Monday, 9 May 2022

২৫ শে বৈশাখ সংখ্যা ≈ নাসরিন নাজমা চৌধুরী

|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ||   নাসরিন নাজমা চৌধুরী



পরাগপাখি ৪৫

আরও একবার ছুঁয়ে দেবে সেই প্রত্যয়ে শুধু
আগলাই আবছায়া একটু আঁধার,
পুরাতন সব অভিমান।

আরও একবার হাতে হাত হেঁটে যাব চন্দ্রকলায়
মেখে নেব প্রথম কিরণ
শুধু সেই আশ্বাসে চোখ মেলি সূর্য উদয়ে।

জানি অবসান নেই এই বিরহকালের,
জানি আসবে না কোনোদিনই পরাগকিশোর
তথাপি আর সব কাজ ফেলে
অপেক্ষা আয়োজন নিয়ে
চেয়ে থাকি সিংহদুয়ারে।


পরাগপাখি ৪৬

নোনাধরা পাঁজরের ধার ঘেঁষে আজও
হাসনুহানার মিঠে হাওয়া 
পার্থিব সন্ধ্যায় ছুঁয়ে দেয় চাঁদের শরীর,
নিঃসঙ্গ,স্থির অবসর।

বহমান স্রোতে ক্ষয়ে যাওয়া স্মৃতি ভাসে ,
ফিকে হয়ে আসা কিছু ছবি 
বাঙ্ময় কী যন্ত্রনায়!

কিছু ব্যথা নিরাময়হীন, বহুদূরব্যাপী।
উপশম বলে যাকে ভ্রম হয়েছিল,
আলোয় তাকিয়ে দেখি   
অলীক কিশোর আর নেই কোনোখানে।
শুধু তারই অবয়ব ধরে  
আকর্ণ বিদ্রুপে দাঁড়িয়ে রয়েছে অভিশাপ।


পরাগপাখি ৪৭

কত কথা বাকি রয়ে গেল ;
মুখোমুখি ,আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে
নির্জন থইথই ঘাট,
এক আকাশ স্বপ্নকে সাজাবার দিন
বাকি আছে বহুকাল ধরে।

মুখরিত সেই সব দিন ,
কৃষ্ণচূড়ায় রাঙা উজ্জ্বল বসন্তদিন
রূপকথা মনে হয় আজ।

পরাগকিশোর ,সেই যে  
প্ৰথমবারে দিয়েছিলে রক্ত গুলাল
শৈত্যের এতকাল পরে
ধূসর হয়েছে তার রঙ।


পরাগপাখি ৪৮

আজ থেকে বহুবছরের পরে ধরো যদি
দেখা হয় বকুলের পথে
ধবধবে চুল ,কিঞ্চিৎ নুয়ে পড়া তুমি ,
সময়ের ঘষা লেগে ক্ষয়ে যাওয়া আমি
মুখোমুখি আরও একবার ,
সেদিনও কি থেমে যাবে
সময়ের বহমান স্রোত ! সব কোলাহল
বুড়ো ঘড়িটির মত অকারন স্তব্ধ তবে!

পশ্চিমে হেলে পড়া দীর্ঘ ছায়ার পিছে ছুটি,
পল ,অনুপল গুনি আঙুলের কড়ে
কত কত সূর্যোদয়ের পরে ,
আরও কত একলা গোধূলী আলো শেষে
দেখা হবে অলীক প্রেমিক?
সেই দিন সব ব্যথা গান হবে 
পরাগপাখির ডানা ছুঁয়ে,
ক্ষতরক্তের দাগ যত মুছে দেবে অমৃতের ঘ্রাণ।
অপার প্রেমিক ,মনে রেখো সেই দিন 
ধ্বংসস্তুপের বাধা ঠেলে পুনর্জন্ম নেবে 
আমাদের সব অনুরাগ।



No comments:

Post a Comment