Tuesday, 2 June 2020

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ০২।০৬।২০২০

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ 
আসুন সকলে ভালো থাকি। সুস্থ থাকি। সুস্থ রাখি। বদ্ধ অঙ্গিকার করি...

                                        বিশেষ সংখ্যা

মায়িশা তাসনিম ইসলাম



মানুষডাক

চুমুতে আহত পাখিরা সকাল কেঁদে ভাসায় কিচিরমিচির

এই সকাল, রাত বেদনার পোস্টমর্টেম নিয়ে আসা শৈত্যপ্রবাহ। শিশির ছুঁইয়ে ঠোঁটে একা ঘাস, বক্তৃতা খুনী পায়ে। শহরের সঙ্গদোষে উচ্ছেদ বৃদ্ধ চরে, বনমাতাল মানুষদের মাংসভুক নাঁচ। অফিস থেকে পরকীয়াজ্ঞানহীন বাস ফিরে যায় নাড়ি ও গ্রাম্য বিড়ির উচ্ছ্বাসে। নিপা ভাইরাসের মত প্রেমকে মহামারী করতে কবিরা বাদুড় হয়ে ঝুলে গেছে বঙ্গশিরে

চুমুতে আহত পাখিরা স্পন্দনে কাঁদে মানুষডাক, অন্ধ কৌশলে


ছায়াদোষ

দেখে কি নিয়েছো?
ছায়ার পরিশ্রম 

  ভেজাল দরজায়।

স্তন ছিলো তার চোখে
  চোখে গরায়নি জল, ফলাফলে

অদ্ভুত দৃশ্য! ছায়ারা নগ্ন বাঘিনীর শিকার 

শ্রমে ও বিভ্রমে, মাধুরী চিৎকার


পুনর্বাসন 

এখানে সামান্য অক্সিজেন হবে?
কিছু কৃষ্ণচূড়া অনুষঙ্গ 
বাতিজ্বালা জ্ঞানীর অনন্তকাল জেগে থাকা ঘর

এখানে কি ভিখারীর গানে ঈশ্বর আসেন অতিথি হয়ে?

সামান্য অক্সিজেন হবে?
যতটা আমার দম ফেটে জন্ম নিবে আরেক শিশু

                                      অরণী পঞ্চধ্যায়ী

সুহৃদ্

এই নিয়ে বার দশেক উড়ার চেষ্টা করলো সে, কিন্তু নিজের ভারসাম্য দামাল বাতাসের ধাক্কায় বেসামাল । দানবীয় ধূসর-কালো মেঘের বারংবার আঘাতে বিদীর্ণ অম্বরের অসহায় অবিশ্রান্ত কান্নার করুণ কৃপায় সে একদম ভিজে চুপসে গেছে ।  টানা কিছুদিন ঝোড়ো বৃষ্টির সৌজন্যে দানা জোটেনি তার সংসারে , তার ওপর বাতাসের খামখেয়ালিপনায় নিজের ছোট্ট নীড়টি বড়ই সংকটে ।কিন্তু পেটের জ্বালা বড় জ্বালা, তাই বাছাদের অস্ফুট ক্ষুধার আর্তি অগ্রাহ্য করতে না পেরে দুরু দুরু বুকে ক্লান্ত ডানায় ভর দিয়ে উড়ে এসেছে শক্তির খোঁজে ।শক্তির খোঁজ-ই বটে, খাদ্য শক্তি, তা নাহলে লালচে সাদা, নধর দেহ বোস বাড়ির হুলো বেড়াল গোলক বাবার সাথে লড়াই করবে কি করে ! পাড়ার সবাই ওকে ওই নামেই ডাকে ।সময়ে অসময়ে তাদের বাসার ঠিকানা দীঘির ধারের বুড়ো আম গাছটার নীচে গোলক বাবার অহংসর্বস্ব পায়চারী তাকে খুবই বিব্রত করে । তার বাছাদের কলরবে গোলক বাবার কম্পিত হুঙ্কারে সে হয়ে পড়ে ম্রিয়মান ।  এই বাতাসে তার নড়বড়ে বাসা যদি একবার ভেঙ্গে নীচে পড়ে, তাহলেই.....। উৎকণ্ঠাকে সংযত করে, খাবার ধরা ঠোঁটটিকে শক্ত করে সে ডানা মেললো শূন্যে। গোলক বাবার অযাচিত উপস্থিতি সে যত মনে করতে লাগলো তত বল পেলো শরীরে ।
গেল মাসের কালবৈশাখীর অতর্কিত হানা প্রায় গুঁড়িয়ে দিচ্ছিল তার সাধের স্বর্গকে । বুকের আড়ালে সেদিন ওই পৈশাচিক ঝড়ের হেনস্তা থেকে তার বাছাদের যদি আগলাতে পারে তবে গোলক বাবার অশুভ দৃষ্টি থেকে পারবে না ! গতি বাড়লো, এগিয়ে চললো মায়াময় গন্তব্যের দিকে । জীবনের নির্দিষ্ট গন্ডির কাছে আসতেই সে থমকে গেল ।বাতাসের ক্ষিপ্রতায় ভূমির সাথে সব সম্পর্ক মিটিয়ে প্রাণহীন শরীরে মুখ চুবিয়ে দীঘির মধ্যে পড়ে আছে বুড়ো আম গাছ ।জলের আলোড়নে প্রায় ডুবু ডুবু তার বাঁচার স্বপ্ন, তার খড়কুটোর বাসা । নিস্তেজ হয়ে এলো প্রাণ, ঝাপসা হলো অপলক দৃষ্টি । পাশবিক শূন্যতা গ্রাস করলো তার পরিপূর্ণ জীবনকে। সব হারানো ক্ষুদ্র প্রাণটি উদ্দেশ্যহীনভাবে উড়ে যাবার উদ্যোগ নিতেই হটাৎ-ই ভেসে এলো কলরব, তার বাছাদের কিচিরমিচির ধ্বনি । 


