ফাল্গুনী দে
দিকশুণ্যপুর
ভোরের ফাঁসিকাঠ নয়, আত্মহত্যা নয়, এমনকি স্বেচ্ছামৃত্যুও নয়। একটি অপরিণামদর্শী স্বপ্নের জন্য মহাজাগতিক সাধন সিদ্ধির এক বিরলতম উদাহরণ -- অ্যালিজা। সে আর কোনোদিন পৃথিবীতে ফিরবে না, জীবিত অথবা মৃত। 2033 সালে নাসার পক্ষে প্রথম রক্ত মাংসের মানুষ হিসেবে রকেটে চড়ে সে মঙ্গলে পাড়ি দেবে। একমাত্র নিঃসঙ্গ মানুষ হিসেবে কোটি কোটি মাইল দূরে লাল মরচে পড়া আর বরফ শীতল উষ্ণতায় মোড়া গ্রহের নীল নক্ষত্রের নিচে সে হারিয়ে যাবে। শর্ত অনুযায়ী আগামী দশ বারো বছরে তাকে ত্যাগ করতে হবে বিয়ে সন্তান অথবা যৌনতার মতো পার্থিব আকর্ষণগুলি।
সৌরদীপ কলেজ পাশ করে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে গ্রামেই একটি তথ্যমিত্র কেন্দ্র খুলেছে। অনলাইন ফর্ম ফিলআপ, কম্পিউটার গেমস, নেট পরিষেবা, ফেসবুক চালাচালি ইত্যাদি নানান সুবিধা বিক্রি করে সকাল থেকে রাত অব্দি। অ্যালিজার খবরটা একদিন ফেসবুকে পড়েই সে বিস্ময়ে কাতর হয়ে ওঠে। বিস্তারিত জানতে নেট তোলপাড় করে খুঁজে আনে বহু জানা অজানা তথ্য পরিসংখ্যান ও ছবি। ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে ম্যাসেঞ্জারে পোস্ট করে একটি ছোট্ট নোট -- "তুমি যখন 30 বছরের সাধ্বী যুবতী হয়ে রকেটে পা রাখবে, বাড়ির ছাদ থেকে আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকবো। তুমি জানলা দিয়ে হাত নেড়ে ফিরে আসবার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিও, আমি প্লেটনিক ভালোবাসায় আজীবন অপেক্ষা করবো। মঙ্গল আর পৃথিবীর মধ্যিকার ইথার তরঙ্গে খেলে বেড়াবে আমাদের প্রিয় সংলাপ। প্রেম ভালোবাসায় নাসার আপত্তি নেই শুনেছি, তাই রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করলে প্রেমে সম্মতি জানবো।"
কোকিল ডাকা বসন্তে ইমন রাগের এক সন্ধ্যায় রিপ্লাই আসে -- রিকোয়েস্ট একসেপ্টেড।
No comments:
Post a Comment