Sunday 25 September 2022

কবিতার মালা || মধুবন

 

                                                                                 মধুবন


কফিনবন্দী প্রেম


স্বেচ্ছামৃত্যুকে স্বাগত জানাতে আমিও চলে এলাম অরণ্য বিছানো পথে;  রঙ খসে পড়া পাইন দেবদারুর বিষণ্ণতা ওদের চোখে মুখে। 
ধূসর পথ পরিক্রমায় আজ এগার ছুঁই ছুঁই। 
ওরা হাঁটছে। হাঁটার গতি শ্লথ। দুটি শীতল হাত পরস্পরকে ধরে আছে। ওরা দুজনেই মৌন; আসলে এখানে যৌনতা প্রায় মৌনতার প্রতীক। 
পায়ে পায়ে এগিয়ে চলেছে এক হলুদ শোকের মিছিল।
এগার বছর আগে কোনো এক হলুদ সন্ধ্যায় প্রেয়সীকে লাল গোলাপ উপহার দিয়েছিল পুরুষটি। ভালোবাসা উদযাপন ছিল সেদিন পায়রা ওড়ানোর মত। আজ তা যেন মৃত্যু উদযাপন। 
রাতের উৎসবে হলুদের হিম অন্ধকার যেন মৃত্যুদূত হয়ে স্বাগত জানাচ্ছে নারী ও পুরুষটিকে। যেদিকে ঝরে পড়ে আছে মরা পাতাগুলো সেদিকে ওদের পথের বাঁক। 
নিঃশব্দে মরে যাওয়া পাতা নারীর স্তনে গুঁজে দিচ্ছে পুরুষটি, যেখানে একসময় মুখ রাখলে শুনতে পেত সে নায়াগ্রার উচ্ছাস। জ্বলে উঠতো জলসার ঝাড়বাতি। আর একটু উপরে উঠলে কামিনী কাঞ্চন। ছিল কামনার অহরহ আনাগোনা। আজ সেখানে নিঃশব্দ হ্রদ, নিস্তরঙ্গ হেমন্ত–নিভে যাওয়া বসন্তকে ওরা স্বাগত জানাচ্ছে ধীরে, অতিধীরে।
প্রেমের শরীর কফিনে বন্দী হওয়ার আগে পুরুষটি তার বিবর্ণ ঠোঁট দিয়ে চুম্বন করলো হারানো যৌবনকে; কফিন বন্দী সেই এগার বছর, যা এখন শুধু ইতিহাস মাত্র।




No comments:

Post a Comment