Tuesday, 31 December 2019

হরিৎ বন্দোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৪-তম প্রয়াস








পাখি রঙের আকাশ ---- ২      হরিৎ বন্দোপাধ্যায় 

নদী পার হয়ে রহমান চাচার হাতে পয়সা দিতে গিয়ে দেখি সকাল হচ্ছে। দু'হাত ভরা সূর্য। পয়সাটা কোথায় যেন ডুবে গেল। চাচা দাঁড় হাতে দিগন্তের দিকে তাকিয়ে। গায়ে লেগে জল মাটি ; ভেসে আসছে ভেজা মাটির গন্ধ -------- যেন একখণ্ড জন্মভূমি। মনে পড়ে, একসময় গাছের নিচে বসে স্থির হতাম। দুহাত বাড়িয়ে সে আলো দেখাত। জীবনের সমীকরণে অভ্যস্ত গাছ বলত, যখন তখন যেখান সেখান থেকে খুশি জীবন। আলো গড়িয়ে আসে হাতে। আলো গড়িয়ে গড়িয়ে পথে। রহমান চাচা বট গাছের মতো মেরুদন্ড সোজা করে নৌকার ওপর দাঁড় হাতে দাঁড়ায়। হাতের সূর্য এখন মাথায়।

গোলাম রসুল

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৪-তম প্রয়াস







দূর ক্লিনিক             গোলাম রসুল

কোনো দুঃখ নেই
স্প্রিং ঘুরিয়ে দম নিচ্ছে কবর
আর নক্ষত্রগুলোকে দেখে মনে হয় গড়ে উঠছে শহর

গোল হয়ে ঘুরছে আমার মাথা
প্রচণ্ড সূর্য
পুড়ছে ঈগল
আর আমি হাতে হাতে বিলি করছি দরজা

দূর ক্লিনিক
কাপড় উড়ছে সাদা
ওখানে দুজন প্রেমিক প্রেমিকা
অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সন্ধ্যা দেখছে
গাছে পাতা গজাচ্ছে অজস্র দেশ
ঢালু হয়ে গড়াচ্ছে সমুদ্র গর্তের মুখে
জলের আন্দোলন

গভীর আয়নার তলায় দাঁড়িয়ে রয়েছে জানি না কে
কোনো দুঃখ নেই

তনিমা হাজরা

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৪-তম প্রয়াস







ফেরা    তনিমা হাজরা 

দ্বারকেশ্বর নদীর বুকে বালি খুঁড়ছে 
একটা মেয়ে,
দুই বিনুনি, লেসের ফ্রকে মুখটা ভীষণ 
চেনা চেনা, 
এখন পাড়ায় করলে তালাশ, 
বলবে সবাই, কেউ চেনে না। 

ওই যে থোকা থোকা বোগেনভিলার রক্তরঙে ছেয়ে থাকা 
বাংলো বাড়ি, 
মাধবীলতার ঝাড় নেমেছে 
সদর দোরে আড়াআড়ি, 

কপিকলে বালতি গড়ায় সারা দুপুর কুঁয়োর বুকে, 
কুঁয়ো তখন একটাই তো এপাড়াতে, 
তাই জল নিয়ে যায় যত লোকে। 

তাদের বাড়ির মেয়েই তো সে, 
কোঁকড়া চুলে দীঘল চোখ, 
এখন খাঁ খাঁ নদীর জলছাড়া বুক, দলছাড়া সে একলা লোক।

মা বাপও তো ইন্তেকালে, 
দলছুট সেই বেখেয়ালে 
হঠাৎ কি ইতিহাস খুঁড়তে এলো, 
কুয়াশঘেরা ভোরবেলাতে, 
ভোর কোথা রে, রাত্তির বেশ, 
পোষের শুরু, আঘাণ শেষ। 

ও মেয়ে তুই যেন এক শুকনো পাতা,
যেন কেমন ঝড়ঝুঁকি, 
হাতে ওটা কি বলতো, নদীর বুকে খুঁড়িসটা  কি?  
এ তল্লাটে কৈ দেখিনি, কাদের বাড়ি, কি নাম তোর?  
খুঁজতে এলাম ফুরিয়ে যাওয়া,হারিয়ে যাওয়া সেই কৈশোর।।

নাম জেনে কি লাভ তোমাদের, পৌষে জন্ম, তুসু'ই ডাকো,
মকরদিনে গাঁদাফুলের মধ্যিখানে মাটির পিদিম জ্বেলে রাখো। 
তুসু'রা আর যায়না ভাসান, জীবন বাইছে  শপথ নিয়ে, 
তাই, শুখাগাঙের বালুর ঠিক্যান জল খুঁড়ছি আমার বুকের অস্থি দিয়ে।। 

