তুহিনের মাথায় কতগুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগলো। কেন এভাবে এসেছিল গরিমা? কেনই বা গায়ের থেকে হালকা আস্তরণটা এভাবে ফেলে দিতে দিতে গায়ে তুলে নিতে এতটা সময় নিল ? কোন মেয়ের পক্ষে এটা ঠিক স্বাভাবিক নয়। মেয়েরা গায়ের আচ্ছাদন সহজে খসে পড়তে দেয় না। দৈবাৎ খসে গেলেও তা সঙ্গে সঙ্গে তুলে নেয়। গরিমা তা করেনি। তবে কী সবটাই ইচ্ছাকৃত? ওর ঠোঁটের হাসিটা তার প্রমাণ।
পাশের ঘরে ঈশিতা ঘুমিয়ে। প্রতি রাতে ঘুমের ইঞ্জেকশন নিয়ে তবেই ওর ঘুম আসে। ক্যান্সার লাস্ট স্টেজ এ এসে পৌঁছেছে। ডাক্তার জবাব দিয়ে দিয়েছে। এখন শুধুমাত্র দিন গোনা। শেষের কটা দিন গরিমা তার দিদির কাছে ও পাশে থাকার ইচ্ছে নিয়েই এখানে এসে রয়েছে। তুহিনও ঈশিতার শারীরিক কষ্ট নিয়ে কম দুশ্চিন্তায় নেই।
তুহিন অকারণে ঘরের ভেতর কয়েক রাউন্ড ঘুরপাক খেল। আয়নায় ওর ছায়া পড়ল, কিন্তু সেদিকে এক প্রবল অস্বস্তির তাড়নায় তাকাতে পারল না। শুধুমাত্র বিবাহের কারণেই কী এক জায়গায় স্থির থাকতে হবে?
তারপর থেকে অপেক্ষা করছিল তুহিন। আজ গরিমাকে পাগলের মতো আদর করল। খোলা দরজার পর্দাটা দুলে উঠতেই তুহিন চমকে ওঠে। দুজনের কেউই ভাবেনি ঈশিতা বিছানা ছেড়ে উঠে আসতে পারে!
চমকে ওঠার মতো ভিড় যখন রাস্তা দখল করে নিয়েছে, তখন ঈশিতার মৃত্যু এত মানুষের মন খারাপের বিষয় হতে পারে বলে তুহিনের জানা ছিল না। হঠাৎই হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলল গরিমা।
অন্য সময় হলে বিব্রত বোধ করতো তুহিন। কিন্তু এই মুহূর্তে গরিমার জন্য কাম বা প্রেম--- কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই।
No comments:
Post a Comment