তনিমা হাজরা
অনূঢ়া দিদিমণি
নিজের বলে ছিল নিশ্চয়ই কেউ,
কে নইলে আগুন দিলো মুখে? কাঁদলো হয়তো তাদেরই কেউ না কেউ, প্রকাশ্যে অথবা গোপনে।
কাদের জন্য আনতো কিনে
ক্ষীরসন্দেশ, রঙিন পোশাক, পুরীর লাঠি, পুঁতির মালা, কাঁচের চুড়ি, হাতের ব্যাগ,কানের পাশা।।
পোড়াতে নেবার আগে কে বলো তো অতীব সাবধানে, হাতের থেকে খুলে নিলো তার মকরমুখী সাধের বালা, প্রবালের আঙটি, গলার চেন।।
কারা সব বুঝে নেবে ব্যাংক একাউন্ট, পাসবই আর টাকা কড়ি,
তারপর ঠিক কতদিন তারা মনে রাখবে, কতদিন বাদে ভুলে গিয়ে মজে যাবে নিজস্ব সংসারে??
তারা সব বেগুনি দেওয়ালে টাঙাবে কি তার ছবি, যার পেছনে এসে আশ্রয় নেবে নির্ঘাত কোনো পাটকিলে অনাথ টিকটিকি, কতদিন বাদে ঠিক ক্লান্ত হয়ে ঝুরোঝুরো হবে রজনীগন্ধার মালাটি, জমে যাবে তাতে না ঝাড়া স্বাভাবিক ঝুল।।
প্রকৃতি নির্দিষ্ট যে স্তন দুটো
অযথা মাংস পিন্ডের মতো শুধুমাত্র গাণিতিক ভুল, একবিন্দু দুধ জমে নি তাতে, কর্কট রোগ জমিয়ে দখল নিলো সেই বাড়া ভাতে, যন্ত্রণাকে কি বলে সে তাড়াতো বল তো একা একা, হ্যাট যা বলে? ঠিক যেমন করে যত্নে খেয়ে তাকে তাড়িয়েছিলো তার সেই সাধের প্রেমিক পুরুষ, ঠিক তেমনই।।
স্কুলের যত ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়ে,
গোল করে ভিড় করে ঘিরে,হাসিখুশি, দিদিমণি, ধমকায়, মারে, কোলে তুলে নেয়,লজেন্স দিতো, চুমু নিতো নিজের গালে।।
প্রথম প্রথম মা কে ছেড়ে আসা শিশুশ্রেণী বাচ্চাটির মুছে দিতো কান্নার জল, নাকের, চোখের,
হিসির পরে প্যান্টের চেন দিতো এঁটে,
টিফিন খাইয়ে দিতো জোর করে ।।
এসব কাজের কোনো বাড়তি মাইনে ছিল না সরকারী স্কুলে........
তবে কেন গো এসব কাজ
অনূঢ়া দিদিমণি, অযথা ভরাট বুকে যার তিলার্ধ দুধও জমেনি, সবটুকু গুপ্ত স্নেহ তার, ঠুকরে ঠুকরে খেয়ে ছিবড়ে করে ছেড়ে দিলো কে??
সে কি সেই ধড়িবাজ কর্কট রোগ,
নাকি এই মারীচের মতো মায়াবী সংসার??
No comments:
Post a Comment