রোনক ব্যানার্জী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৪-তম প্রয়াস







খোয়াবনামা      রোনক ব্যানার্জী

এই মধ্যরাতের চাঁদ আমার প্রেমিকা
দু-চারটি স্পঞ্জের হৃদয় হতে প্রেমরস থিতিয়ে পড়ছে,
পানপাতার আঁচলে মুখ ঢেকেছে আমার যৌবন
পর্ণকান্ডে বিঁধে আছে অভিমানী পালক।

দুর্বল একটি আগুন জ্বলছে ডায়রীর পাতায়
ঝাঁপ দিয়ে মরছে স্মৃতিমাখা জিজিপাস
আতর মেখে ব্যালকনিতে বসে আছে ব্যর্থ চাতক
গোলাপের পাপড়ি গুলো যেনো চিপসের প্যাকেট।

প্রেম একটি আর্ট ফিল্ম, পরিচালক স্বয়ং বিধাতা
সত্যান্বেষী প্রেমিকার দরজায় ক্রাচের টোকা,
বিশ্বস্ত মোমবাতি জুলুমের ম্যাচবক্সে পুড়ছে
ভূমিকম্পে ফেটে যাচ্ছে প্রত্যাশার উপমহাদেশ।

মায়ার মন্দিরে দুলছে আবেগের পেন্ডুলাম,
উদ্বাস্তু অমোঘ টান কর্পুরের মতো উর্দ্ধপাতিত
সংযমের করিডরে সমর্পনের শিকল বাঁধা;
খোয়াবের ঋজুদন্ড  ধুপের ধোঁয়া হয়ে মিশছে সম্পর্কের শিলমোহরে।


বন্যা ব্যানার্জী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৪-তম প্রয়াস







সময়    বন্যা ব্যানার্জী


চলতি পথে হঠাৎ আলগা মুঠো
ভ্রু - কুঞ্চিত লুকোনো কিছু শ্লোক
উড়েছে পথে কতক ধূলো- বালি
বয়েছে কিছু সয়েছে কিছু চোখ।

শব্দ কুড়োন বিকেলের ভালোবাসা
কিংবা সকাল সেতারের সুরে রাঙে
শীতের আমেজ সবুজ চাদরে বোনা
ছুটিতে কি আজও দেরি করে ঘুম ভাঙে!

জলের কথা জলেই মিলিয়ে গেছে
আল্পনা শুধু দাগ রাখে চৌকাঠে
নিজেকে হারিয়ে নিজের কাছেই ফেরা
চেনা সময়টা অপেক্ষাতেই কাটে।

পড়ন্ত হাত রাখে দরজায়
দাঁড়ি,কমা আর সেমিকোলনের সাথে
ভাঙা পোট্রেট দেওয়ালের কোণে রাখা
কংক্রিট মন জীবন অন্য খাতে।

Monday, 30 December 2019

হরিৎ বন্দোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৩-তম প্রয়াস









পাখি রঙের আকাশ --- ১     হরিৎ বন্দোপাধ্যায়

বাবাকে নিয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করতে পারলাম না। কোথা থেকে শুরু করব? কত বছর পেরিয়ে গেল। এখনও প্রথম শব্দটাও ধরতে পারি নি। প্রথম শব্দটার রঙ কি হবে? বাবার প্রতিটা মুহূর্তই তো দুপুর। কোন রঙে তার সম্পূর্ণটা আলো হয়ে উঠবে ? এক একদিন রাতের গানগুলোতে বাবা বাঁশি বাজাত। বাঁশির গর্ত দিয়ে কান্না গড়িয়ে আসত। খেতে না পেয়ে এক একদিন বাবা উপোস থাকত। গাছের ডালে উঠে সারা পাড়া দেখত। রান্নাঘর থেকে বাসনের আওয়াজ শুনত। রাতে পাড়াজুড়ে ভাতের গন্ধ উঠলে ঘরে ফিরে আবার বাঁশি বাজাত। আমি অন্ধের মতো শব্দ হাতড়াই।

রাজদীপ ভট্টাচার্য

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৩-তম প্রয়াস







দধীচির হাড়    রাজদীপ ভট্টাচার্য 

"আসছে আসছে আসছে / সাবধান সাবধান সাবধান" -- ঘোষকের কন্ঠস্বর রাতের অন্ধকার ছিঁড়তে ছিঁড়তে ছড়িয়ে যাচ্ছিলো শহরের প্রতিটি ঘরে।  ঘুমের ভিতরে, স্বপ্নের ভিতরে, বুকের ভিতরে। 

