Friday, 30 October 2020

|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ অভিজিৎ দাসকর্মকার ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা ~২০২০
উৎসর্গ≈রথীন দাশগুপ্ত (বিষ্ণুপুরের অনালোচিত শব্দসৈনিক)


সম্পাদকীয় নয় কিন্তু _____

আমাদের আজকের সংখ্যা "কোজাগরী সংখ্যা~২০২০" প্রকাশতি হলো।কোজাগরী সংখ্যা~২০২০,উৎসর্গ করা হলো বিষ্ণুপুরের একজন অনালোচিত ব্যক্তিত্ব এবং  শব্দসৈনিক রথীন দাশগুপ্ত মহাশয়কে। তিনি একজন সহজ,সরল এবং আপরিসীম জ্ঞানের অধিকারী মানুষ,আত্মপ্রচারের প্রবণতা তাঁর কখনোই ছিল না। 
        পরবর্তীতে তাঁকে নিয়ে আরো কিছু কাজ করার ইচ্ছে থাকলো।তাঁকে পত্রিকা,বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা, বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দা এমনকি বাংলা সাহিত্যের সকল শব্দ সৈনিক ও পাঠকের তরফ থেকে জানালাম প্রণাম,শ্রদ্ধা।  


|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ সুশীল হাটুই-এর কলমে কবি রথীন দাশগুপ্ত ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
সুশীল হাটুই-এর কলমে অক্ষয় চরিত্র কবি রথীন দাশগুপ্ত নিয়ে কিছুকথা



রথীন দাশগুপ্ত বাঁকুড়া জেলার মন্দিরময় শহর বিষ্ণুপুরে বাংলা ৫ ই ফাল্গুন ১৩৪৩ ইং ১৭ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭ খ্রি. জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পিতার নাম ( স্বর্গীয়) শ্রীদামচন্দ্র দাশগুপ্ত।শ্রীদামবাবু NATIONL AURVEDIC COLLEGE & HOSPITAL কলকাতা থেকে বাঁকুড়া জেলার
প্রথম আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উত্তীর্ণ হন, এবং 'বৈদ্যশাস্ত্রী' উপাধি লাভ করেন।
মাতা (প্রয়াতা) হেমলতা দাশগুপ্তা। 

রথীনবাবু মাড়ুইবাজার গোষ্ঠবিহারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীকালে বিষ্ণুপুর হাই স্কুল এবং বিষ্ণুপুর রামানন্দ কলেজ থেকে শিক্ষা লাভ করেন। কৈশোর থেকেই তাঁর সাহিত্যের প্রতি প্রবল অনুরাগ দেখা যায়। তিনি প্রথমে তাঁর বসত এলাকা কবিরাজ পাড়া থেকে প্রকাশিত হাতে লেখা পত্রিকা অভিযাত্রী-তে লেখালেখি শুরু করেন।পরবর্তীকালে গণশক্তি সমন্বয় অভিযান চেতনা আলোর ফুলকি মহুয়া সংরাগ বোধিদ্রুম আড্ডা যুগদীপ অমৃতধারা এবং আরো অজস্র পত্রিকায় কবিতা গল্প ও প্রবন্ধ লিখেছেন। 

তিনি প্রথম জীবনে অস্থায়ী চাকরি হিসাবে TEST RELIEF DEPTT-এ এবং পরে স্থায়ীভাবে K.G. ENGG. INSTT. বিষ্ণুপুর-এ যোগ দেন।

তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল ঈর্ষণীয়। তিনি বই পড়তে খুব ভালোবাসতেন। ভারতীয় ইতিহাস আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাস রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমাজদর্শন এবং বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের উপর তাঁর জ্ঞান ছিল অপরিসীম। নাটক বিষয়ে তিনি সমসাময়িক অনেকের চেয়ে বেশি জানতেন। শুধু তাই নয়তিনি নাট্ট-বিজ্ঞান নাট্ট-মঞ্চ নাটক সমালোচনা এবং নাটক পরিচালনাতেও দক্ষ ছিলেন। 

রথীন দাশগুপ্ত চারটি বই লিখেছিলেন।
১. অম্বীক্ষা ২. কুয়াশা সরিয়ে ৩. বালুচরী ছড়া ও
৪. যদি প্রেম থাকে।
তাঁর কবিতার ভাষা খুবই সহজ। কিন্তু অর্থের
গভীরতা খুব বেশি। যেমন---

