|| মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা | | ২-য় বর্ষ ||
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
পাখি রঙের আকাশ ----- ৯৯
মাটি ছেড়ে ওঠার অনেক আগেই খবর হয়ে যায়। কেউ একজন প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে আপোষ করে গলিপথের অপেক্ষায় ছিল ------ খবর হয়ে যায়। কতজন আছে সামনের সারিতে দেখে কেউ একজন কৌশল ঘুরিয়ে পোশাকে বদলে ছিল ------ খবর হয়ে যায়। খবর হয় তারাও যারা তাকে হাঁটতে দেখেছিল, নিভে যাওয়া সিগারেটে আগুন দিয়েছিল। যখন ছবিতে আসে তখন তাদের আশেপাশেও উঠে আসে অনেক অনেক মুখ। কেউ তাদের দেখেছিল চৌমাথার স্রোতে, ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে স্টেশনের বাইরে থেকে দৌড় শুরু করেছিল কয়েকজন, বাসের জানলা থেকে ফুটপাতের কিছু ভবঘুরে ------- ছবিতে এসে যায়। খবর তখন অনেক অনেক গভীরে। শরীরে শরীরে আড়াল হয়ে যায় অক্ষরের গভীর গোপন তরঙ্গ।
রিতা মিত্র
পোশাক
পোশাক খুলে শুয়ে আছে মাঠ,
আকাশে কোনো বালি হাঁসের দেখা নেই,
কাহিনিতে পড়েছি, দূর্ভেদ্ধ জঙ্গল ছিল এক কালে।
এখন সারা বছরে ছিটেফোঁটা বৃষ্টির স্বাদ পায়না মাটি।
ধুলোর ঘূর্ণিঝড় উঠলে ওড়ে খরকুটো, উড়ে যায় কুড়েঘরের চাল।
মাটি যেন তপ্ত উনুন,
চরাচরে রাত নামলেও এখানে কোনো ডোরাকাটার ভয় নেই।
মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে জেগে উঠি,
দেখি সারি-সারি বৃক্ষেরা হাতে তরবারি নিয়ে তেড়ে আসছে আমাদের দিকে।
ম্যারাথনে লাস্ট ল্যাপ
একটা অদৃশ্য দৃশ্যের কল্পনা করতে করতে উঠে বসি অতৃপ্ত আত্মার মতো
পলিও গ্রস্ত পা দুটি হঠাৎ করেই গতি পেয়ে যায়।
ম্যারাথন জীবনের লাস্ট ল্যাপ এখনও অসম্পূর্ণ বলে রক্তের শ্বেত কণিকাগুলি নিশ্চিন্তে ঘুমোতে দেয় না।
গড়পড়তা মানুষের টেঁশে যাওয়াটা কোনো ব্রেকিং নিউজ হয় না জানি।
ভোগবাদী শাসন ব্যবস্থার গোঁফে এক ফোঁটা তেলের যোগানকারী আমরা।
জাঁতাকলের পাথরেও
ফুলকি ওঠে কখনও- কখনও।
চিয়র্স
কতদিন হয়েগেল মদিরার ছায়াও মাড়াইনি,
রোজ এক প্লেট স্বাস্থ্য পরিবেশন হচ্ছে ডাইনিং টেবিলে।
এক ক্রোশ দূর থেকেও তোমার শ্যেণদৃষ্টি ভেদ করে যাচ্ছে আমার মগজের পেট-পিঠ।
আর হাতে ধরিয়ে দিচ্ছ ময়না তদন্তের রিপোর্ট।
জানালা দরজা বন্ধ করে কত সন্তর্পনে পা টিপে টিপে হাঁটি উঠোনে।
উঠোন তো নয় যেন তোমার হাতের তালু।
আজ আকাশের মুখ কালো।
আগে বৃষ্টি নামলে তুমি কেমন ছুটে আসতে, ভিজতে আনন্দে।
চলো আবার আমরা দাঁড়াই এক আকাশের নীচে
দেখো কেমন বৃষ্টি নেমেছে, ঝিকমিক রোদ উঠেছে, হালকা শীতের আমেজ আছে বাতাসে,
এমন দিনে একটু চিয়র্স বলব না,বলব না চিয়র্স।
সিঁথি ভরা পুর্ণিমা
তুমি কেমন পুর্ণিমারাত ভরে দিয়েছিলে
সিঁথিতে,
কোঁচড়ে জ্যোৎস্নার আলো ভরে ফিরে এসেছিলাম।
কাচের গ্লাসে চুমু আঁকার বিদ্যেটা বংশানুক্রমেই তোমার পাওয়া।
তাই বলেই শরবতের নানান রেসিপি সহজেই বলে দিতে পারো।
দাবা খেলায় মাহির তুমি, বোঝাপড়ার খাতায় আমি হামেশাই শূন্য পেয়ে এসেছি।
সাদা পাতায় সমুদ্র এঁকে দীর্ঘ পাড়ি দিয়েছ।
আমার নয়ন বন্দরে আজো তোমার জাহাজ নোঙর ফেলল না।
সৈকত জুড়ে শুধু লবণের সাম্রাজ্য
ধীরে ধীরে একটা মরুভূমির জন্ম হচ্ছে।
অবাক তৃষ্ণা
ভবিষ্যতের প্রশ্ন উঠলেই ভ্রান্ত পথিক আমি,
বেশ তো ছিলাম ফেয়ারি টেলের মলাটের ভেতর,
মোস্ট এলিজিবল এর লিস্ট থেকে ক্রমশ পিছলে যাচ্ছি
ধাংকুড়কুড় বাদ্যিবাজের বয়েসে ফিরে যেতে চাইছি,
কিন্তু ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক।
তাই থেমে গেলাম, স্বপ্ন মঞ্জরী ঝোরে গেছে সব,
বাতাসে উড়ে যাচ্ছি হলুদ পাতার মতো
এ যেন মৃত্যুর আয়োজন।
তবুও জীবের, ঠোঁটে, চোখে লেগে আছে এক অবাক তৃষ্ণা।
অনবদ্য বাকভঙ্গি
ReplyDelete