Friday, 13 October 2023

উৎসব সংখ্যা ১৪৩০ : মুক্তগদ্য, সৌমী দাস

 


বুলা মুখোপাধ্যায় ( তথ্যসূত্র)
 সৌমী দাস


নাম-না জানা হলদে আঁচল গোধূলির আগমনে নিজেকে গোটালেই একরঙা সন্ধ্যামণি বিছিয়ে দেয় নিজের আঁচল। এদের দু'জনকে পরম ভালোবাসায় সিক্ত করে ইতিহাসের মাটিকে আঁকড়ে ধরে যে, সে গৈরিকাভ রঙ্গন। ওরা দোলায় ঐতিহ্যের চামর।

বেশ সম্ভ্রমপূর্ণ দৃষ্টি ছিল গ্রামের মানুষের তাঁর প্রতি। গ্রামে যাতায়াতের সুবাদে বিদ্যানুরাগের আভিজাত্যে তিনি সাধারণ ব্রাহ্মণ পরিবারগুলির কাছে ছিলেন নমস্য। মুখোপাধ্যায় পরিবারের জীবনে ছিল মেঠো সুর। এত গাছ-গাছালির জীবনে পোষ্যরাও ছিল সুখে-শান্তিতে। ঘরে সিন্দুকের ব্যবহার ছিল না, ওসব ছিল রাজা-রাজরার ব্যাপার। পুঁথি কিছু ুএকটা হাতে এল বটে। রোজকার কাজের জিনিস তো নয়! তাই, স্থান পেল মাচায়।

মাচা আজ চাক্ষুষ করার সুযোগ নেই।কিন্তু, নিজের অজ্ঞাতে গোয়ালঘরের মাচায় সেদিন তুলে রেখেছিলেন যে পুঁথি, পঞ্চদশ শতাব্দীর বাংলা আখ্যায়িকা কাব্যের তা হল প্রথম নিদর্শন। দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের জীবনের অযাচিত সম্পদটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটাল বসন্তরঞ্জন রায়ের হাত ধরে।

দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের তৃতীয় প্রজন্মের আজ কংক্রিটের বসতভিটে। কিন্তু, ছাদে তারাও ওঠেনি। শ্বশুরমশাই হারাধন মুখোপাধ্যায় মজ্জাগত করে দিয়েছেন যে শিক্ষা, তা হল, ইতিহাসের পাঁচিল ভেঙে কখনো ভবিষ্যতের চূড়ায় ওঠা যায় না। তাঁর পৌত্র ব্যবসায়িক আদান-প্রদানে আজও বিকিয়ে দেয়নি পরম্পরার ছাঁচ।

লোকশ্রুতি, শ্রীনিবাস আচার্য্যের মধ্যমপুত্রের দৌহিত্রবংশ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর মহকুমার কাঁকিলা গ্রাম নিবাসী মুখোপাধ্যায় পরিবার। আজও রীতি মেনে রাধারমণ ও রাধারাণী যুগলে আষাঢ়, কার্তিক ও ফাল্গুনের ১১-তে এই গ্রামজীবনের অঙ্গে অঙ্গে 'শ্রীকৃষ্ণকীর্ত্তনে'র প্রত্যুক্তিময় কাব্যসুধা পরিবেশন করে।






No comments:

Post a Comment