পণপ্রথার বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে গিয়ে
নিগৃহীত রমণীর দুঃখ বোধে
চোখের স্লুইসগেট খুলে কয়েক হাজার কিউসেক;
(দায়বদ্ধ) কাব্যগ্রন্থ -কুয়াশা সরিয়ে। 

এমনি করেই কখন ঘুমের মাঝে 
স্বপনেরা নিজেদের ঘরে ফিরে যায়।
(চিরন্তনী) কাব্যগ্রন্থ -- কুয়াশা সরিয়ে।

তোমার শস্যহীন মৃতবৎসা মাঠে
খড়ের মানুষ সেজে কাকে ভয় দেখাচ্ছো তুমি?
আসলে তুমি নিজেই খুব ভয় পেয়েছো।
(স্বগতোক্তি) কাব্যগ্রন্থ -- যদি প্রেম থাকে। 

সমস্ত শরীরে তোমার লাম্পট্যের উপদংশ 
যেহেতু, তোমার আসল নাম - 'মিথ্যা'। 
(প্রসাধন কেড়ে নেবো)
কাব্যগ্রন্থ --- যদি প্রেম থাকে। 

বালুচরী ছড়া তাঁর লেখা হাস্যরসাত্মক ছড়ার বই। 

তিনি বাঁকুড়া জেলার লিটল ম্যাগাজিন সংস্কৃত টোল আয়ুর্বেদ চিকিৎসা কর্মকার সমাজ ও কামান তৈরির উপর প্রবন্ধ ছাড়াও অজস্র বিষয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন।
রথীনবাবু মার্ক্সবাদে বিশ্বাস করতেন এবং খুব সাধারণভাবে জীবনযাপন করতেন।তিনি প্রান্তিক মানুষদের আর্থিক সাহায্য করতেন।আত্মপ্রচারের প্রবণতা তাঁর কখনোই ছিল না। সহজ সরল অপরিসীম জ্ঞানের অধিকারী রথীন দাশগুপ্ত ১৮ই অক্টোবর ২০১৪ সালে পরলোকগমন করেন।

|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ নীলিমা সাহা ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
নীলিমা সাহা



সদ্যোজাত  

এই তো সবে এলাম,ছোট্ট আমি ,কয়েকটি অবিন্যস্ত পৃষ্ঠা মোমবাতি জ্বেলে ছিল অপেক্ষায়

তোমাদের পৃথিবী শেয়ার করবে তো আমাকে!

লনের আঁধারে না-ফোটা চোখ আমার শুনছে আশঙ্কা
আশঙ্কা গুনছে অক্ষমতা  জানালা দেখছে দিগন্ত 
ক্রমশ মেঘার্ত

ধাক্কা দিচ্ছে শব্দ 

এলাম,তোমারই আনলে  অচেনা চশমায় সময়ের আকাশ ,গদ্যজমিনে কৃষিকথার আসর,নতুন পৃথিবীতে সেই আদিম পুকুর 
আগাছার চারপাশে কানাগলি
তৃষ্ণাব্যথা---শুদ্ধ বানানের খোঁজে শব্দ অক্ষর বর্ণমালা 

আন্ডারলাইন্ড  হচ্ছি আমি

মনোগ্রাম হয়ে ফুটে উঠছে  পার্থিব উপহার

|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ ফটিক চৌধুরী ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
ফটিক চৌধুরী



স্বপ্ন থেকে দূরে

দিনান্তের পথে ঢলে পড়া সূর্য
আকাশের নি:সীম ঝুলে থাকে
                        পাখির ডানায়
যা গোধূলির ধোঁয়ায় মিশে যায়
রাত গভীর হলে কবিরা যেমন
                 স্বপ্ন বানায়
                                 কবিতায়
স্বপ্নের মধ্যে ঘোরাফেরা করে
           ‌‌  মাকড়সার জালের মত
                         আবছা শব্দেরা
তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় ভোর অবধি
আর রহস্যজাল বুনে রেখে যায়।

স্বপ্নে স্বপ্নে থাকো কবি,থাকো কবিতায়
আর গার্হস্থ্য সুখকে রাখো
                                     স্বপ্ন থেকে দূরে।


|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ নিশীথ ষড়ঙ্গী ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা 
নিশীথ ষড়ঙ্গী