বেশ কিছুদিন হল এরকম একটা আশঙ্কা সবার মনে আসছিল। খবরে শোনা যাচ্ছিলো বিভিন্ন স্থানে এমনটাই ঘটছে। নিরন্ন মানুষ ভাতের বদলে আজকাল ধর্ম খাচ্ছে গোগ্রাসে। এতে বেশ নেশা হয়। ওই দেশি বিদেশি মদ, ভাঙ, আফিম সব ফেল এর কাছে। আর চড়া নেশায় যা হয় তাই হচ্ছে। দাঙ্গা - মৃত্যু - রক্ত। আসমুদ্রহিমাচল বিস্তৃত এই দেশের আনাচেকানাচে বয়ে যাচ্ছে রক্তের নদী। যেসব শহর - গ্রাম পথে পড়ছে তারা বদলে যাচ্ছে নরকে। প্রতিটি পা ফেলতে হচ্ছে চারপাশ দেখে। অগ্রপশ্চাত বিবেচনা করে। 

এই আশঙ্কার রাতে ঘনঘোর তমসার মাঝে নীরবতার সমুদ্রে সাঁতরে চলেছে এক মধ্যবয়সী মানুষ। সবাই তাকে উদয়ন পন্ডিত নামে চেনে। গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের সামান্য শিক্ষক। ছোটো ছোটো শিশুদের হাসি কান্না তার সম্বল। আর সেই হাসি কান্নাকে অবিকল ধরে রাখতে হলে আজ রক্তনদীকে বাঁধতে হবে। এই হিংসা, এই গ্লানি, এই হানাহানি রুখে দিতে হবে যে কোনো মূল্যে। পুরাণে আছে অত্যাচারী বৃত্তাসুর বধে দধীচির হাড় দিয়ে তৈরি হয়েছিল বজ্র। কিন্তু আজ আর সে সব কোথায় পাবে উদয়ন! তবু সে বুঝেছে, দধীচি আসলে একটা মিথ। মানুষের হিতার্থে যে আত্মত্যাগ করে সেই দধীচি। আন্তরিক ত্যাগ আর নিখাদ ভালোবাসাই হল দধীচির হাড়। সাধারণ মানুষ ভালোবাসার বড় কাঙাল। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষে মানুষে ভালোবাসাই পারে সব অন্ধকার মুছে ফেলতে। ভালোবাসাকে ফিরিয়ে আনতে তাই পথে নেমেছে উদয়ন। দৈত্য নদীকে যে ঠেকাতেই হবে।

সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৩-তম প্রয়াস








কুথাঠো দিছি বটেক    সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী

ই মা, তুয়ার মাইয়ার নাচনকোদন কাহার লিগ্যা ?
ঈশানে মারাংবুরু দিখি ডর মানে কাহেক ?

মু চন্দনকাঠের উ বনঠো বান্ধা দিবক,
পুরা রাজি বটেক ।
তু মুর বিয়াঠো দিবিক লাই ?

রাণী লাই-বা হোবেক তো কী হুলল ?
মুটা চাল প্যাটে দিবার লাগি গতর তো লাগাই ।
পানি টানে হরেক দিনাণ্ঠে বৈঠা মুয়ার ।

আলাল ঘরকে আছিক লাকি তু ?
শরম মানে ক্যানে ?
কাইল রাইতঠো তক মুর চুখে পাতা ভিজাইল গেলা ।

ভিন দ্যাশ ছাওয়াল ? মু মানবক লাই ।
লড়াইঠো বান্দা আছে, মুর বাপ বুড়াবাপ লহুত ।
দিবক লাই মুয়ার পিরিত, কুথাঠো দিছি বটেক ।

অনিন্দিতা মুখার্জী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৩-তম প্রয়াস







দেউলিয়া   অনিন্দিতা মুখার্জী 

দেউলিয়া..
রূপের স্ফুলিঙ্গ , বসন্তের সমাহার ।
দেউলিয়া.. 
আদম ইভ ভালোবাসা ,সম্পদের জৌলুস ।
দেউলিয়া..
সম্পর্কের বাধন ,অভিমান ,অহঙ্কার।

স্মৃতির এলোপাথারি ঢেউয়ে ;
বাজে বিষণ্ণতার বাঁশি ।
জীবনের শেষ হিসাবের খাতায় ,
পড়ে থাকে---
ধর্ষণ,ঘুষকেলেঙ্কারি,পরকীয়া ,ধর্মের হানাহানি,হত্যা
পড়ে থাকে---
কবিতার খাতা,অপেক্ষারত প্রেম ।
মহাপ্রস্থানের পথে ---
উপাসনারত সাধ্বী ।
শতাব্দীর সেরা ---
বহমান সময় ।

