বনমালী
টেলিগ্রাম পেয়েই স্বর্গ থেকে ব্যোমকেশ নেমে এলেন শান্তিনিকেতনে। নোবেল চুরির অনুসন্ধান নয়; এক মায়াবৃক্ষের রহস্য উন্মোচনে। নন্দনকাননে নেই এমন গাছ পৃথিবীতে কোত্থেকে এলো? তিনি নিজেও খানিকটা অবাক কিন্তু সংযত। পরদিন সাতসকালে বাগানের মালী ভানু সিং-এর সাথে বেরোলেন প্রাতভ্রমণে। আলো-আঁধারি সেই চরাচর লক্ষ কোটি জোনাকি আবৃত। সামনে এসে দাঁড়ালেন। অনুভবের সাতটি রঙ সাতটি ফুলে বর্ণময় এক বোধিবৃক্ষ -- যেন ইন্দ্রধনু। একটিকে স্পর্শ করতেই দেহমনে প্রেম জেগে ওঠে; অন্যটির দিকে তাকালে যেন পূজার অঞ্জলি; পাশেই পান্না রঙা ঋতু-প্রকৃতি; আরেকটি ওই নিচে -- বিচিত্র তার প্রকাশ; ওপাশে স্বদেশের গরিমা চুঁইয়ে পড়ছে; গোড়ায় আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন। আচমকা, হাওয়ার দোলায় ফুলগুলি সুরে সুরে বেজে উঠলো। গোয়েন্দা হতবাক। ভানুকে দিলেন মাটি খোঁড়ার নির্দেশ। উঠে এলো জলজ্যান্ত পাণ্ডুলিপি গীতবিতান। গোয়েন্দা আপ্লুত। মালী ভাবলেশহীন। বললে - "ও তুই নিয়ে যা, আমি মরে গেলে এর অপব্যবহার হবে।"
No comments:
Post a Comment