বোস বাড়ির উঠোনে তার বাছারা বড্ড নিরাপদ গোলক বাবার সান্নিধ্যে ।দীঘির জল-ভেজা শরীর উপেক্ষা করে গোলক ব্যস্ত তিনটি আগামী প্রজন্মকে স্নেহের উষ্ণ পরশে আগলে রাখতে ।

অভিজিৎ দাসকর্মকার

আমার ক্রাইসিস

রাস্তায় নতিস্বীকার পড়ছে একবিংশ শতাব্দীর শূন্য দশক।
আর
চর্যাপদের কবিতায়
   ব্যাসবাক্য গুলো হেঁটে যাচ্ছে নবনাজইড পাশ্চাত্য বরাবর

   আধারকার্ডের হলোগ্রামে সাঁতার কাটছে দৃষ্টি এড়ানো ছায়া
        আর আমার অভিশাপগুলো
                  চোয়াল ও ঈশানকোণের তিলে
                          কার্নিশের সাইলেন্ট মোডে
   কিংবা
   কাহ্নপাদের দশম স্তবকে সংরক্ষিত করেছি

সমুদ্রিক আলিঙ্গন করবো জলচ্ছাসি হাওয়াকে__
  দ্যাখো ওরা তাও বিশ্বাস করছে না।

      আমার স্থুলকোণে ঘুরে যাওয়া
এবং
      রান্নাঘরের উলম্ব জ্যামিতিতে
আমার ক্রাইসিস টপকে ঢুকে পড়েছে নিঝুম দুপুরের তথ্যঘাঁটা ঘুম___

শাহীন রায়হান

বর্ণমালার ইতিকথা

অর্ধেক শহীদ মিনার বিধ্বস্ত পড়ে আছে আহত বর্ণমালায়
অথচ এই বর্ণমালার হৃৎপিণ্ডসম
প্রতিটি বর্ণই আমার জন্মদাতা মা
যার অবরুদ্ধ জঠর ছিঁড়ে আমি আজ
অফুরন্ত কথা বলতে শিখেছি-
রাত্রির গাঢ়তম অন্ধকার ঠেলে নীরবে জেগে ওঠা
শহীদ মিনারে আজও আমি ভাষা শহীদের পদধ্বনি শুনি
শুনি রফিক সালাম বরকতের ঊর্দু পোড়ানো অগ্নি শ্লোগান।

আজও আমি প্রজ্জ্বলিত সূর্যের মুখোমুখি দাঁড়াই
রোদোজ্জ্বল এক নতুন দিনের আলিঙ্গনে
প্রিয়তম বাতাসে শুনি বায়ান্নর প্রতিধ্বনি
যেখানে ঊর্দুর কফিনে মহাসমারোহে বাঁজে
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

সোনালী দাস সরকার

প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা

সুনীল অম্বরে বিগ্রহ দেখি জ্যোতি তপনে
মহা শক্তি তুমি ঐশ্বরিক তারকার ভবনে! 

শঙ্খ ধ্বনি বিকশিত পদ্ম চাই প্রভাতীময়
আলপনা আঁকে আকাশপটে নানারূপময়!

এলো বুঝি হিমেল হাওয়াতে নব ঋতু ঘনায়
মক্তা ছড়াবে ভূতলে এবার শিশিরের কণায়!

শত ঝনঝটে প্রকৃতিস্থ ইচ্ছে নেই আনায়নে
হারায়ে দি আপন খেয়াল বাধ ভেঙে পলায়নে!

জারিজুরি প্রলোভনে মন নেই কাঁকন সনে
হিরে মানিক চোখের ভাসে ভাষাদের সঙ্গপনে!

 খেয়ালী প্রকৃতি আবেগে কেবলি অঙ্গে টানে
আয় আয় কবিতা বানাই আকাঙ্ক্ষীত এ প্রাণে!