রথীন পার্থ মণ্ডল

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮৩-তম প্রয়াস






নাইটিঙ্গেল   রথীন পার্থ মণ্ডল 

একটা নাইটিঙ্গেল উঠে আসে, মাঝরাতে
শরীর জড়ের মতো সংজ্ঞায়িত ।

আত্মা উঠে দাঁড়ায়
নদীমাতৃক দেশের নামে অক্ষর সাজায়
চামচিকেরা উড়ে যায় ভয় পেয়ে
মহাসাগরের ওপার থেকে সুর নামে
গান লিখিত গাছটি ডানা মেলতেই
জেগে ওঠে নাইটিঙ্গেলের ভাষা।

পাশা খেলায় হেরে
আত্মা অজ্ঞাতবাসে যায়
শ্বাস জাগে জড় শরীরে

প্রশ্বাসে ভেসে যায়
আকাশগঙ্গার কলরব।
   

Saturday, 28 December 2019

পৃথা চ্যাটার্জি

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮২-তম প্রয়াস
কবিতা






আলোকিত তুমি   পৃথা চ্যাটার্জি 

সন্ধ্যা নামা দেখেছি 
ক্লান্ত সূর্যের কাছে দাঁড়িয়ে 
হিম আকাশে তখন একটাও নক্ষত্র ছিল না 
কথাগুলো জড়িয়ে বলছিলে
তারপর ...
হৃদয়ের প্রতিধ্বনি শুনেছি 
সমস্ত শরীর ভেঙে নেমেছে শ্রাবণ প্রথম পৌষে 
অদ্ভুত ভাবে মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি আর আজানের সুর ভেসে এলো 
একটা ফানুস মনের আলোয়  উড়ে গেল দূরে ... বহু দূরে 
এতো পবিত্র সন্ধ্যায় কারো বাড়ি থেকে পচা মাছ ভাজার গন্ধ ভেসে আসতেই 
অস্থির হয়ে নেমে এলাম ছাত থেকে ।
বিবর্তিত আলোর প্রতিফলনে তোমাকে দেখলাম 
বিশুদ্ধ চুম্বনে আলোকিত তুমি ...

অভিজিৎ দাসকর্মকার

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮২-তম প্রয়াস
কবিতা





অতঃপর            অভিজিৎ দাসকর্মকার

অতঃপর
অভিজিৎ দাসকর্মকার 


অন্তর্বাহিনী এখন ভালো আছে
পশ্চিম মুখে সার্বভৌম ডিসেম্বরি পাতা| 
        কৃষ্ণহারা শুকপাখি ডাকে, 
             মাথুরকোণে ঢুকেছে উত্তাল জলবায়ু

অথচ
বিস্তীর্ণ উপত্যকা জুড়ে উত্তুরে নদী-কিশোরী 
নীলগিরির শুল্কমোচনের সাক্ষী লেখে___
  স্তবকে অক্ষর সংলাপ, আর
       নীল গায়ে ধনেস পাখির আদর আঁচড়...
ধন্যবাদ।  ভালো থাকবেন।

রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮২-তম প্রয়াস
কবিতা






আমি কোথায় খুঁজব আমাকে     রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়
মাথার নিচে নরম বালিশ তবুও
বালিশের ওপর আমার মাথামুণ্ডু কিছুই নেই

অনেক চেষ্টা করেছি ঘুমের ভিতরে অন্য কোনও ঘুম প্রস্তুতির যেখানে থাকবে শুধু 'আমি' শব্দটি

দেখেছি শ্মশান মুছে উঠে গেছে বহুতল বিল্ডিং যার কোনও না কোনো এক‌টি জীবিত চারকোণা জরায়ুতে নির্মিত হচ্ছে ভ্রুণ

ক্রমশ কড় গুনে দিন ও রাত্রিযাপন' 
আমি' গুলো গুনে গুনে ক্লান্ত অস্তিত্ব ক্ষয়ে যাওয়া জিনস্ কিংবা ছ্যাতরানো টুথব্রাশবেঁচেথাকা

কখনও স্রেফ লাশ

শুকনো ডিটারজেন্ট গুঁড়ো গুঁড়ো ছড়িয়ে পড়ছে স্বচ্ছ জলে তারপর বুদবুদ হয়ে একের পর এক ভোঁকাট্টা ঘুড়িগুলো......

