Tuesday, 27 September 2022

উৎসব সংখ্যা ১৪২৯ || প্রচ্ছদ


 



প্রচ্ছদ  

প্রচ্ছদ ধারনাঃ অভিজিৎ দাসকর্মকার 





            







Sunday, 25 September 2022

উৎসব সংখ্যা ১৪২৯ || সূচি

 

                                        
                                              সূচি


কবিতামালা ১  

ব্রতী মুখোপাধ্যায় | পল্লববরন পাল | তৈমুর খান | ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না | বৌধায়ন মুখোপাধ্যায় | রাজকুমার রায়চৌধুরী | ড. ফাল্গুনী চক্রবর্তী  | সুবীর সরকার | শান্তনু ভট্টাচার্য | গৌতম কুমার গুপ্ত | তাজিমুর রহমান|অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় | শীলা বিশ্বাস | নিমাই জানা | দেবশ্রী দে || দিশা চট্টোপাধ্যায় | শকুন্তলা সান্যাল | নাফিসা খান

মুখোমুখি 

তাপস দাস এবং রাকা মুখোপাধ্যায় |

কবিতামালা ২

সৌমিত্র উপাধ্যায় | মধুপর্ণা বসু  | শুভশ্রী রায় |  বনশ্রী রায় দাস | মৌমন মিত্র | বিভাবসু | স্নেহাংশু বিকাশ দাস | তাপস রায় | কেতকী বসু | সবর্ণা চট্টোপাধ্যায় | রুমা তপাদার | অমিত বাগল | সোমা ঘোষ | নবনীতা ভট্টাচার্য |

চিঠি 

মিতা চক্রবর্তী 

অণুগল্পগাঁথা ১

তনিমা হাজরা | তনুগাত্রী পণ্ডিত | মৌসুমী চৌধুরী



অসমিয়া কবিতামালা ৩

রুমী লস্কর বরা | ডা: রাজীব ভট্টাচার্য |

ইংরাজ কবিতামালা ৪

Rina kansabanik. Santosh Mahaldar. Paulomi Mitra

হিন্দি কবিতামালা ৫

রাজা দেবরায় |

অণুগল্পগাঁথা  ২

 সায়ন্তনী নাগ | শম্পা ব্যানার্জি | ফাল্গুনী দে 

কবিতামালা ৬

শর্বরী চৌধুরী| শান্তা ভট্টাচার্য | ভাস্বতী নাথ | নীপবীথি ‌ভৌমিক | উপাসনা সরকার | মৌসুমী চক্রবর্তী ষড়ঙ্গী | সুকন্যা ভট্টাচার্য | রিনা গিরি | পাপড়ি দাস সরকার | শ্রীময়ী চক্রবর্তী | প্রভাত শতপথী | তীর্থঙ্কর সুমিত | ভানুমতি সর্বজ্ঞ |

ভ্রামণিক চালচিত্র 

সোমা মুখার্জী | সংযুক্তা পাল | 

কবিতামালা ৭

শ্রীমহাদেব | দেব চক্রবর্তী | পারভীন শাহনাজ | সুপ্তোত্থিতা সাথী | রূপক চট্টোপাধ্যায় | মধুবন | এলা বসু | জয়তী দাস | জয়া বসাক | উমা মণ্ডল | পৃথা চট্টোপাধ্যায় | ঋদ্ধি ঘোষ| সোমা মুখোপাধ্যায় | পিয়াংকী | বর্ণজিৎ বর্মন | প্রিয়াঙ্কা পিহু | ডালিয়া রায় | পিঙ্কি ঘোষ | 








উৎসব সংখ্যা ১৪২৯ || সম্পাদকীয় নয় কিন্তু

                                                              

অভিজিৎ দাসকর্মকার 



সম্পাদকীয় নয় কিন্তু 


" দেবী দুর্গা নিজ দেহ সম্ভূত তেজোপ্রভাবে 
শত্রুদহনকালে অগ্নিবর্ণা, অগ্নিলোচনা"

