কোজাগরী সংখ্যা
বঙ্গ রাখাল
গন্তব্য বহুদূরে...
আজ কাল কয়েকদিন পার হলেই কি যেন মনে হয়। সেদিন তুমি বলেছিলে শহুরে হও, আমি হতেও চেয়েছি। কিন্তু বাবা? না, বাবাকে ভুলতে নয়। বাবাকে নিয়েই শহুরে হব। তুমি আমার পাহাড়ের পথ দেখালে, আমি কিন্তু পাহাড় চিনি না। পাহাড়ে বোধ হয় যাওয়া হবে না; কিন্তু কেন বা কিসের জন্য তা বলতে পারব না। তুমি সমুদ্রের কাছে যেতে বলেছিলে।
আমিও মনে মনে ভেবেছিলাম সমুদ্রে যাব। সমুদ্র হব। বাবা মা আমায় ছেলেবেলা সখ করে নাম রেখেছিল সমুদ্র। আমি সমুদ্র হব আর তুমি
হবে তার জল।
তোমার বাড়ির পথ ভুলেছি। যেপথ ধরে তুমি রোমের পথ খুঁজে চলেছিলে। আমি পথের বাঁকে বাঁকে তোমার ক্লান্ত ঘামের ঘ্রাণ পেয়েছি। রোমের রাজপথ আর আমাদের গ্রামের প্রজাপথ ঠিক একই। কোন পার্থক্য নেই। আছে শুধু শোষণ করে জীবন খনিজ নেয়া...
আমি পথ হারানো মানুষ -পথ হারাই। আবার নতুন পথও পেয়ে যাই। মাঠে যাই, সমুদ্রে যাই। আকাশের দিকে চেয়ে আকাশ হব ভেবেছি, সমুদ্রের কাছে যেয়ে ভেবেছি সমুদ্র হব। কিন্তু বাবা বলতেন এদের চেয়েও বড় হও।
পথ হারাবো বলেই তো পথে নেমেছি, পথ না হারালে নতুন পথের সৃজন কেমনে হবে। তোমার বাড়ির পথ ধরেই হাঁটব। তুমি মোড়ের মাথায় ঘামমেখে চেয়ে থেকো আমাকে তোমার করে পাবার প্রত্যাশায়...
আমি কেমন করে তোমার হব বল, আমি যে সবার। আমি যে ভোগীর চেয়ে বড় বেশি ঋণী।
আমি গন্তব্যের পথ ভুলেছি, চলতে হবে দূর হতে বহু দূরে...
No comments:
Post a Comment