|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা | | ২-য় বর্ষ ||
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
পাখি রঙের আকাশ ------ ৯৭
গাছ নিয়ে যারা ভেবেছিল তাদের অনেকেরই পায়ের নিচে থেকে সরে গিয়েছিল মাটি। কেউ কেউ জানলায় রেখেছিল মন। কেউ কেউ জানলা ধরে সোজা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এদের অনেকেরই মাথা ছুঁয়েছিল আকাশ। এরা শুধু দেখেছিল গাছ। এদের অনেকেরই দৃষ্টি দিগন্তে ছিল বলে পায়ের নজর হারিয়েছিল পথ। কোনো এক ভোরে পাখিদের সঙ্গে তাদের ঘুম ভেঙেছিল। সবুজ জমি থেকে উঠে আসা কন্ঠস্বর শুনে তারা বন্ধু ভেবে কাছে গিয়েছিল। তারপর সবুজ স্রোতে ডুব দিয়ে তারা বুঝেছিল হাতে হাতে জোড়া লাগলে সব্বাই ফিরে পাবে মাটি।
অরণ্যা সরকারের কবিতা
আড়াল বিষয়ক কিছু পাঠ
যতবার বানানবিহীন গানের কাছে যাই
দেয়ালেরা গর্ভবতী হয়
তাচ্ছিল্যে সরে যায় বিষপাত্র
ছায়ায় লেগে থাকা সত্যেরা ডাক দিলে
খেলা শেষ হল ভাবি
ভাবি ছেড়ে যাচ্ছে পথভুল, ভীড়ের আড়াল
কেউ কোন স্বীকারোক্তি রাখে না বলে
সন্দেহে সন্ন্যাস জমিয়ে ক্যালেন্ডারে ফিরে যাই
ঝাঁপি খোলে যুবতী দেওয়াল
দৃশ্যেরা দূরবীন চোখে, আমাকেই খোঁজে আমার ভেতর
গতিবিভ্রম
শ্রুতিতে রেগুলেটর। উধাও স্বাদকোরকের রিমোট। ভিশনেও
একমুখী বাধ্যতা। বাতিস্তম্ভের নিচে ইচ্ছেমৃত্যুর ঝোপঝাড়। সাফ করি। থকথকে রাত।
জ্যান্ত। সুড়ঙ্গ জমাই। বড় করি। কোলাজ খুলে খুলে পড়ে। ভাবি কি ফুল ফুটেছে ইশারায়।
দেখি অবেলাটুকুই পড়ে আছে। বিভ্রম ছায়াদাগে। সময় ছাঁটতে ছাঁটতে চলে যায় কর্পোরেট কাঁচি।
রঙ চাপাও, রঙ চাপাও হাওয়া, রাখো
বিপদ সংকেত।
গতির ক্রীতদাস আমরা মরা স্পর্শবোধ নিয়ে সন্তানকে শেখাই গুডটাচ
ব্যাডটাচ।
অঙ্ক
আমি তোমায় যোগ করেছি, গুন
করেছি
নামতাসন্ধেয় মুখস্ত করেছি
দুলে দুলে
দিয়েছি রূপসীবাংলা তাঁবু,
দিঘিবিশ্রাম
দিয়েছি,আর জেগে জেগে তোমার
ঘুম এঁকেছি
আচ্ছন্ন কালো পাতায়
স্বপ্ন ফলক সাজিয়েছি প্রত্নশূন্যতার
মায়াখোপে
আজ সব অঙ্কদিন থেমে গেছে
সমীক্ষা চড়ায়
মহাজনী নৌকোয় পড়ে আছে নীল
যোগফল
দ্বিগুন করতে করতে দেখা
হয়নি
একটা নিঃস্পৃহ বিয়োগ কখন যে
বিদ্ধ করেছে আমাদের
ছেঁড়া ছেঁড়া ছবিদাগ
সাদা সংলাপ। পড়ে নিয়ো। পাখি পুষছে চোখের পিঞ্জর। কাউকেই বোলো না পোষমানা আসলে প্রিয়তম কৌতুক। শুনে ও শুনিয়ে ভালো লাগে। আকছার ঘটে না যা এমন কিছু দৃশ্য বাইরের দাগ নিয়ে আসে। ভেতর বইতে বইতে আমিও অফুরান। এমন সমৃদ্ধি নিয়ে যাওয়া যায় অন্য কোন দাবির কাছে ?
২
কথার খোলস উড়ছে। জমে উঠছে নাবলার উৎসব। চলো, জমানা বদল করে শিখে নিই আমাদের না থাকা। প্রতিষ্ঠা বহন করে যে মাটি তাকে কি দেবার থাকে কিছু ? বরং প্রণত হই। সমর্থন জড়ো করি অপেক্ষার। স্থিরতার। ঘরে ফেরা নাবিকের আলোচোখ আমাদের। না ছাপা কবিতার ফুসমন্তর আমাদের। ভুলের রেওয়াজ আমাদের। দ্যাখো, খুব নিচু হয়ে চুমুক দিচ্ছে আকাশ।
৩
সপসপে বদান্যতায় শীতবোধ। ধুয়ে ধুয়ে আগুন রাখি সুখের ভঙ্গিমায়। কান্নার পায়ে সেই নীরব ঘুঙুর, নদী হারানো পানকৌড়ির ধুধু, ধর্না স্বভাব- এসব পেরোতে হবে। সুজলা সুফলা মধ্যপথ বিশ্রাম দেবে। ঢেঁকুর দেবে খুব। পৃথিবীর কোন শীতে, টার্কিশ কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে, ইতিহাস ভাঙতে ভাঙতে, মিল ও অমিল খুঁজতে খুঁজতে প্রাজ্ঞ হয়ে উঠবে বর্তমান। জুবুথুবু অঙ্গীকারগুলো সামনে দাঁড়ালে অপ্রস্তুত চোখে তাকাবে ক্রিয়াপদ। তবু নিজস্ব সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়ার আগে যেন ফিরে আসে সমস্ত প্রথমের স্পর্শঘোর।
No comments:
Post a Comment