ভ্রমণ

ওটা ছিল সবুজ রঙের এক হোমস্টে।
মালিক নেই; স্প্রূস আর পাইন,দুই সতীনের
নির্জন মালকিনি।
দূরে দূরে পঁচিশ-ছাব্বিশের সুন্দরীরেন্জগুচ্ছ
পালিশ করা বরফবিছানায় শুয়ে আছে
উজ্জ্বল, নরম রোদ।
সুগন্ধি,ধোঁয়াওঠানিসর্গ আজকেরব্রেকফাস্ট
বিজ্ঞ চার্চ, বিষণ্ণ স্ট্যাচু,স্ফীত মিউজিয়ম
আজ দুপুরের মেনু,
নির্বাসন দিনগুলো যেন এক একটি
ভ্যালেন্টাইন ডে।

এখন তোমার পায়ে পায়ে ঘুর ঘুর করছে
দুধঢালা পথ
তোমার চোখের সামনে ফুটে উঠছে
এক একটি বুকচাপা কবিতা,,,২৪.২.২০



|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ অমিত সরকার ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
অমিত সরকার



লাস্ট শো-এর পরে

 

অনেক সার্কাস হল

জেহাদের রক্তমাংসস্তন, থুথু চাটাচাটি হল  

মডিউলার বৃক্ষদের ডানা ছেঁটে ছেড়ে দেওয়া হল পথে পথে

গুটিপোকাদের বাউল প্রতিভা জ্বাল দিয়ে ঘন করা হল খুব  

 

সব হল

এইবার চলো আমরা আবহমানের হেঁশেল পালটানোর কথা ভাবি   

ভাবি অক্ষরের দূষণ থেকে কীভাবে ক্যানসার ছড়াচ্ছে অ্যামিগডালায়

ভাবি ২৪-এর সি বাস কাল রাতে কীভাবে ডানা মেলে উড়ে গেল মিল্কিওয়েতে

আমাদের ভাত ও ভায়াগ্রার গল্পে কেন রোজ ঢুকে পড়ে ক্যাটারিনা কাইফ  

পাখিদের না পড়া ইনবক্স উড়ে যাচ্ছে চোখের সামনে দিয়ে 

ডিজিটাল ব্যর্থতাগুলিকে লুকিয়ে রাখছি আমরা পোড়া পাতাদের গভীরে

 

আমাদের দুটি করে অতিরিক্ত আঙুল

আর একটি অতিরিক্ত মাথা গজিয়ে উঠছে রোজ রাতে

এসো আমরা এইবার চরিত্র বদলের কথা ভাবি

এসো এইবার আমরা সোয়েটার পালটানোর কথা ভাবি 


|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ বিভাবসু ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
বিভাবসু 


জলপরির জন্য অপেক্ষা 

যখন স্বপ্নগুলো খুব একা হয়ে যায়
যখন বেদনায় খুব করে ধ্বসে যেতে থাকি 
তখন তুই, আমার প্রিয় জলপরি, তুই 
ভেসে উঠিস উথাল রক্তস্রোতে
আদরে আদরে মুছে দিস সব ক্ষত,
সব যন্ত্রণা 
 
তোর আর আমার এই সাহচর্য, এই সখ্য 
এই অাদি-অন্তকালের পরিযান 
থামেনি, থামে না কখনো
সৃষ্টকথার প্রতিটি স্রোত জুড়ে
আমাদের এই অনন্ত ভাসান 

আজ হৃদয়জুড়ে জলশ্রাবণ, জলস্রবণ
আজ আরো এক দহনদিন 
হৃদয়ে গভীরতর উথাল-পাথাল 
আজো জেগে ওঠছে ধীমান এক প্রেমখেলা

কিন্তু কোথায় তুই!
কোথায় তোর ঝোড়ো হাওয়া?


|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ সংঘমিত্রা রায়চৌধুরী ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
অণুগল্প~সংঘমিত্রা রায়চৌধুরী


মাতৃপূজা

"উঁ উঁ উঁ শিবে সব্বাত্থ সাধিকে শরণ্যে তম্বকে গৌরী উঁঁ উঁঁ উঁঁ নমোস্তুতে... এবারে মাকে পোণাম করে যার যা মনের ইচ্ছা সব জানিয়ে দাও... আর হ্যাঁ, কেউ কিন্তুক ফুল ছুঁড়বে না, সব্বাই এই প্যাকেটে ফুল জমা করো, আর হ্যাঁ, কেউ কিন্তুক ফুলের সাতেই দক্ষিণেটাও ঐ প্যাকেটে দিও নি য্যানো। এই নাও, ধরো, এই প্যাকেটে দক্ষিণে দাও, এই এদিকে এদিকে..." এগারো বছরের বাবলুই এবারে বীরপুরের দুর্গাপুজো উৎরে দিলো। মন্ত্রে নয় ভক্তিতে, নিষ্ঠায়।

