কোজাগরী
করচা
সংবাদ মাধ্যমে জবর খবর,মা লক্ষী ইন্টারভিউতে বলেছেন-“লক্ষীমন্ত,শান্ত,নির্বাক মেয়ে থুরি বউ,কি করে বৃহস্পতি আনে বলো দেকি!!!”
এই নিয়ে মর্ত্যে তুলকালাম।
এদিকে ইন্টারভিউতে এও শোনা যাচ্ছে তিনি বলেছেন-“মিনে করা সিঁদুর গাছাটি বড্ড প্রিয় কিন্ত না হাতে ধরে থাকতে রাজি নই কারণ আইডেন্টিফিকেশন মার্ক নয় ওটা,যত্নে রাখা ভালোবাসা,তাই আগলে রাখি অন্তরে।”
মিডিয়ার অনর্গল প্রশ্নে নাকি বেশ গর্জে উঠেছিলো তাঁর নীরব ওষ্ঠ।
সেই ভিডিও সামনে আসায় মর্ত্যবাসী বুঝে গেছে,লক্ষীরও রাগের প্রকাশ ঘটে।
বেশ রাগেই নাকি মালক্ষী বলেছেন-“বেকারত্ব আর দুমুঠো অন্নসংস্থান করতে অক্ষম দেশে পুজো আচ্চায় খরচ হয়ে যায় লাখ টাকা,ধিক ভন্ডামো।কৃষকের বরাদ্দ পঁচিশ টাকা,প্যাকেজিং করিয়ে ঝাচকচকে শপিংমলে চাল সব্জি বিক্রি হয় একশো টাকায়।যে ফলন করালো,তার নুন আনতে পান্তা ফোরায়,অথচ নিয়ম করে সে ঘরে তুলসীতলায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালিয়ে বৃহস্পতিবার পড়া হয় পাঁচালী!এসব
অবিলম্বে বন্ধ হোক”।
অনেক কষ্টে তাঁকে শান্ত করার পর,মা লক্ষী আদর করে বলেছেন “শোনধন-ধান্যে ভরাতে গেলে উপযুক্ত কথা আর চটপটে হওয়া খুব প্রয়োজন।বাড়ির বউ হয়ে আলতায় পা ডুবিয়ে রাখলে বাপু পেডিকিওর করার টাকার জন্য শুনতে ইহবে!”
আজকের লক্ষীর পায়ে গড়াচ্ছে অলক্তরাগ, কপালে সিঁদুর মোছা আনখ যন্ত্রণা,উথাল পাথাল ব্যথা নিয়েও সে তৈরী করে প্রোজেক্ট রিপোর্ট,পাঁচ বছরের সন্তানের ভবিষ্যত তাঁর হাতে।
আজকের লক্ষী সাতটায় বাবুদের বাড়িতে কাজে ঢোকে,শাড়ী সরে যায় দেখা যায় হাটু,ওরা হেঁটে যায় দুবেলা দুমুঠো খেতে পাওয়ার জন্য।
আজকের লক্ষী অসতী......অলক্ষী।আবার স্নেহের পরশে,সু-চিন্তায় সে শান্ত,স্মীত হাস্যে প্রেয়সী...ঘর আলো করে রাখা নব বধুবা মেয়ে।
“'কে জেগে আছো?”এই অর্থকোজাগরী শব্দের তাই আজকের লক্ষী ঘুরে দেখে চেতনা জাগছে কি সংস্কারাচ্ছন্নমনে? প্রতিবাদ জাগছে কি অন্ধকারের বিরুদ্ধে?শুভ জাগছে কি প্রদীপের তাপে?সর্বোপরি মনুষ্যত্ব জাগছে কি দ্বিচারীতা নাশ করে?অন্যদিকে আলতা রাঙা পায়ে তিনি হাইহীল পড়ে দেখতে ব্যস্ত ঠিকঠাক হাটতে পারছেন কিনা।
No comments:
Post a Comment