অনামিকা নন্দী

বৃষ্টি ধুয়ে দিক
​            
তুমি বললে "এমন সময় মনকেমন করতে নেই " ​সত্যিই সময়টা বড় বিষন্ন,একটা অচেনা কালের পথ ধরে হাঁটছি আমরা ৷
​জীবনের যন্রনাগুলো ভীষণ ভাবে বেড়ে উঠেছে, মনের মাঝে সংশয় দানা বাঁধছে অবিরাম
"​লক্ষ্য"পথে হাঁটতে গিয়ে বারবার হোঁচট খেয়ে পথভ্রষ্ট হই ..

​ভাবতে অবাক লাগে.... যে পৃথিবীকে শিশুর বাসযোগ্য করতে চেয়েছিলেন কবি, সেই পৃথিবীর পাঁজরে পাঁজরে বাসা নিয়েছে 'কর্কট​রোগ'
​এখন"মৃত্যুভেলায়"প্রথম আলো দেখে নবজাতক !
​ভয়ের অশরীরী আত্মারা তাড়া করে বেড়ায় দিকেদিকে,অভাবের আস্তিনে জমা হয় খিদের ছাই

​এই ভেঙে পড়া কালের হাত ধরে চলতে চলতে তোমার সাথে দেখা হওয়ার দিন ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে, বুকের মাঝে ছলাৎ ছলাৎ বেজে ওঠে মনখারাপের সুর ৷
​তবুও স্থবির ভাবনারা ফিসফিস করে বলে.... এক পশলা বৃষ্টি ধুয়ে দিক পৃথিবীর আজন্ম অসুখ ৷ 

অরূপ 

সাদা পৃষ্ঠা 

পৃথিবী সাদা পৃষ্ঠার উপর শুয়ে ,
পাথর স্থির ক্লীব পুরুষের মত,
পুরাণে যা লেখা তাই স্থির বিশ্বাস 
বাতাসই একমাত্র সার্বভৌম
এ কেমন কাঠামো,এপার ও পারে তুমি আর আমি!
অনিল বিষে জর্জরিত শরীর 
ঘোলাটে হলুদ হল দৃষ্টি ।

শ্বাপদের  মত  হানা দেয় হতাশা 
জীবন লডুর অনাবিল সাপসিঁড়ি,
লেখার মুখোমুখি  বসি ,লেখা খেলা হয় 
চিলের  থেকে শেখা বিশ্বাসঘাতকতা;
দৃষ্টি আমায় ব্যাধের তীরে বিদ্ধ করে 
সাদা পৃষ্ঠা র কাছে নত জানু হয়ে বসে থাকি
কখনো তো লেখা আমায় ডেকে নেবে

পারমিতা ভট্টাচার্য

বুকে গোলাপ গন্ধ আঁকি......

পাইনের গহীন অরণ্যে চলো হারিয়ে যাই
শ্যাওলা - পুরু কাণ্ড ছুঁয়ে 
ঘুরপাক খায় চোখের দুরূহ সংকেত.....

যেখানে প্রতিবিম্ব স্বচ্ছতোয়া বিধৌত
সেখানে নগ্ন হতে বাঁধা কোথায়?

ফিরে আসার পথে দ্বিধা অকপট না হলে
         সে ফেরা আসল ফেরা নয়.....
               তা আত্মসমর্পণ......

আইস কিউব ঠোঁট ছুঁয়ে গেলে
   কাঠিন্য ভেসে যায় অলকানন্দায়.....

আমিও তো নিছকই মানুষ.....

নির্জন পাহাড়ের বুকে নিজেকে সঁপে
 অতৃপ্ত বুকে গোলাপ গন্ধ আঁকতে 
               তবে বাধা কোথায়??

 পৃথা চট্টোপাধ্যায় 

মানবী সকালে 

ভোরবেলা দরজা খুলতেই 
             সজীব বাতাস লাগে গায়ে
অপূর্ব এক আলো মানব এসে দাঁড়ায়
                                   নামহীন 
           বৈশালী নগরীর স্তব্ধতায়।

আধফোটা আলোয় পথে নামি
সামনের পথ ধরে হেঁটে যাই অবিরল 
            কোন এক মানবী সকালে 
চরাচর ভেসে যায় সুগন্ধি  সবুজে 
পায়ে পায়ে বাজে ঘাসজল 
               নীল তারা খসে পড়ে 
ক্রমশই হেঁটে যাই আলোর অন্দরে 
কত রং গাছে গাছে এঁকে দেয়
                           বাসমতী ফুল


Soma Manna


I Love to Love You

I love to see you filled with
Knowledge and uniqueness.
I love to see you covered with
Purity and sacredness.
I love to touch your mildness -
I love to drink your kindness.
I love your heart filled with
Love and life.
I love to love you with
All my heart and life.







No comments:

Post a Comment