বাবলুর বাবা পুরোহিতগিরি বাদেও চারটি বাড়তি রোজগারের আশায় ট্রেনে ধূপকাঠি ফেরি করতো।  লাইন পেরোতে গিয়ে ডাউন রাজধানীর তলায় পড়ে বাবলুর বাবাও ধোঁয়ায় মিশে গেলো... তাও হলো দেড়বছর। ভাগ্যিস নয় বছরেই বাবলুর পৈতেটা হয়েছিলো। তাইতো বীরপুরের পুজোটা এখন বাবলুই সেরে ফেলতে পারে। বাবলুর মা হাত পেতে সাহায্য নেবার মানুষ নয়। ভোগ রাঁধা থেকে শুরু করে মণ্ডপ পরিষ্কার... সবটাই একাহাতে সামলে নেয়। বীরপুরের মানুষও বাবলুর মায়ের মধ্যেই গণেশজননীকে খুঁজে নিয়েছে। মাতৃপূজার আসল উপচার যে ভক্তি

|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
অনুগল্প~রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য



নির্বাসিত

'হ্যালো, নৈঃশব্দ্য আছে? '
--'এই নামে এখানে কেউ থাকে না'। 
'তাহলে চাঁদ বা জ্যোৎস্না? '
--'ইয়ার্কি হচ্ছে? ' কট করে লাইন কেটে দিল। 
এই নিয়ে সতেরো বার ফোন করলাম আমি। সতেরো রকমের প্রত্যাখ্যান। দু অক্ষর, চার অক্ষরের গালিও জুটেছে। কিন্তু, কাউকে আমি বোঝাতে পারছি না ,যে চাঁদ এবং জ্যোৎস্নাকে আমরা দেখি, তারা ঠিক চাঁদ বা জ্যোৎস্না নয়,অনেকটা চাঁদ বা জ্যোৎস্নার মতো, আসল নয়। নৈঃশব্দ্যকে না পেলে ওদের পাওয়া যাবে না। 

রাত তিনটে, আমি এইসময় একা একা নৈঃশব্দ্যকে খুঁজি, মনে হয় দু দণ্ড ওর পাশে বসি, দূরের চাঁদ আমার দিকে তাকিয়েই আছে, নকল চাঁদ আর নকল  জ্যোৎস্না,মেনে নিতে হবে, মেনে নিতে হবে তোমাদের ততদিন যতদিন না স্মৃতি আর ক্যাকোফনিকে ডিলিট করতে করতে একসময় নৈঃশব্দ্য আমার পাশে এসে বসে... 



|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ অনিন্দ্য দত্ত ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
অনিন্দ্য দত্ত



মহাজনপথ

বহুদূর হতে বহুদূরে
মহাজন পথ চলিয়াছে
বিজর,চেতন, অচেতন
তবু যেন কোথা
রয়ে গেছে নিয়ন্ত্রণ 
কোনো এক অভিষ্ঠে
কোনো এক সূর্যপথে 
যাবে বলে
চলিতেছে তারা
সন্মূখে, পশ্চাতে
অক্লান্ত  পাহারা
তাহাদের উঠ,হাতি, ঘোড়া
ক্লান্তিহীন  উদ্দেশ্যবিহীনতায় চলে যেন কোনো যাদুদন্ডে
নিয়ন্ত্রিত, বিজড়িত, পারত্রিক বলে
তাহাদের নারী,শিশু  পশম 
মাংস আর মধুর ভান্ডার
বিনিময় যার 
যাবে পাওয়া 
জমিখন্ড, রাজদণ্ড  শাসনের ভার
বিজিত প্রজাতির  হাহাকার।
মরুভূম জুড়ে কলরোল
পরাজিত,দিশাহারা,  হেরো মানুষের , ফাটা ঢোল
মধুবর্ষণের মতো, আসিয়াছে 
তাহাদের  কানে
নতুন নারীর  কঞ্চুকি ছিঁড়ে 
দুইহাতে তাহাদের বর্তূল 
স্তনদ্বয় দাবাতে
এইখানে স্কন্ধাবার তারা পাতিয়াছে

২) 

