মৌসুমী চৌধুরী
সেফ পিরিয়ড
অন্ধকার আমি খুব ভালোবাসি। অন্ধকারে আমার চোখ জ্বলজ্বল করে জ্বলে। লাইট অফ করলেই আমার শরীরে হিসহিস করে ওঠে কেউটে সাপ। তালপুকুরে এখন ঘটি না ডুব- লেও শরীরে আমার জমিদার বাপ ঠাকুর্দার রক্ত আজও বহমান। নিত্য নতুন শরীরকে অনাবৃত করতে আমার কেমন নেশা নেশা লাগে। এক একজনের ভূগোল এক এক রকম, ইতিহাসও। তবে হা-ঘরের মেয়েদের ভূগোল ও ইতিহাস দুই আমার বেশ পছন্দের। মেয়েগুলো একটু ভালো খাওয়া-পরার জন্য সব শোনে। আর কুদরৎ কি মহান ক্যরিশমা, খুদকুঁড়ো খেয়েও ওদের ভূগোল মারাত্মক আকর্ষণীয়। গিরিখাতের অতলে হারিয়ে যাবার কুহক আহ্বানে আমি পাগল হয়ে যাই।
মীনুর মা যখন প্রথম আমার বাড়িতে কাজে ঢোকে তখন ওর ইতিহাস ও সর্বোপরি ভূগোল দুই'ই আমার ভীষন পছন্দ হয়ে যায়। ওর বর একটা মেয়ে উপহার দিয়ে নতুন সংসার পেতে দেশান্তরি হয়েছে। দশ বছরের মেয়ে মীনুকে নিয়ে বাসন্তী তখন খুব অসহায়। তাই কাজে বেরিয়েছে। ওর অসহায় চোখে আশ্রয় যাচনা। অন্ধকারে এসব মেয়েরা সতীপনা দেখায় না। বেশ উপভোগ করে। আর বাসন্তীর শরীরের ভূগোলে চাবুকের ইশারা! তাই স্ত্রী অনুরাধার অনুরোধে আমি মেয়ে সহ বাসন্তীকে রাখতে রাজী হয়ে গেলাম।
গত চার বছর ধরে বাসন্তী আমায় শরীরী সুখে ভরিয়ে রেখেছে। প্রকৃত অর্গাজম আমি বাসন্তীর কাছেই পাই। কেননা মেনো - পোজের দিকে এগোচ্ছে মধ্য চল্লিশের অনুরাধা। বাসন্তীর তুলণায় সে এখন রীতিমতো জলো। তাই অনুরাধার অলক্ষ্যে, সব রকম সাবধাণতা অবলম্বন করে আমাদের সম্পর্ক বয়ে চলেছে খরস্রোতা পাহাড়ি নদীর মতো। একদিন দুপুরে শাড়ি খুলতে খুলতে বাসন্তী হঠাৎ বলে,
-- " মেয়েটাকে এবার থেকে চোখে চোখে রাখতে হবে। "
বাসন্তী খোলা শরীরে হাত বুলোতে বুলোতে আমি বলি,
-- "কেন? তার আবার কি হল?"
অভিমানী গলায় বাসন্তী বলে,
-- " আমরা তো আপনার বাড়ির এক কোণে পড়ে আছি অচেতন আসবাবের মতো। আপনার কি আর আমার মেয়েকে নিয়ে কোন মাথাব্যথা আছে? মেয়ে যে আমার ঋতুমতী হল আজ।"
আমার সত্যি বাসন্তীর মেয়েকে নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। আমি তো মজে আছি বাসন্তীর শরীরে। ওদের মা-মেয়ের খওয়া-পরা সহ সমস্ত প্রয়োজনের ভার অনুরাধার ওপর। শুনেছি আমাদের ছেলে বিতান বাইরে পড়তে যাবার পর থেকে অনুরাধা নিজের কড়া তত্ত্বাবধানে বাসন্তীর মেয়ে মীনুকে পড়াশোনা শেখাচ্ছে। মেয়েটি ক্লাস এইট থেকে নাইনে উঠেছে এবার।
বাসন্তী বলার পাঁচদিন পর আজ হঠাৎ উঠোনের নারকেল গাছটার তলায় চোখে পড়ল বাসন্তীর মেয়ে মীনুকে। শীতের দুপুরের সোনা রোদ ঝিলমিল করছে নারকেল পাতার ফাঁকে। আর সেই রোদ গায়ে মেখে মীনু হেসে কথা বলতে বলতে যেন গড়িয়ে পড়ছে বান্ধবী রাবেয়ার গায়ে। মীনুর শরীরের ভূগোলে বাসন্তীর ছায়া! আমার শিরায় শিরায় পূর্বজ - দের রক্ত খলবলিয়ে উঠতে চায়...
দুপুরে খাওয়ার পর অনুরাধা বাসন্তীকে নিয়ে তিনতলার ছাদে এক হাঁড়ি ডালবাটার বড়ি দিতে চলে গেল। তাদের কথাবার্তায় জানতে পারলাম শীতের রোদে বসে তারা চালের গুঁড়োর মন্ড দিয়ে চষিও বানাবে।
আমি নিশ্চিন্ত মনে অনেকদিন পর আমাদের আউট-হাউসের ঘুপচি ঘরটাতে ঢুকলাম। বাসন্তীর মেয়ে মীনু বিছানায় শুয়ে মোটা একটা বই পড়ছিল। অভিজ্ঞ আমি জানি পাঁচদিন পর মীনুর আজ থেকে সেফ-পিরিয়ড চলবে। আমি ঘরের লাইট অফ করে দিলাম, ভর-দুপুরেও অন্ধকার ঝাঁপিয়ে পড়ল ঘরে।
আপনার লেখা ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রাণীত করবে 💚
ReplyDeleteদারুণ
ReplyDelete