Sunday, 25 September 2022

ভ্রামণিক চালচিত্র || সোমা মুখার্জি

 

                                                                                 সোমা মুখার্জি


পথের সঞ্চয়
( রাস আল খৈমা, সংযুক্ত আরব আমিরাত ) 

দুবাই ছাড়িয়ে বেরিয়ে পড়েছি, যাব রাস আল খৈমা ।দুবাই থেকে খুব বেশি দূর নয়। ছিয়াত্তর সাতাত্তর কিলোমিটার পথ। ঘর ছেড়ে বেরোনো মানেই বেশ মুক্তির  আনন্দ। অবচেতনে নতুন  কিছু দেখার আনন্দে মন উৎসুক হয়ে থাকে।
শারজা পেরোতেই পথের দুপাশে দিগন্ত বিস্তৃত বালিয়াড়ি। তারি মাঝে মাঝে কিছু কাঁটাঝোপ। সেগুলো'ই একমাত্র সবুজের ছোঁয়া। তবে এই মরুভূমি অঞ্চলের আদিগন্ত নীল আকাশ বরাবরই মনকে  টানে।যেন একটু ভাবনার অবকাশ এনে দেয়। 
দেড়ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে গেলাম রাস আল খৈমা বিন্ মাজিদ রিসর্টে। ইউ এ ই'র আমিরাত গুলোর মধ্যে বৃহত্তম শহর হিসের এর স্থান ছ'নম্বরে। বহু পুরোনো সময়ে ইসলামিক ইতিহাসের অধ্যায়ে রাস আল খৈমা ব্যস্ততম বন্দর হিসিবে পরিচিত ছিল।সে সময় এর নাম ছিল জুলফার। এখনও এ অঞ্চলে বাইরের দেশের লোকের তুলনায় এই দেশীয় লোকেদেরই আধিক্য।

শেষ বিকেলে এই আরব্য উপসাগরীয় অঞ্চলে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে যখন আমরা রিসর্টে পৌঁছলাম তখন সূর্যদের পাড়ি দিয়েছেন অস্তাচলে। এখন আবার সূর্যাস্ত দেখার প্রত্যাশায় রইলাম।
চমৎকার ছড়ানো খেলানো জায়গা এই রিসর্ট টি  আরব উপসাগরের পারে। রিসর্টের নিজস্ব সৈকত রয়েছে। যে কোনো সময় সমুদ্রের ধারে গিয়ে বসা যায়। বসার সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে। 

এই মরুভূমির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে অব্যাহত রেখেই যত রকম গাছ লাগানো , নানা ধরনের ফুল গাছ , বড়গাছ সে সমস্ত  কিছু দিয়েই এ জায়গাটাকে সাজিয়েছে এরা। গাছ জল দুটোই  একসাথে এটা পাখিদের প্রিয় জায়গা হয়ে উঠেছে। ভোর বেলা ঘুম ভাঙল নানা রকম পাখির ডাকে, বুলবুলি, ফিঙে, চড়ুই, পায়রা ঘুঘু ইত্যাদি।। সন্ধ্যে বেলায় ও গাছে গাছে পাখির ঘরে  ফেরার কাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠল চারিপাশ।কখনো কখনো সমুদ্রের জলে বালি আর জলের মধ্যে অনেক ছোট ছোট পাখি এসে মনের আনন্দে স্নান করে।দেখতে দেখতে মন ভালো লাগায় ভরে ওঠে...
পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে  ভ্রমণপিপাসু মানুষের  দল এসে জড় হয়েছে এখানে। সমুদ্রপারে শিশুদের বালি নিয়ে খেলা..সমুদ্র স্নান  মনে কে বন্ধন মুক্তির স্বাদ দেয়। বালির রাজ্যে আকাশে রঙ ছড়িয়ে সূর্য ডুবলো দিগন্তে। নিয়ে চললাম পথের কিছু সঞ্চয় স্মৃতির ঝুলিতে...






1 comment: