জানালার সাত রঙ
১/
যেভাবে নদী লিখে রাখে জলের নাম, ইতিবৃত্ত
নিজের ভেতর থেকে নিজেকে ছাপিয়ে ওঠে জল
ফুলে ফুলে উঠে তার গর্ভ নতুনের সৃজনে
আকুলি বিকুলি টানের কাছে একান্ত নতজানু
স্বরবৃত্তের চলন কখনো রুদ্ধ,কখনো মুক্ত
খানিক স্তব্ধ শব্দবন্ধ ধরে রাখে নিস্তব্ধতাকে
অথবা ধুয়ে মুছে দিয়েছে বুঝি নিজে নিজেকেই
খুব সহজেই কি চেনা যায় তাকে?
জলে ডুব দিলে নদীর অস্তিত্ব নেই
পাড়ে বসে থাকলে জল ছুঁতে পারি কই।
২/
ঘুম ভেঙে গেলেই স্বপ্ন চুরচুর হয়ে যায়
ক্রমাগত বিদ্ধ হতে থাকি
ছেঁড়া ছেঁড়া দৃশ্য, যোগফল মেলেনা
এলোমেলো চোখ মেলে তাকিয়ে থাকি দূরের দিকে
শূন্যে ধরতে
স্বপ্নের মধ্যে যে বিশ্বাস থাকে ছুঁতে চাই তাকে
বুঝিনা, পেয়ে হারাবার দুঃখ বেশি, নাকি না পাবার
ঠিক তেমন একটি ঘুমের অপেক্ষায়,
আর ফিরে আসেনা
৩/
বন্ধ ঘরে জমাট অন্ধকার
কিছুই নেই শুধু শূন্যতাটুকু ছাড়া, কি দিই বলতো !
হতাশার হুতাশন গ্রাস করে নেবে , দূরে থাকো
একই গোলের মধ্যে আটকে আছি
অন্ধকারে চোখ সয়ে গেছে, এই টুকুই তো আমার
এ অন্ধকার প্রতিবিম্ব ধরে না জানো?
ফিরিয়ে দেবে বার বার, তবু যদি আসো
আমিও তো সূর্য লোভী।
৪/
রাত্রির নক্ষত্র চোখে সম্মোহনী কাজল
ঘন কালো এলোকেশে বন্দি
সে বিলিয়ে দেয় নিজেকে, নাকি আমি?
তলিয়ে যাই ঘোর আশ্লেষে
পরিয়ে দেয় বিস্ময়ের মালা
শরীরে পাখি জেগে ওঠে
পাখায় লাগে সাত সমুদ্র তের নদীর প্রেমিকার ঘ্রাণ
রাত্রির রহস্য এক অথৈ প্রেমের সমুদ্র
হাবুডুবু খাই সাঁতার কাটি, অবশেষে ক্লান্ত
ঘুম ভেঙে যায় ভোরের পাখির ডাকে।।
৫/
কালো রাত্রির সাথে মিশে আছে বাতাস
অন্ধকারে নত হয়ে আছে গাছ
সূর্যের প্রথম আভায় খুঁজছি পাপঘ্ন জল।
৬/
সমুদ্রের নীল ঢেউএর উপরে সাদা ফেনা
ফেনার উপরে খেলা করে সোনালী মাছ
সোনার মাছ ধরবো বলে সাঁতার কাটছি অনন্ত ।
সমুদ্রচরের গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে সুন্দর লাল কাঁকড়া
সব পথ হারিয়ে ফেললে জন্ম টান দেয় আবার।
৮/
কুয়াশার মধ্যে থেকে জাগে নক্ষত্ররা
বেজে ওঠে আলোকিত ঘুঙুরের বোল
হেমন্তের বিকেলের পরে সন্ধ্যা শেষে
কি সংকেত দিয়ে যায় রহস্যতে ওরা
কুয়াশার আস্তরণে বুঝি এসেছিলে
সেই কথা বলে সদ্য ফোটা রূপকথা
কুয়াশার মতো ভেঙে যায় নিঃসঙ্গতা
ব্রহ্মচর্য অবসান হলো এই বেলা
মৃত্যু মতো নেমে এলে দুচোখের কোলে
এইবার বুঝি মুক্তি হলো শীত থেকে।।
No comments:
Post a Comment