Thursday, 28 May 2020

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ২৮-৫-২০২০

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ আসুন। সকলে ভালো থাকি।সুস্থ থাকি। সুস্থ রাখি। বদ্ধ অঙ্গিকার করি...
১৪৯ তম প্রয়াস
                     হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


পাখি রঙের আকাশ ------ ৭৬

প্রতিটা কথা এক একটা দাগ। একপ্রান্ত থেকে শুরু করে আর এক প্রান্ত কোথায় সেই দাগ কতদূর চলে গেছে কেউ জানে না। দাগ চলছে। দাগ চলছে। সকাল থেকে শুরু করে দুপুর বিকেল সন্ধে ------ চলেই যাচ্ছে। কোনো থামা নেই। কোন রাস্তা দিয়ে দাগ যায় ? যে রঙ তুলি দিয়ে আঁচড় দেয় সেও জানে না দাগ কোথায় কতদূর যাবে। মনের আনন্দে দাগ যায় মেঠো পথ ধরে। তারপর মাথায় যেন কি একটা নড়ে ওঠে। ধুলোপথের পা ধুয়ে দাগ এখন পিচে। যায় যায়, নাক মুখ শুকিয়ে আসে। তবুও উচ্ছ্বাসে হাত তোলে। তারপর হাত দাগের মতলব ধরে ফেললে দাগ আবার বাউল গানে রাঙামাটি। সারা দিনরাত ক্যানভাস জুড়ে দাগ পড়ে যায়। দাগের মিছিল। কিন্তু একটাও রাস্তা নয়। তবুও দিনেরবেলায় সকলের চোখের সামনে পাঁচমাথার মোড়ে মড়ার মতো পড়ে থাকে।

                                                                      
                                                                  রুমা ঢ্যাং অধিকারী

পরিখান্তর

নির্বাপণটুকু মুছে যাবে বলে 
ভায়োলেট ফুল 
বিকেলের নিমন্ত্রণ সারে... ফুলেল পরিখা দেখে
ভেঙে ফেললাম দুখুরামের বিন্দু পরিষদ
  
ততটুকুই জাঁকড়
ফিতের রাশ টেনে যতটা তাবড় লেখা যায়

ধোঁয়ার বাসরে
স্মৃতির কাঁসরে

স্লাইস্ড প্রসঙ্গে আর কোন করাতের কথা
আজ না হয় থাক... 

ডার্ক ফ্যান্টাসিজম

নির্জন ছাপিয়ে আসা কোন উদগার
যেন ভারহীন এক জানলা   

এই পরিমাণ ও পরিণামের তীব্রতা
                পাখিজন্ম বোঝেনি

প্রবাল গিলে খেয়েছে 
সিন্ধুগামী অন্ধকার...

তারার দূরত্বে ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছে 
ডার্ক ফ্যান্টাসিজম


পরিযায়ী আবেগ

কখনও দুপুরের গল্পগুলো
ঘেমোটে বাতিকের নামাঙ্কিত এক আগুনের 

এ শোধমূলক নয়
পাঁপড় সেঁকারও নয় 

পরিযায়ী আবেগ পুড়ে যাওয়া 
একেকটি আশ্লেষমাত্র

ছুঁচের হোল বিনিময়ে উঠে আসা 
বটের স্থাপত্যকীর্তি... এখন আর অজানা নয়

ঘড়ির সচেতন গা চেটেপুটে 
পেরিয়ে যাওয়া তবু অবিচল

চাঁদ ও মঙ্গল 
আপনি যেভাবে দেখবেন! 