রানী,দাসী, রাজকন্যা, গণিকার 
কোনো  ভেদ নাই
সকলেরই যন্ত্র এক
খোলা যোনী
দুটি হাত পিছমোড়া
মুখের গভীরে বস্ত্রখন্ড সজোরে বোঝাই।
সংশয়ে,সন্তাপে তারা
সারল্যের পরে শুইয়াছে
তবু তারা অন্তরে বুনিতেছে আশা
বিজয়ীর সন্তানের নুতনতর ভাষা
একদিন তাহাদের শান্তি  দিবে।
অবিরাম  চলা হবে শেষ 
সবুজ  ঘাসের সেই  দেশ
মেষপালকের বহুপ্রসবা মাংসপূর্ণ 
রাজকীয় মেষ
ভয়াল দেবতার উৎসবে তারা
উৎসর্গ করিবে তাদের
অকুন্ঠ, পবিত্র রক্তধারা
পশ্চিম নিলীমার
আবার আসিবে রাত্রি
অযুত নক্ষত্রের শোভা লয়ে
বাধাবন্ধহারা।


|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ ভজন দত্ত ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
ভজন দত্ত


বাস্তুতন্ত্র

আগাছায় বাস্তু ভরে গেলেই কি বাস্তু ছেড়ে যাওয়া যায়!ভাতের হাঁড়ির পাশে সরীসৃপের আনাগোনা!সহবাসীরা জানে, কে এখন কার পাশে জেগে কিংবা শুয়ে-বসে আছে!
কে খাবে ছোবল,কে মুখে তুলবে খাবল,কে তুলবে পটল,কেইবা হবে খাদ্য আর কেইবা হবে খাদক!

পা তুললেও মরণ,পা নামালেও মরণ! 
পাপা ও পাপা! মাটি ও মাটি,মানুষই খাঁটি এলিয়েন, পৃথিবী তো যত গাছ-আগাছার!লুটেরা মানুষ লুটেছে  ভাণ্ডার। 

মাটিতে পা রাখলেই যদি মাটির মানুষ হওয়া যেত তবে পৃথিবীটাও যথাযথ বাসযোগ্য বাস্তু হয়ে উঠত।
আগাছা নির্মূল নাহোক, আগামী বর্ষাতক ওদের বাড়বাড়ন্ত থামানোর পারিবারিক পরিকল্পনায়
দা,কাটারি উঠে আসুক হাতে। 

গাছেদের ভিটেয় ঘুঘু চরানোর তাল করে যারা, 
বনসৃজনের বক্তৃতায় তারা তো  মড়াকান্না জুড়বেই...


|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ সুবল দত্ত ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা 
সুবল দত্ত 


সুবল দত্তের কবিতা 
কেন যে কলসী ভরে দিলে তুমি চেয়ে দেখ কেউ বেঁচে নেই
ঘাসে আলজিভ মোহে পড়ে আছে তাই বুঝি জল প্রয়োজন!
কাহিনী এখানে শেষ হয়ে গেল থামো সীমানায় খর চপার
কুচিকুচি মেঘ ঘেয়ো রাজনীতি এখনো দলিলে মাটি মায়া?

নিজ কাঁথা ছেড়ে নদী ভুলে এলে জুয়াতে কামিনী কাঞ্চন 
যে যাই বলুক পেটে ভয় পায়ে গ্রিজ তেল প্রাণ অসফল 
বন্ধুর কাছে সুতো জমা আছে দিনগত পাপ বেড়ে চলা  
কে দেয় ভিটেয় পুষ্পাঞ্জলি লুণ্ঠনচেতা সাঁঝ প্রদীপ
 
মাড়িয়ে শরত্‍ ভিন্ন গালিচা কোথায় যে পেতে বসবে     
জ্যোত্স্নাতে কেন মাখালে আতর আমিও ঈশ্বর ভুললাম           
ইতিহাস বড় ফাঁপানো বেলুন উড়ছে কাগজ পুড়ছে 
শ্মশানের কোনো ভবিষ্যতে তুমি আমি কেক কাটছি