'আমি' গুলোও

সোনালী মণ্ডল আইচ

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮২-তম প্রয়াস
হাইকু কবিতা 







১ টি প্রাণ       সোনালী মণ্ডল আইচ 

উপচে গেলে
পোর্টফোলিওর যে
দুলকি চাল

গলার সুরে
গীতগোবিন্দ ছন্দ
লাগে না মন্দ

দরজা খোঁজে 
দিকবিদিক সব
অতিথি নাম

তরজা বুঝে 
পগারপার যাঁরা
কড়চা লিখে

পথিক হাল 
জামিনদার প্রেম
ছুঁইয়ে ডাকে

ঠিকানা লেখা
হাবিলদার রাগে
চোখ রাঙায়

চেঁচিয়ে কয়
জলকামানটা দে
ভিজল সব

শীতের ভয়
থরথরিয়ে কাঁপে
বৃষ্টি খুউব

পিছল পথ
গড়গড়িয়ে তুমি
নামতা গাও

ধানের বীজ
বাজারদরে আমি
বস্তা বাঁধনে

বিকিয়ে যাই
তোমার কাছে রোজ
একটু করে

লিখিয়ে নাও
চৌকাঠের ঠিকানা
দরজা খুলে

শুভশ্রী সাহা

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮২-তম প্রয়াস
অণুগল্প









ফটো গ্যালারী     শুভশ্রী সাহা 


ফোন টা হাতে নিলো অর্ণা। খুলতেই এক ই কথা প্লিজ ডিলিট ইয়োর আননেসেসারি ফাইলস। উফফ! ও, বেড়াতে যাবে দিন দুয়েক বাদেই আর এই সময় ই গ্যালারী ওপেন হচ্ছে না!
কি কি সে মুছবে! এখানে সে আর জয়দীপের পাঁচ বছরের কবিতা গল্প ছবি রোজের ছুটখাট কত্ত কিছু রাখা! বয়ফ্রেন্ড  বলে কথা!  শরীর প্রেম  আবেগ খুনশুটি অভিমান!   কত কিছুই না হয়েছে!  কম গল্প তো নেই  ওদের নিয়ে, ঝুলিতে! অর্ণার চোখ বেয়ে এলো জল! পারলো  জয়দীপ এমন করতে! মানুষ!
মুছতে মুছতে সে এক জায়গায়  থেমে গেলো। একটা সোনালী গাছ আর লাল প্রজাপতির মনোগ্রাম করা কার্ড। তাতে লেখা, তুমি ছাড়া আমার পৃথিবী শূন্য, আমি তোমার জন্যই শুধু বাঁচি!যে দিন তুমি থাকবে না আমাকেও সারা পৃথিবীতে খুঁজো না।  কেউ পাবে না।
অর্ণার আবার হাত থেমে গেল।  ডিলিট করলো না,বদলে এলো প্রতিহিংসা, মেসেজ টা জয়দীপের নতুন গার্ল ফ্রেন্ড রাজশ্রীর কাছে পাঠিয়ে দেবে কি!  দেখুক! দেখুক! জয়দীপ কি জিনিষ! তাকেও তো এই ভাবেই একদিন --
নাহ--- এত্ত সুন্দর কার্ড টা নষ্ট করবে কেন ওই রাস্কেল টার জন্য! রাজীব তো এখন টুকটাক ভালোই কথা বলছে তার সাথে, যদি  রিলেশন টা একবার স্টেডি হয়ে যায় ওকেই পাঠিয়ে  দেবে।  কার্ডের কি দোষ! সুন্দর জিনিষ বার বার ব্যবহার করা যায়।

Friday, 27 December 2019

শাহীন রায়হান

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮১-তম প্রয়াস









মুখশ্রী              শাহীন রায়হান
কতগুলো পুরনো ছবি
হাঁটু গেড়ে আনমনে বসে থাকে স্মৃতির জানালায়
তারপর হৃদয়ের আলপথ মাড়িয়ে নীরবে দাগ কাটে
কামনার ঝুল বারান্দায় -

তখন শীতের জমানো জড়তা ভেঙে
ঘুমন্ত পাখির মতো জেগে ওঠে দুধ কুয়াশা রাত
দূর হিজলের বন সরিষা মটরশুঁটি।

অন্ধকার পৃথিবীর দু'চোখে খেলা করে প্রেমময় আলো
আর আমি বিরহ পাথর কেটে আমার উদ্যানে গড়ি
তোমার সেই মুখশ্রী।


