Saturday 18 January 2020

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

মল্ল সাহিত্য ই-পত্রিকা , ২-য় বর্ষ , ১৮-তম প্রয়াস












হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


পাখি রঙের আকাশ ------ ১৮

সকালেই ঝোড়ো হাওয়া। বেলা বাড়লে বেগও বাড়ে। চোখের সামনে যারা দরজা জানলা খুলেছিল তাদের চোখ আগে বন্ধ হয়ে যায়। কোনো কথা হয় না তবুও ছিটকে যায় এদিক ওদিক। খোলা জানলা আর আধ ভেজানো দরজা দিয়ে যেটুকু রোদ রাস্তায় এসে বিশ্রাম নিচ্ছিল, ঝড় উঠতেই তারা আগে অন্ধ হয়ে গেল। জনজীবনে এরকম একটু আধটু যুদ্ধ লাগা ভালো। যুদ্ধের ধোঁয়ায় অসংখ্য"তুমি"-দের চিনে ফেলা যায়। একটা "তুমি"-তেই মাত্র শিকড়ে শিকড় থাকা যায়। ওই "তুমি"-টাই যুদ্ধ লাগলে ধোঁয়া পার হয়ে দিনান্তে ঘর আলো করে দেয়।


পাখি রঙের আকাশ ----- ১৯

কতদিন যে বাবার সঙ্গে দেখা হয় নি ! দুপুরের গল্প তো শুধু তার সঙ্গেই করা যেত। খড়ের চালের মাটির দুয়ারে সে পুঁথি লিখত গামছা পড়ে। সারাদিনে একটা কি দুটো কথা। তবুও মনে হতো মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা গোটা শরীরটা শুধু সে-ই ধরে রেখেছে। নিখোঁজ হওয়ার দিন থেকে আজ পর্যন্ত কত দুপুরের গল্প জমে আছে এই বুকের ভেতর। আমার দুপুরের গল্প নেওয়ার কেউ নেই ! তবুও মাটির দুয়ারে একটার পর একটা দুপুরের গল্প সাজাই। একদিন সে আসবে দুপুরের নামাবলী গায়ে। আমাকে না চিনলেও গল্পের কথা টেনে টেনে সে দুয়ার জুড়ে ছড়িয়ে দেবে দুপুরের রেণু। তারপর পায়ে পায়ে সেই রেণু সারা বাড়ি। তখন মানুষ নয়, দুপুরের কথা গান হবে। দরজা জানলা খুলে বেরিয়ে আসবে সকালের রোদ, শেষ বিকেলের আম কুড়ানো আলো।

No comments:

Post a Comment