|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || শকুন্তলা সান্যাল
গঙ্গা বহতা
কিছু কি সংকেত রেখে যায় নাভির পুড়ে না যাওয়া টুকরো?
হয়তো নিশ্চুপে বলে, দেখে দেখে তুমি শিখে নিও
প্রলয় শেষের ভালোবাসা..,
যা প্রবাহিত গঙ্গার মতোই প্রিয়।
কিছু কি সংকেত রেখে যায় সবুজ বৃত্ত?
যা নিশ্চুপে বলে, দেখে দেখে তুমি শিখে নিও
গাছেরাও ছোটো বড়ো, কেউ বিখ্যাত কেউ অবিখ্যাত।
শিখে নিও ক্লোরোফিল চারুকলা..,
যার ছোঁয়ায় গঙ্গার শান্তি আছে।
কিছু কি সংকেত রেখে যায় ঋতু পরিবৃত আকাশ?
যা নিশ্চুপে বলে যায় দেখ,কখনও ঝকঝকে বা মেঘলা বা
কিছু কিছু মেঘ আছে হয়তো ,
বৃষ্টিদিনে হয়তো তাকালেই না , কিছু পর দেখলে
জ্যোৎস্নায় ভেসেযাচ্ছে চরাচর,জীবনও যেমন!
আকাশ দেখে অনুভব কর যেন বহতা গঙ্গা...
আমাদের এই নির্বাণমুখী প্রবাহমুখী অথবা বিপরীতমুখী চলাচল,
যার সবটুকুই ভালোবাসার দরুণ অথবা নয়,
অথচ যে সূক্ষ্ম দেহটির নাম 'শান্তিকামী'
যা ছিলো আছে থাকবে ...!
এঁকে গেছে গঙ্গা
সেদিন গভীর রাতে ফিরে,বারবার ফিরে যাচ্ছিলাম
একটা শব্দহীন দাউদাউ বৃষ্টির কাছে।
অস্তিত্ব শুধু আলোয় এমন পোকারা
বোকা ঝড়ের সাথে ঘুরছিলো,হয়তো উড়ছিল না,
হাওয়ারা চলছিলো বলে গা ভাসিয়ে রেখেছিল।
আমার দুঃখ বোঝার অনুভূতিটা ফিনফিনে টিনের পাতের মতো,
কখন যেন ক্ষয়ে ক্ষয়ে ধার মুড়ে বসেছিল ।
তেমনি চুপ করে থাকতে থাকতে অসাবধানে
পাতটা মধ্য রাতে ঝনঝন ঝনাৎ শব্দে মেঝেতে পড়ে গেল।
আমি তফাতে থেকেই অমন আচমকা আবেগে খিল তুললাম।
আমি তো তফাৎ এ থেকেই..
মা'কে বিদায় দিয়েছিলাম!
থমকে থাকা পাখি
আছড়ে ফেলি আমার আমিকে,
ওকে স্তাবক বলি।
পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে চিপ্টে দি ওর কান্না।
আবার ভাত বেড়ে দি,অসহায় বলে কাছে ডাকি ।
দৃষ্টি নন্দিত নৌকার মাঝি মনে হয় নিজেকে।
আবার স্তাবকের চোখে গঙ্গার রূপ দেখতে থাকি।
আমি কি থমকে থাকা পাখি?
গঙ্গা গঙ্গা বোধে
আমি পরম হাঁস হতে চেয়ে হয়ে আছি ব্যাঙাচী
বুকে আমার গঙ্গা প্রবাহ,
চোখে ঘোরে প্লাসটিক জীর্ণ ক্লান্তি ।
আমি পরম হাঁস হতে চেয়ে
হয়ে আছি প্যাঁক প্যাঁক বাগীশ ।আমি আছি,আমি আছি বলি,
তবু কচুরীপানা বলে আমি নেই আমি নেই ।
এ শুধু আমার নৈঃশব্দের ঝংকার,শুনতে পায়না কোলাহল ।
কেউ নেই কেউ নেই আমিও না!
বহতা গঙ্গার বুকে ভাসছে, ভাসছে যাতা?
শান্তি কই শান্তি কই ?গঙ্গা তো বহতা..।
গঙ্গার বুকে দুঃখ পেতে নেই
তখন কি আর কাঁদতে আছে
গঙ্গার বুকে যখন ভাসছে প্রমোদতরী?
পুতুল খেলা কিশোরবেলা,
বাদ কি গেছে সবি?
ভেবে তো নিতে পার, তর্কে হয়েছ বিজয়ী!
রাগ টাগ অন্তর জ্বালা নিভিয়েছে বান্ধবী ।
ভেবে তো নিতে পার,এক একটা কালো রাত্তির
ছোট হতে হতে ছোটো কালো তিল
বরাত পেয়ে এসে বসে আছে ঠোঁটে,
আর ঘুরে যাচ্ছে তিলোত্তমায় সিনেম্যাটিক রিল..
অনুমান থেকে নেমে আসে প্রশ্নপত্র জেন,
হয়তো বিতর্ক আবার উস্কে দেবে মাথা!
দিঘি বাতাস পেলে মাখোমাখো হবে
এতো জানা কথা।
এমন কিছু ভাবনা সেতো একি মাথায় গড়া!
গাছ টাছ তুমি কি হতে চাও !
আনমনা শৃঙ্খল মেঘবতীকে পরাও?
যদি বৃষ্টি বৃষ্টি নিম্নচাপ তোমায় চেপে ধরে,
যদি বান্ধবী কাঁচের বাংলোয় 'বৃষ্টি পোহাই আয়'বলে,
তখন কি আর কাঁদতে আছে?
যখন গঙ্গার বুকে ভাসছে প্রমোদ তরী!
পুতুল খেলা কিশোরবেলা
বাদ কি গেছে সবি?
No comments:
Post a Comment