তনুগাত্রী পণ্ডিত
সামনে পিছনে
সকাল ৬টা নাগাদ ঘুম ভেঙে গেল সোমার ।পাশে শুয়ে অনিল। ওর গায়ে জামা নেই। তাতেও ফোঁটা ফোঁটা ঘাম জমেছে। গত রাতে গরম ছিলো খুব। বর্ষাকাল হলে কী হবে? বৃষ্টির নাম গন্ধ নেই। রান্নার তাড়া নেই আজ। দুপুরে এসে ভাত খাবে অনিল। ওর স্কুল দেড়টা নাগাদ ছুটি হয়ে যাবে। খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে গেল সোমা। কী রান্না করবে, আর কীই বা টিফিন বানাবে? শুধু করলেই তো হবেনা? মুখরোচক না হলে চলবে? অনিলের অবশ্য তেমন কোন বায়নাক্কা নেই। যাই দেওয়া হোক না কেন, তাই সোনা মুখ করে খেয়ে নেয়। কলিংবেল বাজতেই উঠে পড়লো সোমা। কাজের দিদি এসেছে। তার নিখুঁত সময় জ্ঞান।
ফ্রিজ খুলে সব্জির ট্রে বের করে সোমা দেখলো, ঢ্যাঁড়শ ঝিঙে কাঁকরোল রয়েছে। তিন থাকের স্টিলের ঝুড়ির মধ্যে আলু পেঁয়াজ আদা রসুন। তিল ঝিঙে করলে কেমন হয়! ঘরে তিল পোস্ত কিচ্ছুটি নেই। পোস্তর যা দাম! হাতে ছ্যাঁকা লাগে। রান্নাঘর থেকে চেঁচিয়ে অনিল কে ডাকলো সোমা - 'শুনছ, একবার চট্ করে বাজারে যেতে পারবে?' ওদিক থেকে কোন সাড়া নেই। গেল কোথায়!
ড্রয়িংরুমের সোফাতে চুপচাপ বসে রয়েছে অনিল। সোমা অবাক হয়ে বললো - 'বাজার যেতে বললাম যে? কথা কানে যায়নি বুঝি?'
-'চুপ্ করো, এখন আমি হাঁটছি'
-'মানে? বসে বসে কেউ হাঁটে নাকি? মর্নিংওয়াকে গেলেই তো পারো'
-' ওফ্, বিরক্ত কোরো না। হাঁটতে দাও।
-' পাগল হলে নাকি? আশ্চর্য! '
মুচকি হেসে অনিল বললো -' সঠিক হাঁটার পদ্ধতি এটাই। সবাই এভাবেই হাঁটে। তুমিও হাঁটো'
-'কী ভাবে?'
-'সামনে পিছনে, পিছনে সামনে, সামনে পিছনে ...
চমৎকার গল্প।
ReplyDelete