সুজান মিঠি

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮১-তম প্রয়াস







পঁচিশে ডিসেম্বর সুজান মিঠি

-- ‘এ মা, মা ওঠ না, বল না ওই বুড়ো দাদুটা কখন আসবে আমাদের ফুটপাতে?’
-- ‘আঃ, মুন্নি, ঘুমোতে দিবি শান্তিতে! চুপ মেরে শো। কে দাদু, কখন আসবে, ওসব কাল সকালে ভাববি। নে, শুয়ে পড় দিকিনি।’
-- ‘এ মা, ফের ঘুমাই গেলি, শোন না, ওঠ না মা একটিবার, খুব শীত লাগছে মা, তোর আঁচল টা এত ছেঁড়া কেনে মা! একটু গরম বাঁধে না গায়ে।’
-- ‘এ মেয়ে তো জ্বালায় দেখি ভারী, উফ, ওই উধার পানে দেখ তোর বাপের দারুর সিসে গুলো ভরা আছে, ওই বস্তাটা টেনে নিয়ে আয় ইদিকে, আমার আঁচলের উপরে চাপিয়ে দিলে এত ঠান্ডা লাগবেনি আর।’
-- ‘এই তো আনলাম মা, উহঃ বিচ্ছিরি গন্ধ মা, তোর কাপড়ের আঁচলটাও এখন মাতাল বাপ হয়ে গেল রে। ইসস।’

নামকরা শহরের ফুটপাতে মা মেয়ের মধ্যরাতের এক সাধারণ সংলাপ। এরপর যদি সারাদিন পেট-সন্ধানী পরিশ্রমী মা ঠান্ডায় জমতে জমতে হলেও ঘুমিয়ে পড়ে, মেয়ের অবান্তর প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে, তবে কি আর করা।।
কিন্তু সাধারণ সংলাপের দিনটি ছিল পঁচিশে ডিসেম্বরের মধ্যরাত, তাই মুন্নির মায়ের আর ফুটপাতিয়া ঘুমটা সম্পন্ন হলো না সহজেই।

-- ‘ এই মুন্নি, কি রে ঘুমাইনিস কেনে এখনো? সেই বসে আছে হাভাতি মেয়েছেলে! কি হয়েছে রে তোর আজ বল দিকিন?’

মা ঘুমিয়ে পড়ার পরে গায়ের উপর মদের বোতল রাখার জন্য ব্যবহৃত বস্তা খান মায়ের ছিন্ন আঁচলের উপর শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে মুন্নি কাঁদতে শুরু করেছিল। গাল বেয়ে রুক্ষ চুল ভিজিয়ে সে কান্না এসে থামল মায়ের পিঠে, আর ঘুম গেল মায়ের। চাঁদের আলোয় চমকে উঠে দেখে নিল ভালো করে,  ‘যাক বাবা, রক্ত নয়, কান্না।’ সড়কের চাকার ঘর্ষণ ফুটপাতে রক্ত হয়ে উঠে আসা বিশেষ আশ্চর্যের তো আর নেই তাদের কাছে।

-- ‘মা, জানিস, টেশনের নিচে বিকালবেলায় জলের বোতলগুলো কুড়ুচ্ছিলাম যখন, দেখি স্কুলের দিদিমনিগুলো বসে বসে লিস্টি করছিল বলে বলে আজ রাতে নাকি কে একজন দাদু আসবে ওদের ঘরে, কত কি দেবে ওদের, ওরা যা চাইবে তাই দেবে, এ মা, বল না কেনে ওই দাদুকে, আমাদের শুধু একটা কম্বল দিতে। এই ঠান্ডায় বড্ড কষ্ট হয় রে মা। এ মা ওই দাদুটা কে মা?’

ঘুমালু চোখে বিস্ময় তখন মুন্নির মায়েরও। কে এমন আছে যে সবার সব ইচ্ছে পূরণ করে যায় ঘুমের মধ্যে আজ? সে ভাবে, বাবুদের বাড়ির মা বউরা উপোস দিয়ে বাড়ির মানুষ দের মঙ্গল চায়, তাদের অনেক মঙ্গল হয়। টাকা হয়, খাবার হয়, পোশাক হয়। আর তারা তো নিত্যি উপোস করে ধরতে গেলে, কই তাদের তো এসব কিছু…

-- ‘এ মা বল না’
ঘোর কাটে মুন্নির মায়ের। অনেক কষ্টে বুকের মধ্যে টিপে ধরে ঘুম পাড়ায় মেয়েকে তার। তারপর নিজে জেগে থাকে সারারাত। সে বলে -- ‘ কে গা তুমি বুড়ো বাবা, কেউ কি আছো সত্যি এমনি ধারা তুমি, তবে আজ এক্ষুণি আমায় অনেক বেশি জ্বর দাও গায়ে, এত জ্বর যেন আমার মুন্নি আজকে রাতে একটু গরম গায়ে ঘুমাতে পারে। একটু গরম পায়’।

