভাস্বতী গোস্বামী

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় ভাস্বতী গোস্বামী 


মির্জার মার্জিনকাব্য ৮

একুশ পাতার পর বৃষ্টি থেমে গ্যালো
এদিকে পকেট ভরে উঠছে ধানে
অক্ষরের মাথায় মাথায় কার্ণিশ-পোকারা
খালের ওপর চু-কিতকিত জলেদের সাজগোজ চলে যায়
তাতে বিকেল পড়ে একফোঁটা 
সেইসব ব্রিজেরা কোথাও নেই
অজস্র টা টা নিয়ে শূন্য হচ্ছে গানের ম্যানগ্রোভ 
কে, কা'র ঘর দরজা?
ফকিরের কাঁধে আকাশ
মিনার লাগছে চাঁদে
তোমার পকেটভর্তি বৃষ্টি নিয়ে
অক্ষররা অধরাই থেকে গ্যালো


শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় বিভাবসু

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় বিভাবসু 


শূন্যগর্ভপ্রেমের দিকে


একটা শূন্য থেকে আরেকটা শূন্যের দিকে হেঁটে যাচ্ছে কিছু শূন্যগর্ভ কথা 
কথার গভীরে জন্ম পাচ্ছে তেজস্ক্রিয় অনুকম্পা 

টানটান রহস্যের মতো মেরুদণ্ড খাঁড়া করে আছে মেয়েটি 
ভালোবাসা এমন বিধ্বংসী হবে কে জানতো! 
ছেলেটি মুখোশ খুলে রাখতেই ধূপগন্ধী হয়ে উঠলো
টগবগে ঘোড়ার মতো পেশীবহুল 

শূন্যতার মধ্যে ক্রমাগত শূন্যতার বিস্তার ঢুকে পড়ে 
বাড়িয়ে তোলে হইহট্টগোল, অস্থিরতা
তারপর অনিবার্য বিস্ফোরণ 
তারপরও কি শান্তিকল্যাণ আসে?

ভালোবেসে যে একা হতে পারেনি 
সে কী বুঝবে শূন্যতার মাধুর্য? 

প্রতিটি প্রেমের গভীরে বিস্ফোরণ থাকে
প্রতিটি প্রেমের গভীরে শূন্যতার বুদবুদ থাকে
বুদবুদগুলো সারাদিন বিপরীত  সাহচর্যের দিকে উড়ে যায়...


শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় মাসুদুল হক

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় মাসুদুল হক

জ্যোতিষী পাখি

বনের টিয়া  মানুষের আবেগের কাছে 
কতোটা পরাস্ত হলে 
একটা গোটা জন্ম জ্যোতিষীর মতো বসে থাকে খাঁচায়! 

হয়তো একজন্মে ঋষি হতে চেয়ে 
শূন্যে ভাসিয়ে নিয়েছিল আকাশ

আকাশ তাই ক্ষোভে
 ওকে নির্বাসন দিয়েছে মানুষের অরণ্যে 

এখানে জীবন আছে ;নিরাপত্তা নেই জেনে
সকাল সন্ধ্যা কাটে ধ্যানে
গভীর রাতে মুক্তির স্বপ্ন জেগে উঠলে মনে 
বিস্ময়ে আপন ডানার দিকে চেয়ে দেখে 
সন্ন্যাসী পাথর-ছায়া জেকে বসেছে অনড় পায়ে

দৃশ্যত মানুষের ভাষায় দু'চার কথা বলে 
জ্যোতিষ-পায়ে হেঁটে 
ঠোঁটে তুলে আনে মানুষের ভাগ্যলিপি 

মানুষ‌ও তাদের ভাগ্য জেনে 
পরম বিস্ময়ে জ্যোতিষী টিয়ার দিকে 
বস্তুবাদী চোখে তাকিয়ে ভাবে
প্রাণ আছে খাঁচায় তবু পাখিটি ছবির মতো!


শারদীয় সংখ্যা ~কবিতায় স্বপন নাগ

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শারদীয় সংখ্যা|| কবিতায় স্বপন নাগ


অকারণ কবিতা

তেমন কোনো কারণ ছিল না

কারণ, কোনো কারণ ছিল না

অথচ তার
দুটো হাতেই দুরন্ত বুলবুলি

ছড়িয়ে যেতে ভরিয়ে দিতে
সত্যিকারের বারণ ছিল না

কী হবে আর কী হবে না
তা-ও কি নির্ধারণ ছিল না

সেভাবে ঠিক পরম্পরায়
স্পষ্ট কোনো কারণ ছিল না