Saturday 13 June 2020

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ১৩।০৬।২০২০

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ
আসুন সকলে ভালো থাকি। সুস্থ থাকি। সুস্থ রাখি। বদ্ধ অঙ্গিকার করি...

                               হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

পাখি রঙের আকাশ  -------  ৮৩

জানলার গল্পে একটা দুটো তিনটে চারটে বটগাছ থাকে। কখনও নিজের খুশিমতো অতিরিক্ত দুএকটা গাছ বসিয়ে নিই। গাছের পাতাগুলো জানলা থেকে ছাতার মতো দেখায়। পাখিগুলো বাড়ি ফিরে ছাতার নিচে বসে গাছের আদর খায়। সবাই যে সন্ধেয় ফেরে তা কিন্তু নয়। কাউকে কাউকে দুপুরেও ফিরে যেতে দেখি। বুঝতে পারি আজ বাড়িতে জন্মদিন। সেদিন কত হাওয়া। হালকা চুলের মতো পাতাগুলো উড়তে উড়তে যেন কোথায় ভেসে যায়। বুঝতে পারি বাকিদের খুঁজতে বেরিয়েছে সে। ফিরে আসতে আসতে আলো জ্বলে যায়। তখন সময় কোথায় যেন হারিয়ে যায়।আসলে সবাই একছাতায় জড়ো হলেই জন্মদিন।
অমিত পাল 


আত্মঘাতী 

সবকিছু কি এখানেই থামবে দাদাঠাকুর, 
এই ভাসমান মেঘ, এই বৃষ্টি, চিতা, কবর, 
সেই তর্জনীর ইশারা, মন্দির মসজিদ, এই ঘূর্ণন? 
পশুপাখি, পোকামাকড় ওরাও কি থামবে, আর কি ফিরবেনা মানুষ মানুষীর কাছে? 

এভাবেও কি ক্রুশ কাঁধে চলে যাওয়া যায়, 
পূর্বপুরুষ কি মেনে নেবে এ প্রচ্ছন্ন বিদায়? 

দিকে দিকে রটে যায় রব আত্মসমর্পন, 
কি সহজেই ঝরাও নিজেকে, শুন্যের দহন। 

অবাধ অধীনতায় যতসব দীর্ঘয়ু যযাতিরা, 
বিরূপাক্ষ আকাশ দেখে তৃষিত চাতকেরা। 
সবকিছু কি এখানেই থামবে দাদাঠাকুর? 
অনশ্বর রাত্রির কফিনে দীর্ঘয়ু দিনের সুর। 

বিচার 

কত দিনরাত্রি পোয়াতি হলো কালচক্রে, 
কত অবোধ স্বপ্নের ভ্রূণহত্যা হলো নির্ঘুমে, 
কত দুর্ভিক্ষের অকাল বোধন হলো ফুটপাথে, 
কত নিঃসঙ্গ বাবুয়ানা থমকে গেলো বড় রাস্তায় !

চলো --
আজ শুন্যের তলোয়ার হাতে ছায়াযুদ্ধ খেলি। 
দেখি কে জেতে, তুমি না আমি? 
যদি হেরে যাই সে হবে আমার অলস কল্পনা, 
যুক্তি তক্কে তুলোধোনা করবো শুন্যতার। 

কত বেপরোয়া ধর্ম শান্ত হলো জানালার গরাদে, 
কত মুমূর্ষু রুদ্রাক্ষ পেলো কোমরে ঘুনসি বেঁধে, 
কত সেকাল একাল স্থির হয়ে থাকলো টেরাকোটায়, 
কত জলছবি যৌনতা আঁছড়ে পড়লো মৃত যোনিতে। 

চলো --
আজ গণসংগীত গাইতে গাইতে যুদ্ধ করি। দেখি কে জেতে, তুমি না আমি? 
যদি হেরে যাই সে হবে আমার মরুভুমি কণ্ঠ, 
যুক্তি তক্কে তুলোধোনা করবো গণসংগীতের !

কত ক্ষুধার্ত নেকড়ে খুঁজে পেলো দৃপ্ত যৌবনা প্রান্তর, 
কত পাঁজর ভাঙা ঝর্না ক্লান্ত হলো রোমাঞ্চকর যন্ত্রনায়, 
কত জটিল ঘেন্না ক্ষমা হলো অবোধ সরলতায়,
কত সম্মোহ মৃত্যু থমকে গেলো বিস্ময় ভবিতব্যে। 

চলো --
আজ উন্মোচিত করি নিজেকে প্রতিবিম্ব যুদ্ধে। 
দেখি কে জেতে, তুমি না আমি? 
যদি হেরে যাই সে হবে আমার দর্পিত স্তব্ধতা, 
যুক্তি তক্কে তুলোধোনা করবো প্রতিবিম্বের !

কথা দিচ্ছি 

কথা দিচ্ছি 
বিস্মৃতির গর্ভে হারিয়ে যাবোনা কেউ। 
নাটকের শেষ দৃশ্য এটা নয়, 
ফের জেগে উঠবে ক্লান্ত ভিসুভিয়াস। 

কথা দিচ্ছি 
অপেক্ষায় থাকো ফিরে আসবো ঠিকই। 
কিংবদন্তী হোমার চরিত্রে, সমৃদ্ধ হবে আসর, 
পুরনো কবিতা, গান ও কোরাসে। 

কথা দিচ্ছি 
দেবতায় প্রাণসঞ্চার হবে ঐন্দ্রজালিক অভিনয়ে। 
ফিরবে জিউস, ফিরবে রবীন্দ্রনাথ, 
ফের অশ্রু ঝড়াবে মোনালিসাও। 

কথা দিচ্ছি 
ফিরবে আদিম কারিগর ভগ্নস্তূপে। 
ফের ঘর বাঁধবে, কণ্ঠ ছাড়বে মদিরায়, 
বন্দি থাকবেনা কেউ অদৃশ্য খাঁচায়। 

কথা দিচ্ছি 
সব শস্যের দানা সাক্ষী থাকবে। 
ফের গল্প শোনাবে জীবন্ত কোদাল, 
ফিরবে ক্রুশোর মতোই পুরনো অভ্যেসে। 





No comments:

Post a Comment