Sunday 25 September 2022

কবিতার মালা || ড. ফাল্গুনী চক্রবর্তী

                                                                     ড. ফাল্গুনী চক্রবর্তী 


কেন এমন হয়? 

কেন এমন হয়?
কেন আমি কষ্ট পেতেই ভালোবাসি? 
সুখগুলো সব মেঘের পালক। হালকা হাওয়ায় 
ভেসে যায়। দুঃখগুলো অন্তঃসলিলা নদী যেন।
আমি তো দুঃখবাদী নই।
তাই বলে আমি  মরমীও নই। 
আমি সংসারী বা অসংসারীও নই।
অথচ কষ্ট ভালোবাসি। 


বালুতে মুখ গুঁজে থাকার মতো 
আমিও তপ্তবালুকায় মুখ গুঁজে কাঁদি 
চোখের জল লুকোনোই বুঝি 
ধর্ম! মনের মধ্যে তোলপাড়,  
অদৃশ্য এক গভীর বেদন 
ক্লিষ্ট করে। পিষ্ট করে সকল অভিমান! 

শাস্ত্র আর সংস্কার
সমাজ আর জীবন 
মুখোমুখি শোনায়
"পৃথিবীতে কে কাহার? "
এ যাযাবর জীবনের ঘাটে ঘাটে 
সংসার পাতানো খেলা। তারপর রাত পোহালেই 
পা বাড়াতে হয় অনির্দিষ্টের পথে। 

 ঊর্ণনাভ আমি! আপন ঊর্ণজালে অবিরাম পেঁচিয়ে চলৎশক্তিহীন 
দুপায়ে গজায় পরগাছা! 
তখন দুচোখ জলশূন্য এক লোহিত নদী।

চারপাশের  গমগম লোককোলাহল!
 হৃদয়টাকে 
"বিজি স্টেশন " করে তোলে। 
কর্ণকুহর সজাগ রেখে ঘণ্টা গুণি 
আপ নাকি ডাউন!  ডাউন নাকি আপ! 

রাতের বুকে নামে অমাবস্যা! গোঙায় রজনী। 
লঘু রসিকতার ঢলাঢলি গায়ে  উটকো গন্ধ মাখা
আমি নির্বিকার। পূর্বাপর একই নিয়মে
প্রহর গুণি।

কত ট্রেন এসে যায় 
না তাতে উঠে পড়ি-
না এখানে থেকে যাই...
পায়ে পায়ে জড়ানো জড়তা।

নির্দ্বিধায় কত সহজন উঠে পড়ে 
চলে যায়!  একটু হাসি ছড়িয়ে কেউ 
হয়তো বলে,

যাবেন না? চলুন..
আমার ভাবনার অবসরে পুরো ট্রেন আমাকে  জানায় শেষ অভিবাদন।

আবারো অপেক্ষা! 
আমি কেন এমন মিছে টানে পা তুলতে পারিনে? 

জগতের ধুলোকণাও চলে যায়, উড়ে যায়  নির্দ্বিধায়। 
কী অবলীলায়!  চলাই জীবন - জীবনের নিয়ম।

কিন্তু - 
আমি 
না ধুলোকণা, না  হিমালয় 
জগতের অনিয়ম আমি!  সংসারের দায় আমি।

এক পায়ে নাচে গতিছন্দ
আরেক পা প্রোথিত সমাজ সংসারের গভীরে।
কেন এমন হয়?






No comments:

Post a Comment