শিকার

নির্মেঘের ঘনত্বে ভাসমান গুটিকয়েক ফাতনার চেয়ে
পাঠের জীবনানন্দ ঢের ভালো 

সান্ত্রীরা উন্মুখ 
বিনাশের ডজনখানেক উপসংহার নিয়ে
তবু প্রহারকের হাতে মাস কেটে যায় 
প্লুটোর দূরত্বটুকু মুছে

সাইরেনের প্রোটোকল ভেঙে প্রতিটা নাগরিক 
পাখি শরীর ফেলে রাখে দাওয়ায়

আর, লয়বাহকের কাঁধে বিশালতার 
ঘুম ভাঙলো... শিকারের সন্ধানে


নিরাপদেষু 

খেরো খাতার অবসর প্রসঙ্গে কথা চলছিল
সন্ধের লিড নিয়ে 

দূরে জেগে উঠলো স্বজনপাড়া

এভাবেই লতাপাতায় পুষ্ট খোঁজটুকু সারা হলে
কোডেড ঠোঁটে ফুটে ওঠে 
সহস্র নীরবতা 

কিন্তু, রাতের পাঁজরে 
সমানে বেজে চলে বিষণ্ণ ভায়োলিন...

এটুকুই নিরাপদ, ধোঁয়ার অভিমুখ থেকে
কিছুটা সরে এসে 


                                             সুষ্মিতা রায়চৌধুরী

উপলব্ধি ডট প্যানডেমি

এভাবে আর পারা যায় বলতো,লক হওয়া কলকাতায় তো আমার শরীর ডাউন হয়ে যাচ্ছে”-মিনুদি কাছে থাকলেও কাজেআসছেনা।মায়ের কড়া নির্দেশ,কে বললেও যেনো লুকিয়েও কারোর বাড়ি কাজ না করতে যায়।এব্যাপারে জ্ঞান টনটনে পয়ষট্টিরলতিকাদেবীর।কিন্তু হাঁটুর ব্যথা আর জেনারেসন বার্ধক্য তাকে পরাস্ত করে ফেলছে প্রায়।সত্তরের সমীরবাবু ডায়ালেসিসেরপেশেন্ট হওয়ায় এখন বাজারের কাজটুকুও লতিকাদেবীর দ্বায়িত্ব।প্রতিরোধ ক্ষমতা কার যে বেশী তা নিয়ে নিউজার্সিতে থাকাচিন্তিত-বিহ্বল কুহু শুধু আশ্বাস দেয় তারা ভালো আছে,ওঁরা ভালো থাকলেই।

আজও নির্দিষ্ট সময় কল করতেই রাগ আর কান্নায় ভেঙে পড়লো মা।কাল বাবার ডায়ালেসিসের তারিখ এদিকে কোনো গাড়ীপাওয়া যাচ্ছেনা।যার থেকে গাড়ী নেয় সে গাড়ী বার করছেনা আর চেনাশোনার মধ্যে কারোর নিজের গাড়ী নেই।ডায়ালেসিসেরপর বাবা একদম দাঁড়াতে পারেনা।গাড়ী ছাড়া কি করবে এই নিয়ে নাজেহাল মা।এদিকে কালই মিনুদি আসতে চায় একমাসেরটাকা নিতে।বাচ্চাটাকে একগ্রাস ভাত দেওয়ার জন্য চাল কেনা টাকা নেই।মা ভয়ে কাঁপছে,যদি থাবা বসায় অসুখ।এতদিন কুহুরকথামতন শুধু কার্ড দিয়ে বাজার করেছে।ব্যাঙ্কে যাবে কখন আর বাবাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ীর ব্যবস্থা করবে কখন।মিনুদিএমন করতে পারলো!কুহু স্তব্ধ,অসহায়।

পরের দিন সকালে মাকে ফোন করতেই কেঁদে ফেলে মা।মিনুদির বর রিক্সা করে নিয়ে এসেছে বাবাকে ডায়ালেসিসের জন্য।বাইরেদাঁড়িয়ে আছে সে,আবার বাড়ি নিয়ে তবে ফিরবে।
কুহু ফোন করে মিনুদিকে।ওপাড়ে শ্বাসের গলায় মিনুদি বলে,”আরে দিদিভাই তারিখটা তো আমার মাথায় আছে নাকি”!
বাবা বাড়ি ফিরতেই কুহুকে বলে,”মা ব্যাঙ্ক থেকে এসে ভালো করে রিস্কার হয়েছে।অপরাধবোধ না শিক্ষা নি চল আমরা এটারথেকে।
দুজনেই গেয়ে ওঠে,”হাল ছেড়ো না বন্ধুবরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে/দেখা হবে তোমায় আমায় অন্য গানের ভোরে”!






No comments:

Post a Comment