তুমি আস্তে আস্তে নিজেকে তম গুণে কাঁচা মাটির দলা থেকে কুমোরের হাতের কারুশিল্পে আরও আরও অগ্নিশুদ্ধ হয়ে টেরাকোটা রূপও নাও। মাগো ; তোমার আশীষে যে আগামীর আগমনবার্তা, আমাদের মনু জীবনে এক উদ্দাম রসস্ফীতি পলক্ষার প্রবাহে অনুভূত হয়, তাতে আমরা নিজেদের কর্মের মাধ্যমে, চেতনার মাধ্যমেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তিকে শব্দ সৈনিক হয়ে এগিয়ে যেতে পারি। তোমাকে সহস্র নমস্কার। বিগত চার বছরের মতো এবছরও মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা ৫ম বর্ষ উৎসব সংখ্যা ১৪২৯ (অনলাইন) প্রকাশ করার স্পর্ধা করছি শুধুমাত্র তোমার মহিমান্বিত ইচ্ছে এবং যাঁরা এতোবছর ধরে শব্দ দিয়ে সাজিয়ে চলেছেন, পত্রিকাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন,পত্রিকার মর্যাদা রক্ষা করে চেলেছেন তাঁদের ভালোবাসা প্রবাহকে অস্বীকার করার ঔদ্ধত্য দেখানোর ক্ষমতা আমার নেই, আমাদের কারো নেই। বহু প্রবীণ কবিরা পত্রিকাকে তাদের লেখা দিয়ে প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং তরুণ কবিদের লেখা পড়ে তাঁদের সম্ভাবনাময় লেখাকে মল্ল সাহিত্য প্রয়াসের মাধ্যমে পাঠকের সামনে সমাপন করেছি বারংবার। অনেকে লিখবো লিখবো ভেবেও লিখে উঠতে পারেননি, আবার অনেকেই মুখিয়ে থেকেছেন লেখার জন্য। তাঁদের ভালোবাসার পত্রিকা মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা।  এ-সবই তাঁদের ভালোবাসা-ভরসা-বিশ্বাস। এবছর সম্পাদকমণ্ডলীর সকলের ইচ্ছে বিষ্ণুপুর থিম। তাই প্রচ্ছদে ফুটে উঠল দেবীর টেরাকোটা রূপ। পত্রিকার যাবতীয় অলংকরণ করা হলো টেরাকোটা শিল্পের আবহে। জানি এই কাজের মাধ্যমে আমরা  আর্থিকভাবে কারো পাশে থাকতে পারবো না। তবে এও জানি প্রচার এবং প্রসার মাটি জোগাড় করায়, মাটিকে আদল দেওয়ায়, সেই আদলকে আগুনের ভাটিতে তপ্ত করে পোক্ত করায়, এমনকি রোদ-ঝড়-বৃষ্টি এবং বিষ্ণুপুরের তীব্র ঠাণ্ডায় হাঁ-করে বসে থেকে বিক্রি করার সাহস জোগায়। আপনারা অনেকেই আমাকে চেনেন, আমাদের চিনছেন। বিশ্বাস করি অনেকেই মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকাকে নিজের পত্রিকা মনে করেন। এভাবেই আমাদের পাশে থাকুন। আমাদের ভালোবাসায় রাখুন। এই অঙ্গিকার রইল।


কবিতার মালা || ব্রতী মুখোপাধ্যায়

                                                                       ব্রতী মুখোপাধ্যায়




কবিতা 


মৃত্যুর কথা লিখতে হয় না

নিজেই লেখে

নেই



আমি জন্মের কথা লিখি

রঙিন রঙিন কথা

লিখি যন্ত্রণায়নি রং হতে হতে


মেয়েরা আবার পোয়াতি হয়, ধানের ক্ষেতে ঢেউ খেলে যায় বাতাস,

খড়কুটো কুড়িয়ে এনে পাখি বাসা গড়ে , জলের মধ্যে ডিম পাড়ে মাছ



মধুর ফুরো য় না

যেখানে ইচ্ছে যখন ইচ্ছে আমায় খুন করো , আমার মরণ নেই


একা আসত ভীষণ শাদা বক। আসছে না । পাঁচ-সা তটা হাঁ স আসত। আসছে না ।

চেয়ে চেয়ে কখন থেকে । পথ চেয়ে । তার চোখ আকাশের দিকে । তার চোখের পাতা পড়ছে না ।

রোদ আসত প্রেম করতে । আস্কারা পেয়ে পেয়ে বেপরোয়া এখন। এখন সে অন্য কিছু। রোদনেই আর।

