Wednesday 17 June 2020

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ১৭।০৬।২০২০

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ
আসুন সকলে ভালো থাকি। সুস্থ থাকি। সুস্থ রাখি। বদ্ধ অঙ্গিকার করি...

                               হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

পাখি রঙের আকাশ  -----  ৮৬

এই রাস্তায় আছে কিছু গাছ আর একটা নদী। নদীকে নাম দিয়ে যারা নদী করেছে তারা সবাই এই নদীর কাছে এসে হাত পা ছড়িয়ে গল্প করতে করতে বলেছে, নদীর আবার নাম হয় নাকি, নদীর নাম নদী। ভালো নামও নদী আর ডাক নামেও সে আমাদের পছন্দমত যতদূর খুশি বয়ে যেতে পারে। এই পথ দিয়ে যতগুলো পা বয়ে গেছে তারা কেউ আর পিছন ফিরে তাকায় নি। তারা এখন দিগন্তের সবুজ পথ। আঙুল নাড়িয়ে পথহারা পাখিদের ঘরের সন্ধান দেয়। দুঃখপথে হাঁটতে হাঁটতে একছাতার নিচে পায়ের মিছিলে যখন পৃথিবী বেসামাল হয়ে যায় তখন তালগাছের ওপারে সবুজ গান ওঠে। ঘরে ফেরার গান।


                           সৌরভ ঘোষ  

লোকাল হান্ট

ফিতের মত পরিবার; দাদা, বাবা - কাক, 
ইতিহাস শিক্ষকের ক্ষমা নেই... 

কেটে কেটে গুটিয়ে নিয়েছি কেবল তার 
ঝিলঝিল নীল এল.সি.ডি. 
ডিজিটাল নিরাপত্তা রাজ্যের বাইরে...

ঠায় ঠাকুর হবার ক্ষমতা নেই, 
সবাই বসে বসেই গোল দিতে চায় !

মডেল হাঙর সবটুকু গিলতে এসে চোষে, বমি করে;
আমি উল্টেপাল্টে ভেজে ফেলি আমার স্থিতিস্থাপক চর্বি ।               


স্বর্গের মত

চুল্লী চুল্লী জলভাগ   
পর্বে পর্বে ব্লু গান, উড়োজাহাজ,
বারবার বারন আসছে ঘরে... 

খেয়ালে আক্রান্ত দিব্যি, 
হয়ত বলবে উড়নচণ্ডীপনা ;
আসলে ফরোয়ার্ড প্যাডেল ঘোরাতে ভালোবাসি স্যার

সাবওয়েতে মিলন মেলা, একপৃথিবী বোমা;
পিঁপড়ের ঢিবিতে জেহাদি প্রতিবেশী, 
ভেজাল অধিকৃত সীমা...

স্টিলের গামলা মাড় লাগা, আটপৌরে র...
এখানেই স্কিপিং খেলব 
জিতলে একটুকরো স্বর্গ, আমার দেশ, 
গঙ্গার লাল শ্যাওলাও জানে...   

ওয়েব সিরিজ

উদ্বেগ, জনপ্রিয় ধারাশিল্প মাধ্যম 
ছত্রিশ ইঞ্চি চওড়া পাটা ফুলে ওঠে 
নাকের ডগায় কিংবদন্তির মূল ঝোলে, নিরু হয় 
এবং সেই সাথে কথা, চিলছাদ বিশিষ্ট আবৃত্তিকার... 

হ্রস্ব-ই বলেছেন,' প্রাচীন মানুষদের মধ্যে 
তিনি ঐ ঔষধ আবিষ্কারের জৈবশক্তি'। 
ঠিকঠাক ঠিকানা ভুল ছিল 
সুতির নরম খনি আসলে কাচ ভালো মোছে।

দারুন সুন্দর বন 
ম্যানগ্রোভ অনেক থাবা আর আঁচড় সহ্য করেছে;
এর থেকে শুরু হল আপনি... 

সে বছর নিসর্গ ওয়েব সিরিজ অন্যত্র প্রকাশিত হল, 
বামপ্রন্থা নাম দিয়ে...                                                    


মেটাবলিজম

বিপদজনক চুপচাপে মাছ ডাকে বিড়াল  
বিজিত আর্যদের আরেকটি গান ফ্লপ
ফুলদান কমিটির চটচটে ভাব...

পাশা প্রমুখ খেলাতে জর্জর যাতায়াত 
খাঁ'এর অট্টরবে গজলের সংকলন প্রকাশ। 

কুকুর চুরুট বদলায় ভাদ্রের অস্ত্রাগারে...

গরিব কলোনি সংবাদ থেকে আমন্ত্রণ আসে,
তাদের মধ্যে চুলোচুলি খেলা;
বোঁদেখালি ঝাউ গন্ধ ঝরঝর চোখের কোণ 
বর্ডারে দাঁড়ায় কেউ একজন ল...

চাকর অন্দর দরজা ভেজিয়ে মাইনে দেন 
লাইনে অন্ত্যমিল পেলেও শব্দবোধ ক্ষীণ 
ষাঁড় গুঁতোয় মিথুন  ...      


অনিলের জন্যে ভাবনা হয়

উদ্ভট অতীত থেকে বেরিয়ে আসার পর
গন্ডীবাঁধা গঙ্গা অবধি দানবীয় দৌড়  ;
পার করতে হলে পুরুষ কুমির হতে হবে
নয়তো ত্রিনয়ন আটচালায় লোডশেডিং থাকবে...