আমার হয়েছে বড় জ্বালা বলো কাকে রেখে ভুলি নিজেকে 
তুমি জানো কোন ছিদ্রে ঢালবে মহাজাগতিক মিথ্যা
 ২
বরফ সাদা এলুমিনিয়ামের উপর রূপোর কারুকাজ শীর্ষ 
এই ধাতু শীর্ষ নিসর্গে যে জল ছিল সে কথা তো বলোনি? 
ওয়াণ্ডারফুল! এক্সাইটিং!
আমি দৃশ্যটি অদৃশ্য নাট বল্টু দিয়ে অস্তিত্বে স্থির করলাম
তার উপর ছড়িয়ে দিলাম কিছু ফল ফুল পূজো উপচার 
এবং শস্য বীজ,এর উপর হবে প্রভুর ভাব রমণ 
যেখানে নিষিদ্ধ রমণ সেখানে সৃষ্টির বীজের রোপণ দরকার
সুগন্ধি ওয়াস দিয়ে ধুয়ে ফেলি 
শস্যের গন্ধ বাসনকোসন আর একদম নেই
নেই কৃষকের আত্মদহের গল্প 
গারবেজে আলুর খোসার উপরে সি সি টি ভি ফুটেজ মেমোরি!!
পুড়িয়ে ফেলতে যাই অবশিষ্ট অপরাধবোধ 
ধ্যাত!! কবে হজম করে ফেলেছি
যা কেলো ! মাথায় করে বয়ে বেড়াতে হবে? 
চারঘণ্টা হয়ে গেল দিগন্তের সূর্য এখন বিদেশ সাগরে 
তাহলে সেই ছায়াগুলো?
সেই ধুলো আর আগুনের দেশপ্রেম ছায়া? কোথায়?
তাহলে কি চুমু?
সেই আগ্রাসী থুতু বিষ প্রেমিকার শরীরে? গর্ভে? 
ওই লোকগুলোকে দেখি বেশ 
ওদের মায়ার সংসারে বড় ফুলের অভাব
কিছুই করেনা তবু সর্বাংগে ঈশ্বর মহিমা? 
খেঁকি ঘেয়ো পরিপাটী চালাক ভদ্র মাটিতে পা  
রোজ রাতে আমার বিছানার পাশে বিকট ভজন রমণ 
আমার বউকে আর আমাকে না ছুয়েই 
বেশ কবার ধর্ষনে রোজগার করে   
আমার ভাই ওসব সয়ে গেছে 
ওরা যা বলে আমি স্বীকার করে নিয়েছি
ওরা বলে বিন্দাস থাকো 
অচিরেই তোমাদের সাহিত্যকর্ম রসাতলে যাবে


|| কোজাগরী সংখ্যা ≈ বঙ্গ রাখাল ||

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||
কোজাগরী সংখ্যা
বঙ্গ রাখাল


গন্তব্য বহুদূরে...

আজ কাল কয়েকদিন পার হলেই কি যেন মনে হয় সেদিন তুমি বলেছিলে শহুরে হও, আমি হতেও চেয়েছি কিন্তু বাবা? না, বাবাকে ভুলতে নয় বাবাকে নিয়েই শহুরে হব তুমি আমার পাহাড়ের পথ দেখালে, আমি কিন্তু পাহাড় চিনি না পাহাড়ে বোধ হয় যাওয়া হবে না; কিন্তু কেন বা কিসের জন্য তা বলতে পারব না তুমি সমুদ্রের কাছে যেতে বলেছিলে  আমিও মনে মনে ভেবেছিলাম সমুদ্রে যাব সমুদ্র হব বাবা মা আমায় ছেলেবেলা সখ করে নাম রেখেছিল সমুদ্র আমি সমুদ্র হব আর তুমি  হবে তার জল

তোমার বাড়ির পথ ভুলেছি। যেপথ ধরে তুমি রোমের পথ খুঁজে চলেছিলে। আমি পথের বাঁকে বাঁকে তোমার ক্লান্ত ঘামের ঘ্রাণ পেয়েছি। রোমের রাজপথ আর আমাদের গ্রামের প্রজাপথ ঠিক একই। কোন পার্থক্য নেই। আছে শুধু শোষণ করে জীবন খনিজ নেয়া...

আমি পথ হারানো মানুষ -পথ হারাই। আবার নতুন পথও পেয়ে যাই। মাঠে যাই, সমুদ্রে যাই। আকাশের দিকে চেয়ে আকাশ হব ভেবেছি, সমুদ্রের কাছে যেয়ে ভেবেছি সমুদ্র হব। কিন্তু বাবা বলতেন এদের চেয়েও বড় হও।

পথ হারাবো বলেই তো পথে নেমেছি, পথ না হারালে নতুন পথের সৃজন কেমনে হবে। তোমার বাড়ির পথ ধরেই হাঁটব। তুমি মোড়ের মাথায় ঘামমেখে চেয়ে থেকো আমাকে তোমার করে পাবার প্রত্যাশায়... আমি কেমন করে তোমার হব বল, আমি যে সবার। আমি যে ভোগীর চেয়ে বড় বেশি ঋণী।

আমি গন্তব্যের পথ ভুলেছি, চলতে হবে দূর হতে বহু দূরে...