কেউ নেই বুঝবে বুক শুকিয়ে কাঠ।

শাদা একটা বক উত্তরের এনএইচ পেরিয়ে গাছদেয়ালের দিকে ডানা মেলে ।

চোখ ছলছল। জ্বর না । জ্বর আসছে না । একা পড়ে আছে ।
 
কে উ নে ই বুঝবে নয়া নজুলিজুলির বড়ো মন খা রা প।


মনোজদের ভাঙাছা দের তারে যে মেয়েটি সকাল সকাল স্নান সেরে কাপড় মেলতে দেয় সাড়ে সাতটার
রোদে তার কানের রিংটি জ্যোতির্ময় লাগে , দালানের পায়রারা পালকের ঝলমলি নিয়ে তার সাথে পাল্লা
দিতে পারেই না , শিমুলের যে ডালটি এইসময় মসলিন লোহিত তাকেও কে মন তুচ্ছ তুচ্ছ লাগে

দূর থেকেই দেখি , সত্যি কীভাবে সদা সর্বদা ব্যথা বিহ্বল আমায় তখন দেখলে বর্ণলি পিনা শিখে থাকলে ও
যে কেউ পড়তে পারে , মা একদিন পড়ে ফেলেছে বলেছে , শুধু মনো জদের ভাঙা ছাদের জন্যে আমার
নিজের মা কেন যে পিওন হতে রাজি হয়নি ...


শুরুতেই বলতে খেলবে না
আসবে না
বলতে

বলতে
আসতে না আসতেই ফিরে যাবে
স্মার্টফোন অর্থ তোমার মা

কফি এমন তেতো
ময়ূরের পালক দিয়ে বিছনার চাদর মেঘদুপুরের মাঠ


চৈত্রের সঙ্গে দেখা শেষ রাত্রে , খোঁপা খুলে অন্ধকার ছড়িয়ে সে এই কিছুক্ষণ, দিনরমণের লক্ষ্যে ও শুকনো ঘাসে সূক্ষতম রোদের দিকে ইশারায় 

সময়ের শেষ বলে কিছু নেই যে মন আমার চোখদুটোর রুদালি মাধবীদের একজনও না জানুক ছেঁড়া বোষ্টুমি অবশ্যই জানে , জানে কী অর্থ আছাড়ি আর পিছাড়ির, জানে নিচের দিকে চেয়ে থাকলেও সবসময় উঁচু উঁচু শুধুই, সাধনার জন্যেই যে নেই নেই করেও মাত্র ন'জন ডোরবেলে পিউ কাঁহা শুনবে বলে উৎকর্ণ,র্কী ফাল্গুন কী চৈত্র কী বৈশাখ, যাচ্ছি যাই চৈত্রের শেষ রাত্রে চিঠি হাতে নিমফুলের গন্ধ লেবুপাতার গন্ধ আর ওই কখনও মরণ হয় না যে গন্ধের







কবিতার মালা || পল্লববরন পাল

 

                                                                           পল্লববরন পাল



লং রেস্‌


মনকেমনের থালার ওপর দীর্ঘশ্বাসের ফুটকড়াই
সব মিলিয়ে প্রাতরাশটা জম্পেশ
জানলা গ্রিলে বিলিকছিলিক করছে দুটি কাঠচড়াই
মনকেমনের প্রাতরাশে দীর্ঘশ্বাসে বুক ভরাই
মনের থেকে তোমার শরীর অবগাহনসুখ সরাই
কারণ আমার প্রৌঢ় বুকের দম শেষ
দীর্ঘশ্বাসে কলজে ভ’রে মনে মনে শক্তরাই
আলটিমেটলি জিততে পারে লং রেস

 

গানের ওপারে


অচেনা গলিতে ঢুকে মনে হয়, যেন কতো পরিচিত
মাঝে মাঝে চেনা রাস্তাও যায় হারিয়ে
নিজেকে কি চিনি? ঘুম থেকে উঠে প্রশ্ন অতর্কিত
চেনা যন্ত্রণা চেনা আশংকা কখনো অপরিচিত

দামি দুঃখের ড্রইংরুমের সোফায় রয়েছি স্থিত
এই অসময়ে কে দিলো বাঁহাত বাড়িয়ে?
সন্ধ্যাবেলার আলোয় বাজছে রবীন্দ্রসংগীতও

তুমি কি গানের ওপারেই আছো দাঁড়িয়ে ?




