Saturday 24 July 2021

আমন্ত্রিত সংখ্যা~সুজিত রেজ

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা || আমন্ত্রিত সংখ্যা ||


যুবশ্রী

আমি সেই যুবক ---যার শক্তি আসুরিক।
পাথর ছেনা কাঠামোয় ডালিম শোভা।
কটিবন্ধে সিংহের ঋজুতা ও আপেক্ষিক নমনীয়তা।
তার লালিমায় বিচ্ছুরিত হয় 
                      ঘষা সূর্যের জ্যোতির্প্রবাহ।
ঘন ঘোর বরিষায় 
বজ্রবিদ্যুতের সমান্তরাল পদক্ষেপে,
যে পৌঁছে যেতে পারে কাঙ্ক্ষিত পাদপীঠে।
তবে মৃত্যুর শমন নিয়ে নয়  
               মৃত্তিকা লালিত প্রাণবায়ু সঞ্চারে।


আমিই সেই যুবক ---যে তর্জনী তুলে বলতে পারে 
এই দেশ কোনও রাজার নয়।
এই মাটি কোনও রানির মৌরসিপাট্টা নয়।
এই দেশ---এই মাটি শত শত শিক্ষিত সন্তানের।
এই দেশ--- এই মাটি কর্মঠ আদিম তান্ত্রিক কৌম মনের।
এই দেশ---এই পোড়ো মাটি শিল্পিত প্রাণের।
যার রূপচ্ছায়া অজন্তার সৌকর্ষে,
খাজুরাহোর হেমাঙ্গিনী যৌনতায়,
যার ধূপচ্ছায়া ভীমবেটকার চৌখুপিতে,
তাজমহলের শীর্ষ চতুর্গম্বুজে।

আমিই সেই যুবক --- যার প্রতিটি আঙুল 
                     উদ্দীপন ভাবে উথালপাতাল।
মৃত্তিকা কলসের স্পর্শের পর স্পর্শে  
                          কারুবাসনায় মোহমুদ্গর।
দিনান্তের অন্বেষণে সঞ্জীবনী উৎসব গানে নিবিড়।
উদগ্র  প্রতিকৃতির রংরূপরেখায়।


আমিই সেই যুবক---যাত্রার কনসার্ট শুনলে.
যার বুক মারীচের মতো 
                         দ্রুত ধাবিত হয় চণ্ডীতলায়।
তমালতলি আশ্রমে রুপোলি জ্যোৎস্নায় বাউলের সুরে,
অবিন্যস্ত সোনালি চুলের ওড়াওড়ি দেখার লোভে,
                                 হত্যে দিয়ে শুয়ে থাকে।
হরিনাম সংকীর্তনের অষ্টপ্রহরে,
কদম-কুন্দ মালায় শোভিত হয়ে উদ্বাহু নৃত্যে,
                     গোরাচাঁদতলার মেদিনী বিদরে।

আমিই সেই যুবক ---যার ঘৃণা নেই 
অসূয়া নেই, বিদ্বেষ নেই।
সংকোচ নেই স্পষ্ট অভিভাষণে,
                           নিরপেক্ষ মতামত গর্জনে।
লজ্জা নেই আত্মভুল স্বীকারে ও সংশোধনে।
উদ্বায়ী মানস নেই ,
মিশ্রিত সনাতনী ঐতিহ্যে শ্রদ্ধাশীল কিন্তু আনুগত্য নেই।


আমি সেই যুবক  
আমি যুবশ্রী  


চাঁদিপুর

মাঝেমাঝে সমুদ্রের কবিতা পড়ার মগ্ন উচ্চারণ শুনতে পাচ্ছি। মাঝেমাঝে উতল হাওয়ার নগ্ন ঝিনুক প্রেম উঁকি মেরে দেখে নিচ্ছি।

এই সেই চাঁদিপুর।যেখানে চাঁদ রুপোলি বালিতে লজ্জায় মুখ ঢেকে মুক্তোর অশ্রু বিসর্জন করে।

এখন আমি কী করি !

পান্থনিবাসের উটের মতো গলা উঁচিয়ে থাকা ব্যালকনি থেকে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে যাচ্ছি।যে-সিঁড়ি দিয়ে তুমি উপরে উঠেছিলে সংসারের সাত রিল সুতো গুটিয়ে। 

তাই তো তোমাকে পেলাম রাতের গন্ধে দিনের ছন্দে--- হে খুশিবালি।


শরীর 

আমি কি আগের মতো ছাই চাপা আপোড়া                                                                
বেগুন
হেনা ঘষে ঘষে চুল দুলালের তালমিছরি
কুয়াশার বলিরেখা কাঁকতালে গল-গলগণ্ডে
চামড়া পিতল লোল নিস্তরঙ্গ আবেগ
বৃদ্ধ হয়েছি দ্বিগুণ একক দশক ব্যবধানে
হেঁট হতে কষ্ট হয় ফ্রেম ভেঙে চুর
এই শুরু এই শেষ----- রক্ত অনাসক্ত মৃত গঙ্গা 
বুড়ো বটগাছের মতো সব পালাবদলের সাক্ষী
বিসর্গ বিযুক্ত দুঃখ টিকটিকির মতো নিরীহ




No comments:

Post a Comment