অভিযোগ
সৌতিক পৃথাকে বিদায় জানাল। মিলিটারির গাড়ি অপেক্ষা করছে তার জন্য। দেশকে বাঁচাতে হবে এই তার ধর্ম। শত্রুদেশ থেকে ইতিমধ্যে আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে। পৃথার বুক সবসময় দুরুদুরু করতে থাকে। সৌতিক বলে, " পৃথা, কান্না করো না। আমি তো দেশের জন্য যাচ্ছি।"
" কিন্তু আমি তো তোমাকে চাই। দেশ বাঁচানোর জন্য তো অনেকে আছে।"
" অনেকের মধ্যে যে আমিও পড়ি। ভেঙ্গে পোড়ো না।"
পৃথার মাথায় বাজ পড়ল। মোট একশো সাঁইত্রিশ জনের ওপর শত্রুপক্ষ আক্রমণ করেছে। সৌতিক সেখানেই ছিল।
পৃথার দুচোখের কান্নায় যে শোক প্রকাশ পায়, তা সে কখনই প্রকাশ করতে পারে না। তার বুকের ভেতর যে অদ্ভুত শূন্যতা তাকে ডুবিয়ে রেখেছে তাতে তার অশ্রুবিন্দু একফোঁটা শিশির বিন্দুর উপমা ছাড়া আর কিছু না। অথচ সে বোঝে দেশ একটা নয়। সবার দেশ থাকে। সবাই দেশ বাঁচাতেই লড়াই করছে। কিন্তু পৃথা তো এ লড়াই চায় না। সে ভাবে অপর দেশের সৈনিকও তো ফিরে যেতে কাছে প্রিয় মানুষদের কাছে। পৃথা কান্না করে আড়ালে। কারণ সৌতিক বারণ করেছিল।
ক'দিন পর যখন সৌতিকের সন্তান তার মায়ের কোলে এল তখন পৃথা ভেবেছিল তার সন্তানের মধ্যেই সৌতিক বেঁচে থাকবে। তার হাসিতে কান্না ছিল। দেশের প্রতি ছিল একরাশ অভিযোগ।
No comments:
Post a Comment