কবিতার মালা || তৈমুর খান

 

                                                                             তৈমুর খান 



সম্ভাবনা

 
  সম্ভাবনা ছিল, কত সম্ভাবনা থাকে
 পরিস্থিতি তবুও বিপথে নিয়ে যায়
 কুয়ো খুঁড়ে খুঁড়ে সারারাত
 আমরা পিপাসা নিয়ে বসে থাকি

 সন্ধ্যা কি আগমনীর নাম?
 আলোর সীমানা জুড়ে, তার পদধ্বনি
 শুনতে শুনতে আমরা অপেক্ষাতুর
 মনে মনে শয্যা পেতে রাখি

 অসহিষ্ণু কাঙালি সময় জুড়ে বাস
 কখনো শেয়াল হয়, কখনো হাঁস
 আমাদের প্রকীর্ণ নির্বোধ অভিলাষ
 আর দাঁড় টানে মন, অথবা সাঁতরায়

 যদিও নদী নেই, ক্ষতগুলি অদ্ভুত বিষাদ
 ফালাফালা করে দেয় নিরন্ত সংরাগ
 সংরাগে অন্ধকার, ডুবে যায় চাঁদ
 আমরা আগুন খুঁজি
             নিহত বিপ্লবের মাঠে আগুন জ্বালাই




কবিতার মালা || ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না

 

                                                                  ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না





পুঁতি, সরলরেখা ও অনন্ত

অদৃশ্য থেকে গড়িয়ে পড়ছে শব্দের পুঁতি----
দেখতে দেখতে ঘোর লাগে পাশ ফেরা হয় না

ভোর ভোর কেউ এসেছিল---
বেলফুলের ফুটে ওঠা ও সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে গেছে
ঢেঁড়সের ঘাড় মটকে কুমড়োর ডগা কেটে...
কী এত প্রতিশোধ থাকে ঘরোয়া ভুক্তভুগী হাতে!
বিশুদ্ধ দু:খের দেশে আয়ুরেখা টিকে আছে ম্যাজিক প্রতীম
নিত্য ফুরিয়ে যাচ্ছে উদ্বায়ী সমীকরণের বুকের ভেতরে রাখা আতর বিলাশ
অন্ধকার বলয় গ্রাসে ঢুকে পড়ছে আঠালো গপ্পগাছা
জলের মধ্যে পায়ের ছাপ অথবা পায়ের ছাপে জলের চিহ্ন এক বিষন্ন উপপাদ্য লিখে রাখছে যখন
'বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ' বহু দূরের হাওয়ায়...
নতুন সান্দ্রতায় মিশে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বাহী স্পর্শ সব
ধনিষ্ঠা  নক্ষত্রের সাথে জন্মদাগ নিয়ে নেমে আসছে রক্ত মাখা চাঁদ।
কীসে কী এসে যায়?
ফলন্ত মহুয়া শোভার পাশে ঘরপোড়া গ্রাম
ভাঙা দরজার কঠিনের পাশে বসন্তের হলুদ পলাশ

অথচ অসম্ভব মন্থরে চলেছে পুঁতিগুলো
বিন্দুর পর বিন্দু রেখায় স্থাপন করে অনন্ত কে ধরতে চাইলে ঘোরই তো... 




কবিতার মালা || বৌধায়ন মুখোপাধ্যায়

                                                                বৌধায়ন মুখোপাধ্যায় 



শ্রেষ্ঠ পুরুষ          
                                                                                                      
পাগলা তুই দূর থেকে আরও  দূরে সরে যা 
মোহাব্বত কিনে নে  ছাতিমতলায় 
তোর্ মাথাটা আরও উন্নাসিক হোক 
তুই আমাদের পৃথিবীকে চোটকে দে 
উল্টে পাল্টে রোজ নতুন পোড়া রুটি খাবি ?
কে তোকে দেবে শাকসব্জি তেল আর আতশবাজি ?
পাগলা তুই আমাকে কেন ডাকিস বারবার ?
বলিস , কনিষ্ককে জানিয়ে দিস আমার বার্তাটুকু ,
হে রাজন , কেঁদো নাকো , কিনে দেবো মাথা 

