|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা | | ২-য় বর্ষ ||
পার্থ সারথি চক্রবর্তী
পার্থ সারথি চক্রবর্তী
আনন্দবৃক্ষ
আমার আনন্দের একটা বটগাছ ছিল
বা এখনো আছে বলা যায়
যখন কষ্ট পাই,আচঁড় কাটে কোন
অচেনা অজানা আঘাত, কিংবা চেনা
ছুটে যাই ঐ গাছটির কাছে
দু'দন্ড বসি সটান মাটিতে
গাছ থেকে টুপ করে নেমে আসে একটা পাতা
আমার মাথায়, গায়ে বা কোলের কাছে
আমি মোক্ষলাভ করি,হয়ে যাই চিরভিক্ষুক
ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বেড়োই পৃথিবীর দুয়ারে
জ্যামিতি
আশেপাশের মানুষগুলোকে দেখি
একেকজন একেক জ্যামিতিক আকারের
মেপে উঠতে খুব বেগ পেতে হয়
স্কেল কম্পাস কোন কাজেই আসেনা
যদি ভাবি গোলাকার, হয়ে যায় চারকোণা
আর যদি ভাবি চারকোণা, হয় ত্রিভূজাকার
বাধ্য হয়ে মনের ভিতরে ডুব দিই
হাতড়ে বেড়াই কেন্দ্রবিন্দু
অবগাহন করি অনুভবের সাগরে।
পথ
রোদের ভিতরে হেঁটে যাই-
অলিগলি থেকে রাজপথ ।
কক্ষপথে আবর্তিত হতে গিয়ে-
দিকভ্রষ্ট তারা পথ হাওড়ায় ।
নিস্পত্র গাছ ও বসন্তের শেষে-
আবার জেগে ওঠে,
নতুন আশায় ।
নব উদ্যমে ।
বেঁচে থাকা তবু কঠিন,
নির্বান্ধব ।
হারিয়ে যাওয়া বন্ধু স্বজন,
খুঁজে পাওয়ার আকুল চেষ্টায় ।
গলি থেকে এঁদো রাস্তা হয়ে,
প্রশস্ত রাজপথ ।
জীবনের রবি
আঁধারের পটে আঁকা শুভ্র সতেজ এক ছবি
নিরামিষ গল্পে জীবনের ব্যান্জন সাজায় কবি
ছিদ্র খাতায় কিছু আঁকিবুকি লেখা
ফুটে ওঠে রূপোলি আলোর রেখা
আকাশ বদলে জাগ্রত এক নতুন রবি।
ভালোবাসার মোড়কে ঢাকা যত সংস্কার
ভুলে যাই জীবনটাই সেরা অহংকার
দিন রাত মিলে সময়ের ঘড়িটা
একের উর্ধে রাখি মানবতার রাশ
উথ্বান কি পতনে জীবনই সময়ের উপহার ।
ডায়েরির ছেঁড়া পাতা
কবিতা লিখতে গিয়ে হাত কেঁপে যাচ্ছে । একটা খরখরে কাঠের উপর বারবার ঝর্না কলমটা ঘসছি।
সুখ খুঁজতে গিয়ে জীবনের ভাঁজ খুলে চলেছি কতকাল। ন্যাপথলিনের পুরনো গন্ধ ছাড়া আর কিছুই পাইনি ।
নিকোটিনের ধোঁয়া অনেক উড়েছে বাতাসে । মদিরার নেশা আজ অবধি পারেনি মাতাল করতে ।
এপিটাফে লেখা স্মৃতি মুছে যাচ্ছে ধীরে ধীরে, চুইয়ে পড়া ঘামে। হাতরানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছি মুখ গুঁজে ।
বারবার কক্ষচ্যুত হয়ে পড়ছি । তবু আবার সেই কক্ষেই ফিরে আসার চেষ্টা করছি ভুল পথে।
একটাই দেওয়াল লিখন । লিখতে গেলে হাঁটতে হবে রুক্ষ্ম পথে। রক্ত ও ঝরবে।
No comments:
Post a Comment