কাঁপাকাঁপা কাগজে উলুধ্বনি লিখছে গরম চা
শহিদ ধোঁয়ায় সূর্য আবছা ;
যেন আহ্লাদী দেওয়ালে লালঘন চিঠি 
যেন মন্দির চত্ত্বরে ওয়ান ফর্টি ফোর মাদকতা ;
সন্ত্রাসী সন্ধ্যের বিজোড় হুইসেল... স্টেশন ছাড়ল সবে !  

বুকের মশাল জ্বেলে অনিল নিশ্চই ফিরবে । 

জরুরি দপ্তরে হাই উঠে নেমে যায় খিদে
বর্গিরা মায়ের কোলে ;
সাট্টাবাজ আর সরাইখানার কসাই মালিক চুমুকে গ্রেপ্তার 
ইয়ার্কির জমিদার বাড়ির দরজায় বিচিত্র বি.পি.এল সর্দার...

স্বাধীন দেশের গুনাকর ছবি হাতে অনিল ফিরতে পারে। 

মৌলিক যজ্ঞের হব্য খেয়ে ঘোড়া চড়ে ফিরবে বলেছিল
গলায় ঝুলবে নিরপেক্ষ লকেট তাতে ভাতৃবৃন্দ ।
বিষাক্ত সাপের ভয়ে যদি আত্মসমর্পণ করে
যদি ধর্ম ত্যাগ করে, তাহলে সময় কম।
ভোর হবে হবে, মাটি মেখে অনিল আর ফিরবেনা...! 

অদ্ভুত সম্ভাবনাকারীরা মৃদু আলো দেখেই
গাধা পিটিয়ে বলতে শুরু করেছে,
অনিল হয় রাক্ষস হয়েছে নয়তো ঘড়িয়াল...    

                             সুষ্মিতা রায়চৌধুরী

গল্প
একটু হীমশীতল ঊষ্মত

-তুষারঝড়ে আটকে পড়ে আমার ঘরে তালা-
          একটা অন্যরকম প্রেমের গল্প।হীমশীতলনাহ,অনেকটা রৈাদ্র-তুষার স্নানের মতন।
শীতকন্যে আর তুষারের গল্প।।

শীতকন্যে তখন সবে গুটি-গুটি শিশিরপায়ে ঢুকছে..হিম-কুয়াশা,চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমভাঙানি আলসেমি চোখে।
খেজুর রসে তার অঙ্গ দোলে,নরম কমলা কোয়া তার হিমের ভিজে স্পর্শ..
বাউল গানে আর নবান্নের সুরে সে নিয়ে আসে মনকেমনা সুর..
শীতকন্যে শুধায়,”কই গো তুষারঝড় দেখি তোমার কতো দাপট,আমি তো এলা,কই তুমি,?আচঁলে ভরে গুড়ের মোয়াএনেছি,তোমার সাস্কাতুন-আলাস্কা ঘুরে আসতে কি পথে অনেক দেরী?

-সূর্যশিখায় আধার আলোয় রঙবদলের খেলা
হীমেল মনে শুভ্রস্নাত হঠাৎ গোধূলি বেলা..-
            শীতের চিবুক ছুয়ে নেমে আসে অজস্র তুষার কণা..পাইন,ওক,হালেসিয়া,ম্যাগনোলিয়ায় যেনো হুড়মুড়িয়ে এসে পড়ে পাতাঝড়ার ধুম।
শান্ত শীতের রেশ অপলক দেখে সেই তীব্র প্রবল রোমান্টিকতা!!
শুরু হয় প্রবল তুষারপাত..
শীতের কাশ্মীরী চাদর আজ সাদা মলাটে ঢাকা।
নানা,এমনটা তো আদর নয়...
নীরবতা ভাঙে কুয়াশাছন্ন শীত।
বাসরশয্যায় আগুনের আদরে জড়িয়ে রে তুষারকণাকে..শান্ত হও 
স্বচ্ছ হয়ে গলতে থাকে নরম পেজাতুলোর মতন বরফ,প্রেমের উত্তাপে..হ্যা শীতের উত্তাপে।
মিঠেকড়া রোদে ক্ষণিকের রৌদ্র-তুষার স্নান..
একমুঠো হেমন্তের বকুলগন্ধ চারিদিকে।
শান্ত হয় তুষারঝড়,শীতের আলিঙ্গনে...

কিন্ত না,বেশিক্ষণ আটকাতে পারে না “তাকে” শীতের রেশম উলের বুনন।
আবার হুড়মুড়িয়ে ধেয়ে আসে নিশি কালো কোট-বুটের অবিনশ্বর ছায়া !
শুষ্ক হয় চারদিক...যে পরাগরেণু ভেজাতে পারতো,সে তো তুষার বর্ষণে ঝড়ে গেছে।
তুষারঝড়কে বারবার সামলাতে হ্রদয় ছোবে শীতকন্যে,তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে কাঁচের জানলার ওপারে ঠিক লেখা হবে ওদেরশীতল-তুষার কাব্য।
বারবার আঘাত হানলেও শীতকন্যে ফিরবে তুষার দাপটের বকুল-ফুল হয়ে..
-তুষার আদরে শরীর নোয়ায়,
প্রবল দাপট ছোঁয়ায়...
শীতকন্যে হেসে বলে এসব মানে জানি
আদরজলে লুকিয়ে রাখিস অলীক পাগলামি 



No comments:

Post a Comment