মেঘ আর সূর্যের নিচে শুয়ে থাকিস 
আমাদের উড়ালপুলের নিচে নগ্নপ্রায় 
তোর দিকে অনেক সুন্দরী মেয়েরা তাকিয়ে থাকে 
তোর নাম যে বিশুপাগলা ওরা তো জানেনা !
আমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ পাগল তুই , পুরুষশ্রেষ্ঠ 
নোংরা আর অযত্নে লালিত তোর বিহ্বল শরীর 
সবে জানে মনে মনে ভীষণ সেক্সের আইকন তুই 
পাগলা তুই আমাদের কাছে, কিন্তু অনেক দূরের 
তোর ভোটের আই ডি কার্ড নেই , সংসার নেই 
রোগ নেই , ক্ষোভ নেই , নারী - লিপ্সা নেই 
বিশু তুই কি ভাবে মস্তিষ্ক হারালি ?
তুই কেন আমার মতো নোস্ , অথচ আমারি মতন ?
পাগলা তুই আরও পাগল হয়ে যা  আম্মো হই  
তোর শরীরে উদাস বৃষ্টি নামুক আর কিছু তর্জমা 
তোকে কোন পরীক্ষাগারে নিয়ে যাবো বল 
যাতে প্রমান করা যায় তুই আমাদের শ্রেষ্ঠ পুরুষ !



কবিতার মালা || রাজকুমার রায়চৌধুরী

 

                                                               রাজকুমার রায়চৌধুরী


বাবা

তোমার ধারালো ছায়া মাপতে পারেনি আমাদের সংসার,
শুধু জড়িয়ে ধরে আছো অসম্ভব সাদা হাসির আড়ালে।
দুপুরে ভাতের মধ্যে ডাল হয়ে উপচে ওঠো থালাবাটি জুড়ে...
অন্ধকারে দাও আশ্চর্য স্নেহ, সমস্ত শূন্যের মধ্যে আলোর বিন্দু
অল্প শীতে প্রবল আগ্রহে ডুব দিলে তুমি আজ কোন ঠিকানায়?

অদ্ভুত ভালোবাসার হাতপাখাটি নেড়ে যাচ্ছে মা একা-একা...
চলমান সংসারের ভাঁজ খুলে অন্ধকার মুছে দাও দু'হাতে।
কখনও কখনও বিচলিত হয়ে বলে ওঠো 'এবার সব চুপ কর'

নিরবধি ওই মুখচ্ছায়া নিরুপায় স্বরে কী বলে আজও চুপি চুপি?

ঘরের কোণে একটি নীরবতা জ্বলে কালো আঁধারের নীচে,
শীতে রোদ নাও সরষের তেলের বাটির মধ্যে সরু আঙুল ডুবিয়ে
তুমি তো অভাবের সংসারে আশ্চর্য গণিত, নির্জন মায়াবী হিসেব

শুধু তাৎক্ষণিক কী এক প্রত্যাশায় উঁকি দাও আজও এ সংসারে।
উত্তরের জানলা তোমাকে ডাকে, মাঠঘাট তোমাকে ডাকে, চলে এসো...
উষ্ণ চায়ের কাপ টেবিলের উপর পড়ে আছে, এমনকি চশমাটিও।

মায়ের হাতপাখাটি আজও নড়ে, প্রেম কাহাকে বলে ওগো মায়া?



কবিতার মালা || ড. ফাল্গুনী চক্রবর্তী

                                                                     ড. ফাল্গুনী চক্রবর্তী 


কেন এমন হয়? 

কেন এমন হয়?
কেন আমি কষ্ট পেতেই ভালোবাসি? 
সুখগুলো সব মেঘের পালক। হালকা হাওয়ায় 
ভেসে যায়। দুঃখগুলো অন্তঃসলিলা নদী যেন।
আমি তো দুঃখবাদী নই।
তাই বলে আমি  মরমীও নই। 
আমি সংসারী বা অসংসারীও নই।
অথচ কষ্ট ভালোবাসি। 


বালুতে মুখ গুঁজে থাকার মতো 
আমিও তপ্তবালুকায় মুখ গুঁজে কাঁদি 
চোখের জল লুকোনোই বুঝি 
ধর্ম! মনের মধ্যে তোলপাড়,  
অদৃশ্য এক গভীর বেদন 
ক্লিষ্ট করে। পিষ্ট করে সকল অভিমান! 