সকাল হতেই মুন্নি ঘুম থেকে উঠে খুঁজতে থাকে তার মাকে। তার মাতাল বাপ ও দেখে নাই তাকে। ভয়ে মুন্নি কাঁদতে শুরু করে। তার বাপ পাঁচুইয়ের শেষ ঢোঁকটা গলায় ঢেলে বলে-- ‘আহঃ, কাঁদিসনি মুন্নি, ওই কালু মনে হয় নিয়ে গেছে তুলে, ফের দিয়ে যাবে ভাবিসনি। খুব দেমাক মাগীর। কতবার বললুম পঞ্চাশ ট্যাকা দেবে, এক রাত্তির যা না। কিছুতেই যাবে নে। ঠিক হয়েছে নিয়ে গেছে শালীকে।’

মুন্নি এসব বোঝে এখন, বয়স দশ বা এগারো হলেও সেও যে এমন বিষ নজরে পড়েনি তা নয়। তার মা সবসময় ছুরি নিয়ে থাকে বুকে। নিজেকে আর নিজের রক্তকে বাঁচিয়ে চলে ফুটপাতে।

কিছু পরে মুন্নি কাঁদতে কাঁদতে দেখে তার মা ছুটতে ছুটতে আসছে রাস্তা দিয়ে। বগলে একটা কম্বল। ফুটপাতে ওঠার আগেই মুন্নির মায়ের শরীরটা পিষে দিয়ে গেল দুই ফুর্তিবাজ বাইক রেসারদের চাকা। ছুটে এলো মুন্নি। জড়িয়ে ধরে কোলে তুলে নিল মায়ের রক্তাক্ত শরীর।
-- ‘ এই নে মুন্নি, তোর ওই বুড়ো দাদু এটা তোকে দিয়েছে রে বাপ। আজ থেকেন গরমে ঘুমাইবে আমার মুন্নি।’ বুকের ভিতর থেকে ছুরিটা বের করে বলে মেয়েকে, ‘এটা বড় অমূল্য রে, বুকে রাখবি কিন্তুক। বল পাবি বল।’

কম্বলটা ততক্ষনে শ্মশানের ধূপের গন্ধ ছাড়িয়ে রক্তের গন্ধে ভরপুর হয়ে গেছে। পাশের ফুটপাতের চন্দনা ভোরবেলায় ফিরছিল কালুর গা গরম আখড়া থেকে। তখনই দেখতে পেয়েছিল মুন্নির মাকে, শ্মশান ঘাটে বসে থাকতে। বড়লোক বুড়োটা পুড়বে, আর সে কম্বলটা এনে দেবে তার মুন্নিকে।

মুন্নির সান্তা বুড়ো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, মায়ের রক্ত-গন্ধে মোড়া কম্বলটা গায়ে জড়িয়ে সে আকাশের উজ্জ্বল তারাটার সঙ্গে কথা বলে অনেক রাতে, --‘এ মা, জানিস তো, কালু আজ ছুরি দেখে সেকি দৌড় দিল রে, কি বলবি।
--এ মা, তুই ফিরে আয় না রে, আর কখনো বুড়ো দাদু চাইবো না।
--এ মা, আমি বুঝেছি, ওই দাদু শুধু ওই দিদিমণিদের দেখতে পায়, ফুটপাত দেখতে পায়না ।
-- এ মা ফিরে আয় না।’

ধীরে ধীরে কম্বলটা আরো বেশি গরম হয়ে ওঠে। আরামে ঘুম আসে মুন্নির চোখে।

পিয়ালী পাল

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮১-তম প্রয়াস








একচিলতে রোদ       পিয়ালী পাল

পশ্চিমের তেতলার বারান্দায় ঝুমা যখন তার অতীতের স্মৃতিচারণায় বিভোর তখন একচিলতে সোনালি রোদ আমগাছের ফাঁক দিয়ে তার গহন কালো ঢেউ খেলানো চুলের মাঝে এসে উঁকি দিচ্ছে । পৌষের মিঠেল রোদটা ঝুমাকে দিচ্ছিল এক অন্যরকম আস্বাদ তার পুরানো স্মৃতি আস্বাদন করতে। কারণ ঠিক ঐ রকমই এক পৌষের মিঠেল রোদেই এলো ঢেউ খেলানো চুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঝুমার হৃদয় আন্দোলিত হয়েছিল রাজুর প্রেমে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই প্রেম এখন অতীতের স্মৃতিতেই বন্দী। কারণ গত দুই বছর আগেই রাজু তার মারণরোগ নিয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে চিরদিনের মতো বিদায় নিয়েছে। কিন্তু রেখে গেছে সেই একচিলতে রোদের সুমধুর স্মৃতি যা ঝুমাকে এখনো সঙ্গ দিয়ে চলেছে। রাজুর বলা, না বলা কথাগুলো সবই ব্যক্ত হচ্ছে ঐ "একচিলতে রোদ"-এর মাধ্যমে॥

