Thursday 18 June 2020

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ১৮।০৬।২০২০

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ
আসুন সকলে ভালো থাকি। সুস্থ থাকি। সুস্থ রাখি। বদ্ধ অঙ্গিকার করি...

                                হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

পাখি রঙের আকাশ  ------  ৮৭

আগুনের ভেতর থেকে যে হাতগুলো বেরিয়ে আসে তাদের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় আলাপপুরের এক সান্ধ্য আড্ডায়। যার গায়ে সেই আগুন দেখি সে সেদিন তিনদিনের অভুক্ত। মনে পড়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পর হ্যারিকেনের আলোয় তার মুখ দেখেছিলাম। বলেছিল দেখা হবে। হয়েছিল দেখা। হাতে হাত রাখতে পারি নি। সেই সন্ধ্যায় এক নদীর সঙ্গেও আমার দেখা হয়েছিল। একদিন শুধু পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলাম মাত্র। ভারসাম্য বজায় রাখতে পারি নি। জলে আগুনে খবর এসেছিল, আমি হাঁটতে পারি কিনা। শেষ কবে একা একা হেঁটেছি মনে পড়ে না। মাথা নিচু করেছিলাম। আগুনে হাত দেওয়ার আগে হাঁটা ভালো ------ আলাপপুরের সন্ধ্যা আরও গভীর হয়ে এসেছিল। নদী কোনো কথা বলে নি। বুঝেছিলাম, এটাই আগুন আর জলের সমীকরণ।

                                  সুজল সাহা

জগদ্ধাত্রীগ্রাম

ঈশ্বরীকে চিনি। জগদ্ধাত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রাচীন বটতলায় শিবলিঙ্গের সামনে নেংটিপরা উন্মাদ। পাশেই তারামায়ের মন্দির। মাকু আর লাঙল এখানে বিরাম পায় না। ভাঙাচোরা সাইকেল নিয়ে ঈশ্বরীর জগৎটা ঘুরে ফিরে দেখি। বিস্তৃত কলাবাগান অস্থির ছায়ার চলন নীরব আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিমাপ করি একা। মাঝরাত্তিরে ছাদের টবে ফোটা জোড়া জোড়া মিলিফুল এক লহমায় আমার সমস্ত দুঃখ মুছে দেয়। তারামায়ের পায়ের কাছে বসে নির্বিকার মৌনতার পাঠ নিই।


অনুরাধা নক্ষত্রের গান

তুষারনদীর জলে অনুরাধা নক্ষত্রের গান। ঊষার নীলরঙের ওড়না বাতাসে স্নিগ্ধতা ছড়ায়। ধাতব বিগ্রহের মায়া কাটিয়ে হিমশীতল জলে রাঙামুখ দেখি। বিষাদের রঙ মুছে চাঁদ তারা শুভ্রকামনার আগুন ছড়ায়। ফেলে আসা পথের গভীর মুগ্ধতা নিঃসঙ্গ তোমাকেই ভাবি, প্রিয়মন।


জলঙ্গীর চোখ

সুপারি গাছের বিপ্রতীপে জ্যোৎস্নার তন্তুজাল উথালপাতাল নয়ের দশক অনিবার্য মৃত্যুফাঁদ। ডোবার আগুন ছুঁয়ে নারকেল গাছ অন্ধকার জলঙ্গীর চোখ। ওদিকে দূরের পাহাড় যমুনেত্রী গঙ্গোত্রীর মোহময় দৃশ্য স্মৃতিকাতর আমাকে একটুও স্থির থাকতে দেয় না।


বৃশ্চিক রাশির তোমাকে

আইভিলতা পানাফুলের বাঁধনছেঁড়া হাহাকার শূন্য কলসের দম্ভ ঈর্ষার আগুনে পোড়ার ছবি দেখি। সহজ সরল ক্রমে ক্রমে বিশাল জটিল। সেই কেকা এই তটরেখা বিস্তর ফারাক জানি। কালরাত্রির উদ্বেগ উৎকণ্ঠা কালপুরুষের হাসি ছুঁয়ে তবু রিমঝিম বর্ষার আনন্দগান।



চূর্ণীনদীর পায়ের ছাপ

নক্ষত্রনামা তাহার সঙ্গে মিথুন রাশির কোনো যোগ নেই। যদিও দুজনে একই পথের পথিক। ফলিত গণিত অজৈব রসায়ন গুলে খাওয়া শ্রী শ্রী ঠাকুরের পায়ে মাথা ঠুকি। হাজার তামাশা রঙ্গরসে ভরা দুনিয়ার আজব ম্যাজিক দেখি। চূর্ণীনদীর পায়ের ছাপ বরাবর ঘন লতাপাতার জঙ্গল সর্পিল তোমাকে অদ্বিতীয় মনে হয়।

 সোনালী দাস সরকার   
গল্প 
অসময়ের 


নদীপাড়ে শ্রাবণ নামে। জলবায়ু বুঝে নঙ্গর থামায়। এতো জলেও তৃষা মেটেনা যখন নিশির কাছে আশ্রয় নেয়। হকচকিয়ে যায়! নিশি তো তপনের ত্যাজ্য কন্যা।সে কোন প্রভাতে হারিয়েছিল যেন আলো ফোটার আগে! বজ্রপাতের ঝলসে ওঠা রূপেও মোহিত হয় কেউ তা জানা ছিল না শ্রাবণের। শঙ্খ বাজিয়ে সন্ধ্যাতারায় মনের মনোকুঠিরে নিশি যাপন করে। প্রকৃতির ঝঞ্জাট তুঙ্গে তুলে। প্রেম ভালোলাগা কে প্রাধান্য দিয়ে।





No comments:

Post a Comment