শাস্ত্র আর সংস্কার
সমাজ আর জীবন 
মুখোমুখি শোনায়
"পৃথিবীতে কে কাহার? "
এ যাযাবর জীবনের ঘাটে ঘাটে 
সংসার পাতানো খেলা। তারপর রাত পোহালেই 
পা বাড়াতে হয় অনির্দিষ্টের পথে। 

 ঊর্ণনাভ আমি! আপন ঊর্ণজালে অবিরাম পেঁচিয়ে চলৎশক্তিহীন 
দুপায়ে গজায় পরগাছা! 
তখন দুচোখ জলশূন্য এক লোহিত নদী।

চারপাশের  গমগম লোককোলাহল!
 হৃদয়টাকে 
"বিজি স্টেশন " করে তোলে। 
কর্ণকুহর সজাগ রেখে ঘণ্টা গুণি 
আপ নাকি ডাউন!  ডাউন নাকি আপ! 

রাতের বুকে নামে অমাবস্যা! গোঙায় রজনী। 
লঘু রসিকতার ঢলাঢলি গায়ে  উটকো গন্ধ মাখা
আমি নির্বিকার। পূর্বাপর একই নিয়মে
প্রহর গুণি।

কত ট্রেন এসে যায় 
না তাতে উঠে পড়ি-
না এখানে থেকে যাই...
পায়ে পায়ে জড়ানো জড়তা।

নির্দ্বিধায় কত সহজন উঠে পড়ে 
চলে যায়!  একটু হাসি ছড়িয়ে কেউ 
হয়তো বলে,

যাবেন না? চলুন..
আমার ভাবনার অবসরে পুরো ট্রেন আমাকে  জানায় শেষ অভিবাদন।

আবারো অপেক্ষা! 
আমি কেন এমন মিছে টানে পা তুলতে পারিনে? 

জগতের ধুলোকণাও চলে যায়, উড়ে যায়  নির্দ্বিধায়। 
কী অবলীলায়!  চলাই জীবন - জীবনের নিয়ম।

কিন্তু - 
আমি 
না ধুলোকণা, না  হিমালয় 
জগতের অনিয়ম আমি!  সংসারের দায় আমি।

এক পায়ে নাচে গতিছন্দ
আরেক পা প্রোথিত সমাজ সংসারের গভীরে।
কেন এমন হয়?






কবিতার মালা || সুবীর সরকার

                                                                          সুবীর সরকার



জীবন

জনমভরের কত কথা থাকে মানুষের।কোথাও 
হাঁটুজলের নদী পেরোতে গিয়ে মানুষের চোখের
সাদায় এক ব্যথা জেগে থাকে।
জাগরণ থেকে ঘুমে ফিরতে গিয়ে কথার খেপলা জাল অন্যমনস্কতার
ভেতর ঢুকে পড়ে।অথচ দীর্ঘ কোন সেতু পেরোতে
আজকাল তো খুব বেশি সময় লাগে না!গ্রামদেশের
কাকতাড়ুয়া পাহারা দেয় বেগুনক্ষেত।নুতন জলের
প্রবাহে সতেজ শিং মাগুরের ঝাঁক আবহমানের
দৃশ্যের কিনারেই বুঝি মানুষকে টেনে নিয়ে আসে।
জনমভরের কথায় কথায় কি তীব্র হয়ে ওঠে মানুষের
                                                               জীবন!




কবিতার মালা || শান্তনু ভট্টাচার্য

                                                                       শান্তনু ভট্টাচার্য 


মারিজুয়ানা 
                

বিবর্ণ বাতাসে মারিজুয়ানার গন্ধ ...

কোথায় শুয়ে আছি -ফুটপাত?নাকি 
তোমার কোলে মাথা রেখে তারা গুনছি   জানিনা  
মাথার ভেতর হলুদ রঙের বব ডিলানের সুর  
টেনে নিয়ে যাচ্ছে টানেলের শেষ অবধি

 দেখতে পাচ্ছি উল্টো ছাতা
 উল্টো উল্টো পুরুষ,উল্টো শিশু,উল্টো লিঙ্গ;
শুধু  তুমি  সোজা।আর সব স‍্যুরিয়েল।

হাতের কারসাজিতে যেভাবে  ইস্কাপন হরতন হয়ে  যায় 
সে পথেই  আমি চিনছি  নীলগ্রহটাকে...