মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ১৪-তম প্রয়াস
শীতের সকাল সায়ন সেনগুপ্ত
শীতের সকাল মানেই কম্বল মুড়ি দিয়ে অলস শুয়ে থাকা, বিছানা ছাড়তে ঘোরতর অনিচ্ছা । মায়ের বারবার ডাকাডাকিতে উঠে পড়তে হয় বটে, কিন্তু মন হয়ে থাকে জবুথবু । সোয়েটার, মাফলারে নিজেকে মুড়ে শুরু হয় দিনের চলা । উষ্ণতার খোঁজে হরলিকসে গলা ভেজানো । জানলা দিয়ে বিছানায় এসে পড়া রোদ্দুরকে তখন বড়ো প্রিয় মনে হয় । কুয়াশার চাদর সরিয়ে তার আসাও সহজ নয় । মনে হয় শীতের সকাল তাকেও অলস করে দিয়েছে । জানালার সামনে বসে দেখি আশেপাশের কয়েকটি বাড়ির লোকজন একটা গাড়িতে উঠছে । তার মধ্যে নীল, সোনাই-রাও আছে । ওরা আমার বন্ধু । মনে পড়ল ওরা আজ পিকনিকে যাচ্ছে । সামনে পরীক্ষা না থাকলে আমরাও যেতাম । শীতের মজাই তো পিকনিক । যেতে না পারায় আমার মন খারাপ । মন খারাপ কাটল মা যখন কড়াইশুঁটির কচুরি আর জয়নগরের মোয়া নিয়ে এলেন । বাবা এলেন বাজার থেকে । ব্যাগে উঁকি দিচ্ছে ফুলকপি, পিয়াঁজকলি । আজ রবিবার বাবা বাজার থেকে এনেছেন কমলালেবু ও নলেন গুড়ের রসগোল্লা । শীতকে ধন্যবাদ । আমাদের জন্য এই বিপুল আয়োজন করে দিয়েছে সে । ইতিমধ্যে চারপাশের কুয়াশা প্রায় সরে গেছে । ঝলমল করছে রোদ্দুর । রাস্তায় একজন হেঁকে যাচ্ছে “চাই নলেন গুড়, পাটালি” । কে জানে কোন সকাল থেকে কত শিশির গায়ে মেখে এই মানুষটা তার যাত্রা শুরু করেছেন । চলার পথে রাস্তার ধারে পড়েছিল কত সোনালি ফুলের সরষের খেত, গোলাভরা ধানে ভরা কত জনপদ । আমার জানতে ইচ্ছা হল ওর বাড়িতেও আমার মতো কোনো ছেলে আছে কি না । মনে হল সে হয়তো আগুনে হাত সেঁকছে । এভাবেই শীতের সকাল আমার ভাবনাতরঙ্গে তৈরি করে দেয় অজস্র অভিঘাত । সেই উপলব্ধি আনন্দের, উপভোগের আবার বিষণ্ণতার'ও ।।
jiohh vai vai
ReplyDelete