রানা সরকার

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮১-তম প্রয়াস








আমরা সাধারণ মাটির একজন     রানা সরকার 

আমি সাধারণ, অতি সাধারণ এই মাটির একজন
আমার বন্ধুও সাধারণ, অতি সাধারণ, এই মাটিরই একজন

কতদিন বন্ধুর দাওয়ায় বসে সুখে দুঃখে কাটিয়েছি
কতবার একসঙ্গে পাহাড়-নদী, তরাই-ডুয়ার্স ঘুরেছি

বন্ধু নজরুলের 'সর্বহারা', আমি জীবনানন্দের 'বোধ' নিয়ে কত আলোচনা করেছি। 

আবার পরীক্ষাতে কম নম্বর পেয়েও, একসঙ্গে ক্যাম্পাসে আন্দোলনও করেছি। 

পুনঃপুনঃ একসঙ্গে ঈদের সেমাই, দুর্গাপূজার খিচুড়ি 
শনির সিন্নি, বড়দিনের কেক খেয়ে বানিয়েছি ভূড়ি। 
কতবার এক থালায় খেয়ে বন্ধুর জন্য রেখে দিয়েছি। 
ঈশ্বর আমাকে মানুষ বানিয়েছে, আমি ঈশ্বরকে ছাড়িয়ে বন্ধু বানিয়েছি। 

আর হে শালা! তুমি কে? জীবনে বোধ হয় স্কুল কিংবা হোস্টেল দেখোনি
মাটির সোঁদা গন্ধে গা ভাসাওনি 
রক্তের রং লাল এটা মনে রাখোনি
আর হিন্দু-মুসলমান করে বিষ ছড়িয়ে দুর্ভিক্ষ আনছো! 

আমরা সাধারণ আগে খুশিতে ছিলাম এটাতো মানছো! 

ছাব্বির আহমেদ

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ১-ম বর্ষ , ২৮১-তম প্রয়াস








হঠাৎ ঘুম   ছাব্বির আহমেদ 

চলতে চলতে হঠাৎ ঘুম পায়, ঘুমের গভীরতা হয় অতি কষ্টদায়ক।
প্রতিনিয়ত নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর, ঘুম আসে  ক্লান্ত শরীর বিশ্রামের আসায়।
মনের আবেগ আকাঙ্খা এক নিমেষে জলাঞ্জলি।
ঘর-বাড়ি, পুরানো স্মৃতি, বন্ধু; কে কখন কোথায়?
কারো কৃতিত্ব থাকেনা, কেউ ঘুম ভাঙাতেও পারেনা।
পাখি আকাশে উড়ে, সুন্দর ডানা মেলে ঘুমের দেশে পাড়ি দেয়।
ঘুমকে কেউ আটকাতে পারেনা, ঘুম সবার আসবে চিরন্তন।

Thursday, 26 December 2019

চিরঞ্জিৎ বৈরাগী

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , - বর্ষ  ২৮০-তম প্রয়াস








অসনী সংকেত         চিরঞ্জিৎ বৈরাগী
আলেয়ার রেখা ঘরে-বাইরে
বহুমুখী সংকেত লাল-নীল-সবুজে সভ্যতার বুকে;
শিক্ষায় অরুচি জ্ঞানে ভাটা, পরিবারের শাসন গেছে চুকে।
দিকে দিকে ভাঙো ভাঙো রব, মূর্ছিত সমাজ;
নেড়িকুত্তার জঘন্য রাজত্বে ছারখার দেশ।
কালোপতাকার মিছিলে নির্লজ্জ অমানবিকতার ছাপ, বেবাক চলে;
বর্বরতার লেলিহান শিখা, তন্ত্রীতে বাজে।
হাড়হিমে আঘাত বীণার তারে,
দস্যুর করাল আক্রোশে ভয়াল রক্তবীজে;
প্রস্ফুটিত ফুলের সৌন্দর্যে অরাজকতা নামে!
অচেতন জীব নির্ভয়ে কন্ঠ রোধে,
বাঁচার শত চেষ্টা বেদনার রাস টানে;
নৃশংস অপরাধ বিষধর ছোঁবোল হানে।